ঢাকা: জরুরি পরিস্থিতিতে ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ সেবা বন্ধের প্রস্তুতি হিসেবে রাজধানীর রমনা এলাকায় মহড়া চালিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
সোমবার (০১ আগস্ট) দিবাগত মধ্যরাতে ৩০ মিনিট চারটি ইউআরএল ( ইউনিফর্ম রিসোর্স লোকেটর) এবং অন্যান্য ইন্টারনেট ডাটা বন্ধের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেছে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইসিপিএবি)।
মহড়ায় অংশ নিয়ে মোবাইল অপারেটরগুলোও তাদের ভয়েস কল এবং ডাটা সার্ভিস কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রাখে বলে জানান বিটিআরসি’র একজন কর্মকর্তা।
মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সকালে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এই মহড়ায় সকল আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে), আইএসপি (ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার), ওয়াইম্যাক্স (ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টারঅপারেবিলিটি ফর মাইক্রোওয়েভ অ্যাকসেস) এবং মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো অংশ নেয়।
মহড়ার সময় কনটেন্ট, ভয়েস কল এবং ডাটা (ইন্টারনেট সার্ভিস) বন্ধ রাখা হয় বলে জানান তিনি। তবে কনটেন্টগুলোর নাম বলেননি তিনি।
এই মহড়া সফল হয়েছে দাবি করে বিটিআরসি‘র ওই কর্মকর্তা বলেন, জরুরি পরিস্থিতিতে ডাটা ও টেলিযোগাযোগ সেবা বন্ধের এটি একটি সফল অভিজ্ঞতা।
মধ্যরাতের ওই সময়ে গ্রাহকের কোন ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করেন বিটিআরসি কর্মকর্তারা।
আইসিপিএবি’র মহাসচিব এমদাদুল হক সকালে বাংলানিউজকে বলেন, রাত ১টা ২০ মিনিটে বিটিআরসি থেকে তারা ই-মেইলে নির্দেশনা পান।
নির্দেশনার পর ১০ মিনিটের প্রস্তুতির পরই ৩০ মিনিট আইআইজিগুলো চারটি ইউআরএল এবং সকল আইএসপিদের ডাটা বন্ধ রাখে। পরবর্তী ই-মেইলে তাদের চালু করার কথা জানায় বিটিআরসি।
বিটিআরসি এবং আইএসপিগুলো জানায়, একটি সংবাদপত্রের অনলাইন ভার্সনের একটি ইউআরএল, একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের বাংলা ভার্সনের একটি ইউআরএল, একটি পর্ন সাইট এবং অপর একটি ডোমেইন বন্ধ রাখা হয়েছিল।
বিটিআরসির এক কর্মকর্তা বলেন, রমনায় বিটিআরসি ভবনে মধ্যরাতে একটি বিশেষ টিম মহড়া পর্যবেক্ষণ করেন।
এই মহড়া সফল হয়েছে বলে দাবি করেন ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠনের এই নেতা এমদাদুল।
তিনি জানান, তাদের সদস্য অন্তত একশ’টি প্রতিষ্ঠান এই মহড়ায় অংশ নেয়। রমনা এলাকায় আইবি ভবনের আশেপাশের ২০/২৫ হাজার গ্রাহক থাকলেও মধ্যরাতের ওই মহড়ার সময় ৫-১০ শতাংশ সক্রিয় ছিল; এতে গ্রাহকদের ওপর খুব একটা ইফেক্ট পড়েনি।
রমনা এলাকায় মহড়ায় অংশ নেওয়া একটি বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটরের এক কর্মী বাংলানিউজকে বলেন, গভীর রাতে ওই মহড়াটি হয়েছিল।
জননিরাপত্তা নিশ্চিত ও জঙ্গিবিরোধী অভিযানের প্রস্তুতি হিসেবে সোমবার বিকেল থেকে মধ্যরাতের যেকোনো সময় কিছু এলাকায় ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ সেবা বন্ধ রাখার প্রস্তুতি হিসেবে এই মহড়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।
রাজধানীর রমনা ছাড়াও মতিঝিল, মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া এবং উত্তরা থার্ড ফেইজ এলাকায় এই মহড়া চালানোর কথা মোবাইল ফোন অপারেটর এবং আইএসপিদের জানানো হয়।
হাসপাতালের মতো গুরুত্বপূর্ণ জরুরি সেবাদান এলাকাগুলো বাদ রেখে এই মহড়া চালানোর কথা আগেই জানিয়েছিল বিটিআরসির সচিব সরওয়ার আলম।
বর্তমানে দেশে ২৭টি ইন্টারনেট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠান এবং ৪৯০টি আইএসপি প্রতিষ্ঠান ইন্টারনেট সেবা দিয়ে আসছে।
*ইন্টারনেট ব্লাকআউট মহড়ার আওতামুক্ত জরুরি সেবাদান স্থান
*ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট মহড়া হবে
*মধ্যরাতে ইন্টারনেট বন্ধের মহড়া
বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০১৬
এমআইএইচ/আরআই