টেলিকম অপারেটররা তাদের ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিসের (ভ্যাস) সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর রেভিনিউ শেয়ার আবারও ইচ্ছে মতো কর্তন করতে যাচ্ছে। অন্যদিকে সরকার অপারেটরদের রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের বর্তমান হার অপরিবর্তিত রাখার জন্য অবিলম্বে একটি নির্দেশনা জারি করতে যাচ্ছেন।
ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস (ভ্যাস) নীতিমালা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে দেশের কোনও মোবাইল ফোন অপারেটর ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিসের সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর রেভিনিউ শেয়ার পরিবর্তন করতে পারবে না । সম্প্রতি এ নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
মঙ্গলবার (২১ জুন) তারানা হালিম বলেন, ‘ভ্যাস নীতিমালা চূড়ান্ত করার ব্যাপারে জনমত চেয়ে ওয়েবসাইটে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ’
তিনি তার বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেন, কিছু অপারেটর ভ্যাস প্রদানকারীদের সঙ্গে রেভিনিউ শেয়ারের হার কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয় । রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের বর্তমান হার অপরিবর্তীত রাখার জন্য টেলিকম কোম্পানিগুলোকে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে । পরবর্তী (ভ্যাস) নীতিমালা চালু না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে এই পদক্ষেপ নিতে হবে।
এদিকে, তৃতীয় পক্ষ (ভ্যাস) প্রদানকারীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদেরকে ইমেইলের মাধ্যমে গ্রামীনফোন জানিয়েছে যে, তাদের রেভিনিউ শেয়ার ৫০ শতাংশের পরিবর্তে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনবে। যদি তৃতীয় পক্ষ (ভ্যাস) প্রদানকারীরা এই শর্তে রাজি না থাকে তবে তারা তাদের চুক্তিপত্র নবায়ন করবে না।
অন্যদিকে, গ্রামীণফোনের পর টেলিকম অপারেটর রবিও তাদের রেভিনিউ শেয়ার নামিয়ে আনার কথা বলেছে। যদিও তা আগে থেকেই অনেক কম ছিলো। অথচ বিশ্বের অন্যান্য দেশের টেলিকম অপারেটর অথবা সমজাতীয় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম মালিকেরা সার্ভিস প্রোভাইডারদের বাংলাদেশের চেয়ে অধিক হারে লভ্যাংশ দেন (ভারত ৪০-৭০%, গুগল ৮৫%, অ্যাপল ৭০%, টেলিনর গ্রুপ নরওয়ে ৮০%, থাইল্যান্ড ৪০% এর বেশি এবং মালয়েশিয়া ৭০%) ।
বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) গত মাসে ‘টেলিকম ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস ২০১৬’ নামক একটি গাইডলাইন প্রকাশ করেছেন। এখন জনগণের কাছ থেকে মতামত চেয়ে এটি চূড়ান্তকরণের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস বা ভ্যাস মূলত মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে একটি তৃতীয় পক্ষ কোম্পানীর দ্বারা প্রদত্ত সেবা। মোবাইল ফোন কোম্পানি ভয়েস ও ডাটা প্লানের মতো মৌলিক টেলিকম পরিসেবা দিয়ে থাকে। মিসড কল অ্যালার্ট, ওয়েলকাম টিউন ও বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশনভিত্তিক সেবার মতো অন্যান্য সেবা দিয়ে থাকে ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। এখানে উল্লেখ্য যে, ভ্যাস-এর কল্যাণে মৃতপ্রায় মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির পূনর্জাগরণ শুরু হয়েছে। এখান থেকে অর্জিত অর্থ দেশের আইটি ও সংগীতশিল্পের বিকাশে বেশ অবদান রাখছে। এ পেশার সঙ্গে জরিয়ে আছে অনেক অনেক প্রতিষ্ঠান ও পরিবার।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৮ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৬
এসও/জেএম