দেশের সফটওয়্যার খাতের সবচেয়ে বড় সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) ২০১৬-১৯ মেয়াদে কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৫ জুন।
আসন্ন এ নির্বাচনে দুটি প্যানেলে ১৮ জন প্রার্থী ছাড়াও অংশ নিচ্ছেন ৪ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী।
আনন্দ কম্পিউটার্সের স্বত্বাধিকারী এবং বেসিসের প্রতিষ্ঠাতা সহসভাপতি মোস্তাফা জব্বারের নেতৃত্বে ডিজিটাল ব্রিগেড প্যানেলে রয়েছেন ইউওয়াই সিস্টেমসের ফারহানা এ রহমান, টিম ক্রিয়েটিভ‘র রাসেল টি আহমেদ, সিস্টেক ডিজিটাল‘র এম রাশিদুল হাসান, অ্যাডভান্স ইআরপি‘র মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল, এটম এপি’র একেএম আহমেদুল ইসলাম, ম্যাগনিটো ডিজিটালের রিয়াদ এস এ হুসেইন, রেডিসন ডিজিটাল টেকনোলজিসের দেলোয়ার হোসেন ফারুক।
এছাড়া এই প্যানেলের সহযোগি সদস্য হিসেবে রয়েছেন বস্ট বিজনেস বন্ড উত্তম কুমার পাল।
এর মধ্যে বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটিতে দায়িত্বে নিয়োজিত রাসেল টি আহমেদ, এম রাশিদুল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান ও উত্তম কুমার পাল।
মাইক্রোসফট বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোনিয়া বশিরের নেতৃত্বে 'দ্যা চেঞ্জ মেকারস' প্যানেলে রয়েছেন ফ্লোরা টেলিকমের মোস্তফা রফিকুল ইসলাম, মেট্রোনেট বাংলাদেশের সৈয়দ আলমাস কবীর, ইভাটিক্স‘র সুফি ফারুক ইব্ন আবুবকর, ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিসেসের আজমল হক আজিম, গণনা টেকনোলজিসের নাজমুল করিম চৌধুরী, থার্ড বেল এন্টারটেইনমেন্ট’র সাবি্বর রহমান, মজুমদার আইটি’র ছাইদুল ইসলাম মজুমদার। এই প্যানেলের সহযোগি সদস্য জামান আইটি’র জামান খান।
তরুণদের প্রতিনিধিত্ব করতে এবারের এই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিচ্ছেন কয়েকজন তরুণ।
যাদের মধ্যে ২৪ বছর বয়সী যশোরের রাশাদ কবির ড্রিম ৭১ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক। বয়সে সর্বকনিষ্ঠ বলে তাকে নিয়ে সব বয়সই ভোটারদের মধ্যেই রয়েছে বেশ আগ্রহ।
বর্তমান কমিটির কোনো ব্যর্থতা রাশাদের চোখে না পড়লেও এই কমিটির সবাই বেশ অভিজ্ঞ এবং তরুণদের সঙ্গে তাদের বয়সের ব্যবধান একটু বেশি। যে কারণে তরুণরা সবসময় অনুকূল পরিবেশ পান না।
তার মতে, অন্তত ২ জন তরুণের এই নির্বাহী কমিটিতে থাকা উচিত। নির্বাচনে জিতলে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব করা ছাড়াও নতুন কিছু করার চেষ্টা থাকবে রাশাদের।
এছাড়াও তরুণ এই সদস্য বলছেন যে, বর্তমানে ফ্রিল্যান্সারদের দিকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এতে করে ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠছে না। নির্বাচিত হলে এই বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখবেন তিনি। ফ্রিল্যান্সারদের প্রয়োজন আছে আর এজন্য শুধু প্রশিক্ষনই যথেষ্ঠ নয়। আমাদের আসলে প্রোডাক্ট তৈরি করা প্রয়োজন। কেননা ফেসবুক, গুগল, টুইটার সবই তো নতুন প্রোডাক্ট। উদ্ভাবনমূলক নতুন কিছু না করলে বিশ্ববাজারে টিকে থাকা সম্ভব নয়।
এছাড়া মার্কেটিং ছাড়া কোনো কিছুই সবার কাছে পৌছে দেয়া সম্ভব নয়। তাই দক্ষ আইটি প্রোগ্রামারের পাশাপাশি দক্ষ আইটি মার্কেটিং প্রফেসনালের দিকটিও সমানভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। নির্বাচিত হলে তিনি এসব নিয়ে কাজ করবে বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।
এমনই আরেকজন তরুণ গণনা টেকনোলজিস এর কর্ণধার নাজমুল করিম চৌধুরী। তিনি সোনিয়া বশির কবিরের চেঞ্জমেকার প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্দীতা করবেন। তাদের প্রতিশ্রুতিতে রয়েছে এক হাজার ঘণ্টার এক কর্মসূচি এবং বেসিসের সহস্রাধিক সদস্যের কাছে গিয়ে তাদের সমস্যার কথা শোনা।
তরুণ এই প্রার্থী মনে করেন, প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য নতুন ইনস্টিটিউট গঠনের দরকার নেই। তার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তথ্যপ্রযুক্তিতে শিক্ষার দিকে মনোযোগ দেয়া দরকার। তাদের পাঠ্যপুস্তকে এমন কিছু যোগ করা যায় কিনা যা বর্তমান সময়ে বেশি কাজে লাগবে।
বেসিসের কমিটিতে তরুণদের অংশগ্রহণ নিয়ে নাজমুল করিম বলেন, তারুণ্য আসলে বয়সে নয়, এটা মানসিক ব্যাপার। আমরা অবশ্যই চাই নতুন উদ্ভাবনী চিন্তা নিয়ে নতুনরা এগিয়ে আসুক। আমরা আমাদের প্যানেল সেভাবেই তৈরি করেছি।
বর্তমান কমিটির ব্যর্থতা চোখে না পড়লেও কিছু কিছু চ্যালেঞ্জে নেয়ার দরকার ছিল এই কমিটির।
নাজমুলের মতে, সদস্যের সব কাজে সম্পৃক্ত করাটা গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার।
অনেকটা একই রকম ধারণা পোষণ করেছেন ডিজিটাল ব্রিগেড প্যানেলের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য রিয়াদ এস এ হুসেইন। তিনিও মনে করেন সংগঠনের সদস্যদের চাওয়া-পাওয়া জানা দরকার।
৩৩ বছর বয়সী ম্যাগনিটো ডিজিটালের কর্ণধার বর্তমান কমিটি নিয়ে এছাড়াও মন্তব্য করেন, বিগত কয়েক বছর নয়, ২০ বছর ধরেই বেসিস খুব ভালো কাজ করছে। সরকার এখন নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ’র মতো বেসিসকে গুরুত্ব দিচ্ছে। নির্বাচিত হলে এই সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা সেইসাথে তরুণ উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের জন্য আলাদা প্ল্যাটফর্ম তৈরির ইচ্ছা রয়েছে তার প্যানেলের।
তরুণ ও অভিজ্ঞদের মিশেলেই বেসিস এগিয়ে যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৬
এসজেডএম