ঢাকা: সাধারণ মানুষকে অতি সহজেই তথ্য জানাতে সাজানো হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়নের মূল পাতা। সহজেই প্রয়োজনীয় তথ্য পাচ্ছেনও তারা।
জাতীয় তথ্য বাতায়নে ২৫ হাজারের বেশি ওয়েবসাইট সন্নিবেশিত হয়েছে। বলা হচ্ছে, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ওয়েবপোর্টাল এটি।
বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (http://bangladesh.gov.bd/) অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন (এ-টুআই) এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ পরিচালনা করছে, যা শুরু হয়েছিল সাড়ে চার বছর আগে। তবে ২০১৪ সালের জুন মাসে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে থাকলেও তিনমাস আগে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের সার্ভারে নিয়ে আসা হয়েছে জাতীয় তথ্য বাতায়ন।
জাতীয় তথ্য বাতায়ন থেকে দেশের যেকোনো স্থানের ইতিহাস-ঐতিহ্য, সরকারি সেবা পাওয়ার পদ্ধতি এবং প্রশাসনিক কাঠামোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর ও ঠিকানা জানতে পারছেন নাগরিকরা।
সব ওয়েবসাইট একই আদলে হলে তথ্য পাওয়া আরও সহজ হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
কয়েকটি সরকারি ওয়েবসাইট জাতীয় তথ্য বাতায়নের আদলে গেলেও বড় বড় মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে জনপ্রশাসন, অর্থ (অর্থনৈতিক সম্পর্ক, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ গেছে), শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট যায়নি।
জাতীয় সংসদের ওয়েবসাইটও পুরনো আদলেই রয়ে গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, আইন বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, সেতু বিভাগ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, আইসিটি বিভাগ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, পরিকল্পনা বিভাগের ওয়েবসাইট জাতীয় তথ্য বাতায়নের আদলে চলে এসেছে।
এছাড়াও স্বরাষ্ট্র, মুক্তিযুদ্ধ, প্রতিরক্ষা, খাদ্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম, কৃষি, বেসামরিক বিমান পরিবহন, বাণিজ্য, সংস্কৃতি, পরিবেশ ও বন, প্রাণিসম্পদ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত, শিল্প, তথ্য, বস্ত্র ও পাট, শ্রম, ধর্ম, নৌ-পরিবহন, সমাজকল্যাণ, মহিলা ও শিশু, পানি, যুব ও ক্রীড়া, প্রবাসীকল্যাণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ও রয়েছে নতুন ওয়েবসাইটের ঠিকানায়।
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, সরকারি ওয়েবপোর্টালগুলো একই রূপে করা হয়েছে, যেন সহজে সাধারণ মানুষ সব তথ্য পেতে পারেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট মোফাখখারুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, নতুন ওয়েবসাইটে যাওয়ার জন্য এ-টুআই থেকে প্রশিক্ষণ হয়ে গেছে। নতুন পোর্টালে যাওয়ার জন্য ফ্রেমওয়ার্ক ও ডাটা ইনপুট দেওয়ার কাজ চলছে। খুব দ্রুতই চলে যাবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট মোছলেহ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, নতুন ওয়েবসাইটে যাওয়ার কাজ চলমান রয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মোস্তফা জব্বার বাংলানিউজকে বলেন, ওয়েবসাইটেগুলো একই ফ্রেমে গেলে সাধারণ জনগণেরই তথ্য পেতে সুবিধা হবে। একই আদলে যেতে সমন্বয়ের ওপর গুরুত্বও দেন তিনি।
এ-টুআই’র প্রকল্প পরিচালক ও প্র্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক কবির বিন আনোয়ার বলেন, ‘একই আদলে যেতে নির্দিষ্ট সময়ের বাধ্যবাধকতা নেই। তবে যার যার মতো তথ্য আপডেট করতে হবে। আমরা চাই, জাতীয় তথ্য বাতায়নের আদলে ওয়েবসাইট ডেভেলপ করুক’।
এটুআই’র পক্ষ থেকে জানানো হয়, জাতীয় তথ্য বাতায়নে ২৫ হাজার ওয়েবসাইট যুক্ত রয়েছে, যার মাধ্যমে ৬২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ, ৩৫১টি অধিদফতর ও অন্যান্য অফিস, ৮টি বিভাগ, ৬৪টি জেলা, ৪৮৯টি উপজেলা, ৪ হাজার ৫৫০টি ইউনিয়নের সব সরকারি অফিসসহ ৪৩ হাজারেরও বেশি সরকারি অফিসের কার্যক্রমের তথ্য বিস্তারিতভাবে পাওয়া যায়।
জাতীয় তথ্য বাতায়নে ৪০০ সরকারি সেবা প্রাপ্তির বিস্তারিত বিবরণ ও এক হাজার ৪০০ এর বেশি সরকারি ফরম রয়েছে। প্রায় ২০ লাখ তথ্য আছে এবং প্রতিদিনই বাড়ছে। ইলেকট্রনিক সেবাও আছে দেড়শ’র বেশি।
এ-টুআই’র প্রকল্প পরিচালক কবির বিন আনোয়ার বাংলানিউজকে বলেন, ২৫ হাজার ওয়েবসাইট সন্নিবেশিত হয়েছে এই পোর্টালে। প্রতিদিন হিট হয় ৩০ লাখ। আড়াই বছর ধরে ৭০ হাজার সরকারি কর্মকর্তা কাজ করে এ পোর্টাল তৈরি করেছেন।
২০১৪ সালে পোর্টালটি জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড সামিট অ্যান্ড ইনফরমেশন থেকে প্রথমবার পুরস্কৃত হয়। দ্বিতীয়বারের মতো গত বছরও এ পুরস্কার পায় জাতীয় তথ্য বাতায়ন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৬
এমআইএইচ/এএসআর