ঢাকা: মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা সত্ত্বেও দেশের অন্যতম ডিজিটাল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বাংলালিংক চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের রাজস্ব গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৪ আগস্ট) প্রকাশ করা বাংলালিংকের ২০১৬ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকের আর্থিক ফলাফলে এ তথ্য উঠে এসেছে।
অপারেটরটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বাংলালিংকের মোট রাজস্ব গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১ হাজার ২৩০ কোটি টাকা।
প্রতিবেদন ঘোষণার পর বাংলালিংকের সিইও এরিক অস্ বলেন, আমাদের দেওয়া ডিজিটাল সেবাসমূহ, যেগুলো ২০১৬ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে এই সাফল্য অর্জনে সহায়ক হয়েছে সেগুলো নিয়ে গ্রাহকের মাঝে এমন সাড়া দেখে আমরা উৎসাহিত। যেহেতু আমরা সম্পূর্ণ ডিজিটাল প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠতে এগিয়ে যাচ্ছি, এ কারণে গ্রাহকদের সেরা উন্নততর ডিজিটাল সেবাসমূহ উপহার দিতে আমরা প্রত্যয়ী।
রাজস্ব বৃদ্ধির মূল কারণ ছিল ভয়েস সেবাতে ক্রমাগত রাজস্ব বৃদ্ধি, যা ভয়েস ট্রাফিক বৃদ্ধির কারণে অর্জন করা সম্ভব হয়েছে এবং এরই সঙ্গে ইন্টারনেট সেবায় ৬০ শতাংশ রাজস্ব বৃদ্ধি হয়েছে। ইন্টারনেট রাজস্ব বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে ৬ শতাংশ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বৃদ্ধি এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে ১৭৮ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে। পাশাপাশি থ্রিজি কভারেজ বিস্তৃতি এবং স্মার্টফোনের ব্যবহার বাড়ার ফলেও ইন্টারনেট রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে।
তীব্র মূল্য প্রতিযোগিতা থাকা সত্ত্বেও বাংলালিংকের এআরপিইউ (গ্রাহক প্রতি গড় রাজস্বের পরিমাণ) বৃদ্ধি পেয়েছে ৫ শতাংশ, যার পেছনে রয়েছে বর্ধনশীল ভয়েস এবং ইন্টারনেট ব্যবহার।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত বছরের একই সময়ের সঙ্গে এই বছরের রাজস্ব বৃদ্ধির তুলনামূলক ধীর গতির পেছনে রয়েছে এ বছরের জুন মাসের প্রথম থেকে রিচার্জের ওপর ২ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ এবং এ বছরের মার্চ থেকে ১ শতাংশ সারচার্জ আরোপ।
এই প্রান্তিকে বাংলালিংকের কার্যক্রমের প্রধান লক্ষ্য ছিল চলমান সিম ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া। সরকার কর্তৃক নির্দেশিত এই প্রক্রিয়া ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে শুরু হয়। এতে মোবাইল ফোন অপারেটরদের সব গ্রাহকের আঙুলের ছাপ ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে নির্ভুল রেজিস্ট্রেশন করতে বলা হয় যেন সঠিক জবাবদিহিতা এবং বর্ধিত নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।
বাংলালিংক এই মোবাইল নিরাপত্তা উদ্যোগে এগিয়ে থাকা অপারেটরদের মধ্যে একটি এবং বাংলালিংকের মোট গ্রাহকের ৯৩ শতাংশকে ভেরিফিকেশনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়। এই ৯৩ শতাংশ গ্রাহক বাংলালিংকের রাজস্বের প্রায় ১০০ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে।
এই কার্যক্রমের কারণে অনিবন্ধিত সিমগুলো জুন থেকে বন্ধ হয়ে যায় এবং গ্রাহকদের নতুন সিম ক্রয়ের ক্ষেত্রে কিছুটা বিরূপ প্রভাব পড়ে। এর ফলে ২০১৬ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে গ্রাহক সংখ্যা ৩ শতাংশ হ্রাস পায়।
২০১৬ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে পারফরমেন্স ট্রান্সফরমেশন প্রোগ্রাম এবং সিম ভেরিফিকেশন জাতীয় এককালীন ব্যয় ব্যতীত ইবিআইটিডিএ (আর্নিংস বিফোর ইন্টারেস্ট, ট্যাক্সেস, ডিপ্রেসিয়েশন অ্যান্ড অ্যামোরটাইজেশন) ১৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৫৮০ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।
এই উন্নতি প্রধানত মানবসম্পদ এবং ব্যবসায়িক ব্যয়ে পারফরমেন্স ট্রান্সফরমেশন উদ্যোগের কারণে অর্জিত হয়েছে। এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে গত বছরের তুলনায় বাংলালিংকের মূলধনী ব্যয় ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২৬০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, যেখানে এলটিএম মূলধনী ব্যয় রাজস্ব অনুপাত ছিলো ২৩ শতাংশ।
চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে ৫০ শতাংশ গ্রাহককে থ্রিজি কাভারেজের আওতায় আনার মাধ্যমে নেটওয়ার্ককে আরও শক্তিশালী করতে বাংলালিংক বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে। ২০১৫ সালের শেষে থ্রিজি কভারেজের বিস্তৃতি ছিলো ৩৩ শতাংশ।
পাশাপাশি ২০১৬ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে গ্রাহকদের আরো সহজভাবে ডিজিটাল সেবাসমূহ দিতে বাংলালিংক স্মার্টফোনের সঙ্গে নিয়ে এসেছে বেশকিছু অফার।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০১৬
এমআইএইচ/জিসিপি/এমজেএফ