ঢাকা: কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আর্থিকসহ প্রয়োজনীয় নানা সেবা মিলছে হাতে থাকা স্মার্ট ফোন বা ল্যাপটপ, কম্পিউটারে। আর এটি সম্ভব হয়েছে উন্নত প্রযুক্তিতে তৈরি নতুন নতুন উদ্ভাবনের ফলে।
নতুন নতুন এসব উদ্ভাবন নিয়ে অনুষ্ঠিত হওয়া ‘উন্নয়ন উদ্ভাবনে জনপ্রশাসন-২০১৬’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সামিটের সমাপনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য তুলে ধরেন বক্তারা।
শুক্রবার (২৯ জুলাই) রাত সাড়ে নয়টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারে দুইদিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এ সামিটের সমাপনী অনুষ্ঠানে পুরস্কৃত করা হয় দেশের তিন উদ্ভাবককে।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ তথ্য প্রযুক্তিতে অবিরাম গতিতে ছুটছে। দেশের তরুণদের উদ্ভাবনে রয়েছে নতুনত্বের ছোঁয়া।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তথ্য প্রযুক্তিতে উদাহরণ। নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে অন্য দেশকে সহযোগিতা করছি। তৈরি হচ্ছে ব্যাপক কর্মসংস্থান। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন স্বপ্ন নয় বাস্তব।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ভুটান সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ডি.এন ডানগায়েল বলেন, বাংলাদেশ তথ্য প্রযুক্তিতে অনেক এগিয়ে গেছে। এই এগিয়ে যাওয়া দেশের উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে। তথ্য প্রযুক্তিতে ভুটান বাংলাদেশকে সব সময় কাছে চায়।
এছাড়া সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলম, মালদ্বীপের অর্থ এবং রাজস্ব প্রতিমন্ত্রী ও ইনচার্জ অব ন্যাশনাল সেন্টার ফর ইনফরমেশন টেকনোলজির মোহামেদ আসমালে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম এনডিসি, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আব্দুল মালেক।
সভাপতিত্ব করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
এদিকে একই দিনে ‘ডিপার্টমেন্ট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি এ্যান্ড টেলিকম (ডিআইটিটি)’ এর সাথে এটুআই প্রোগ্রামের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (জিটুজি) স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) এবং এটুআই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক কবীর বিন আনোয়ার এবং ভূটান সরকারের ডিআইটিটি’র আইসিটি কর্মকর্তা জিগমে তেনজিং চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
সমঝোতা স্মারকের আওতায় বাংলাদেশ সরকার ভুটান সরকারকে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, ডিজিটাল সেন্টার, ই-হেলথ, ই-পেমেন্ট, পোর্টাল, সেবা পদ্ধতি সহজিকরণ, তথ্য-প্রযু্ক্তি প্রশিক্ষণ ও গভর্নমেন্ট এন্টারপ্রাইজ আর্কিটেকচার বিষয়ে সহযোগিতা প্রদান করবে। এ উদ্যোগ সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন জোরদার করতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
বিকেল তিনটার দিকে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের সঙ্গে ‘উন্নয়ন-উদ্ভাবনে জনপ্রশাসন : মাঠ প্রশাসনের ভূমিক’ শীর্ষক একটি বিশেষ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বেগম ইসমাত আরা সাদেক। সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব মো: আবুল কালাম আজাদ।
দুইদিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এ আন্তর্জাতিক সামিটে মোট নয়টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্ভাবনী চর্চা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবং নাগরিক জীবনে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে তাদের উদ্বুদ্ধ করতে এটুআই প্রোগ্রাম ‘সল্ভ-এ-থন’ নামে প্রতিযোগিতায় ৬৪টি জেলা থেকে স্নাতক পর্যায় শিক্ষার্থীরা দলগত ভাবে অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারী দলগুলোর মধ্যে ক্রেস্ট ও প্রাইজমানি বিতরণ করা হয়।
আয়োজকরা জানান, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্প বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও মাঠ প্রশাসনে অনেক উদ্ভাবনী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ সকল উদ্যোগ নিয়ে প্রথমবারের মত এই আন্তর্জাতিক সামিটের আয়োজন করা হয়।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রাম যৌথভাবে আয়োজন করে এ আয়োজন।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১৬
একে/আরএ