ঢাকা: দেশব্যাপী অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কের জিআইএস মানচিত্র অবমুক্ত করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
বিটিআরসি বলছে, গুগল আর্থের সঙ্গে সংযুক্ত এ মানচিত্র প্রান্তিক পর্যায়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্যসেবা পৌঁছে দিতে পরিকল্পনা গ্রহণে সহায়তা করবে।
বুধবার (০৩ আগস্ট) রমনায় বিটিআরসি ভবনে কমিশনের চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ মানচিত্র তৈরি ও এর সুবিধা তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের প্রথম শর্ত দেশব্যাপী বিস্তৃত একটি স্বনির্ভর বলিষ্ঠ নেটওয়ার্ক, যার মাধ্যমে তথ্য সেবা পৌঁছে যাবে প্রান্তিক পর্যায়ে গৃহস্থের ঘরে। আর এ নেটওয়ার্কের অন্যতম মৌলিক অবকাঠামো একটি সুনির্দিষ্ট, নির্ভরযোগ্য, বলিষ্ঠ অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক।
২০২১ সালের মধ্যে প্রত্যেক ঘরে ঘরে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেবো জানিয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, একটি সমন্বিত মানচিত্র না থাকায় ব্যাহত হচ্ছিলো।
বিটিআরসি মহাপরিচালক (সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইকবাল আহমেদ বলেন, এ মানচিত্রটিতে সব অপারেটরের নিজস্ব অপটিক্যাল ফাইবারের তথ্য বিভিন্ন স্তরে বিন্যাস করে প্রদর্শন করা হয়েছে। এ মানচিত্রের সহায়তায় সারাদেশের অপটিক্যাল ফাইবারের জেলা, উপজেলা, ইউনিয়নভিত্তিক অবস্থান, সক্ষমতাসহ বিস্তারিত কারিগরি তথ্য জানা সম্ভব হবে।
সরকারি-বেসরকারি সংযোগ সম্পর্কিত যেকোনো প্রকল্প বাস্তবায়নে এ ম্যাপ মৌলিক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যায়।
কমিশনের তত্ত্বাবধানে ও অর্থায়নে প্রস্তুতকৃত দেশের সব অপারেটরের নিজস্ব অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কের তথ্য নিয়ে একটি সমন্বিত ম্যাপ প্রণয়ন করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারী অপারেটরের অনেকের নিজস্ব নেটওয়ার্ক থাকলেও দেশব্যাপী বিস্তৃত বিভিন্ন অপারেটরের অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কের কোনো সমন্বিত চিত্র নীতি-নির্ধারকদের কাছে না থাকায় সম্পদের সদ্ব্যবহারে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছিল।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গঠিত ডমেস্টিক নেটওয়ার্ক কো-অর্ডিনেশন কমিটির সভায় বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলোর নেটওয়ার্ক পরিকল্পনার ক্ষেত্রে দেশব্যাপী বিস্তৃত এসব অপটিক্যাল নেটওয়ার্কের সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয় এবং বিটিআরসিকে একটি ম্যাপ প্রণয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
আগামী ২ বছর মানচিত্রটি হালনাগাদ করার জন্য বিটিআরসি তার নিজস্ব কর্মকর্তাদের সামর্থ্য বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে।
অপটিক্যাল স্থাপনার কোনো ধরনের সংশোধন কিংবা সংযোজনের প্রয়োজনীয়তা নিরীক্ষণের লক্ষ্যে প্রতিটি অপারেটরকে ইতোমধ্যে স্ব স্ব মানচিত্রের জন্য পৃথক পৃথক আইডি এবং পাসওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ১৯৯৭ সাল থেকেই দেশব্যাপী মোবাইল নেটওয়ার্কের সহায়তায় অবকাঠামো বিস্তৃত হয়ে এসেছে এবং আগে ট্রান্সমিশনের জন্য পৃথক কোনো লাইসেন্স না থাকায় অপারেটরগুলো দেশব্যাপী সেবা প্রদানের লক্ষ্যে নিজস্ব অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন করেছে।
পরবর্তীতে অপরিকল্পিতভাবে এলাকাভিত্তিক নেটওয়ার্ক বিস্তার বন্ধের লক্ষ্যে এবং ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ককে অ্যাক্সেস নেটওয়ার্ক থেকে পৃথক করার উদ্দেশ্য নিয়ে ২০০৮ সালে বিটিআরসি ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন) গাইডলাইন প্রণয়ন করা হয়। এর আলোকে ২০০৯ এর ফাইবার অ্যাট হোম এবং সামিট কমিউনিকেশ লিমিটেডকে এনটিটিএন লাইসেন্স প্রদান করা হয়। তারা টার্গেটভিত্তিক দেশব্যাপী অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপনের কার্যক্রম শুরু করে।
এছাড়া পিজিসিবি, বিটিসিএল এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে এনটিটিএন ট্রান্সমিশন লাইসেন্স পায়। বিটিসিএলের ৬০ শতাংশ তথ্য এ ম্যাপে সন্নিবেশিত আছে।
বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই এ ম্যাপের তথ্য ব্যবহার করছে জানিয়ে ইকবাল আহমেদ বলেন, সংশ্লিষ্ট তথ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিটিআরসির পূর্বানুমোদন প্রয়োজন হবে।
২০১৭ সালের জুনে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে মানচিত্র।
বর্তমানে ৪৬৪ উপজেলায় অপটিক্যাল ফাইবার সেবার মধ্যে বিটিসিএলের রয়েছে ৩৮৪ উপজেলায়।
সংবাদ সম্মেলনে বিটিআরসি ভাইস চেয়ারম্যান আহসান হাবিব খান, সচিব সরওয়ার আলমসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
**ইন্টারনেট বন্ধের আরও মহড়া হবে
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০১৬
এমআইএইচ/জেডএস