ঢাকা: রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটককে প্রতিযোগিতায় দাঁড় করাতে তিন মেয়াদে দুই বছরের টার্গেট নির্ধারণ করার কথা জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
ছয় মাস, এক বছর ও দু’বছর মেয়াদী পরিকল্পনায় টেলিটকের সাশ্রয়ী প্যাকেজ, নেটওয়ার্ক, অবকাঠামো সুবিধা বাড়ানো হবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) সকালে গুলশানে টেলিটক অফিসে বিকাশের মাধ্যমে টেলিটকের এয়ারটাইম রিচার্জ সুবিধা উদ্বোধনকালে পরিকল্পনা তুলে ধরেন তারানা হালিম।
এক বছর আগে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার সময় গত বছরের জুলাইয়ে টেলিটকের ৩৫ লাখ গ্রাহক থাকলেও বর্তমানে গ্রাহকের সংখ্যা ৪৪ লাখ, কাস্টমার কেয়ার সেন্টার ৪০টি থেকে ৮৭টি, রিটেইলার ও ডিস্ট্রিবউটর ২৬ হাজার থেকে বেড়ে ৫০ হাজার হয়েছে বলে জানান তিনি। এছাড়াও চলতি বছরের মার্চে ব্র্যান্ড লোগো উন্মোচন করা হয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
টেলিটকের বর্তমান অবকাঠামো তুলে ধরে তারানা হালিম বলেন, এই মুহূর্তে টুজি টাওয়ার তিন হাজার ৭৫০টি, থ্রিজি টাওয়ার রয়েছে এক হাজার ৫৬২টি। নিজস্ব অর্থায়নে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এক হাজার ৭০০টি নতুন টুজি টাওয়ার এবং এক হাজার ৫০০টি থ্রিজি টাওয়ার স্থাপন করা হবে।
তিনি বলেন, একনেকে ৬৭৫ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে, যা ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে শেষ হবে। এতে এক হাজার ২০০টি থ্রিজি টাওযার এবং ৫০০টি টুজি টাওয়ার স্থাপন করা হবে।
এছাড়াও তিন হাজার ২০০ কোটি টাকার একটি প্রস্তাব টেলিটক থেকে প্রণয়ন করা হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বোর্ড মিটিংয়ে অনুমোদন হয়ে ডিপিপি পাস হলে ইউনিয়ন পর্যন্ত থ্রিজি নিয়ে যেতে সক্ষম হবো।
ছয় মাসের টার্গেট তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন যে ৩৯ হাজার রিটেইলার পয়েন্ট আছে তা আগামী ছয় মাসে ৭৭ হাজার বৃদ্ধি করবো। কাস্টমার কেয়ার আরও ২০টি যুক্ত করবো। আগামী এক বছরে আমাদের লক্ষ্য উপজেলায় যাওয়া, ২০১৮ সালে সব উপজেলা কাভার করার ইচ্ছা আছে।
গত এক বছরে প্রত্যেক সেক্টরে টেলিটক এগিয়ে গেছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি চাই দুই বছরের মধ্যে কোনো বাড়তি সুবিধা না দিয়ে কোনো পক্ষপাতমূলক আচরণ না করে টেলিটককে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে উপযুক্ত করে তোলা। এটা আমারও চ্যালেঞ্জ। আমার টার্গেট হচ্ছে পরবর্তী নির্বাচনের আগে আমরা যেন বলতে পারি, বর্তমান সরকারের মেয়াদকালে আমরা টেলিটককে সাবলম্বী করতে সক্ষম হয়েছি।
টেলিটকের কর্মীদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
দেশের প্রতিষ্ঠান হিসেবে টেলিটকের সেবা গ্রাহকরা গ্রহণ করতে চান জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, সমস্যা একটাই, সেটা হচ্ছে নেটওয়ার্ক। নেটওয়ার্ক না পেলে আপনি সেবাটা গ্রহণ করবেন না।
এজন্য টেলিটকের সাপ্তাহিক বা ১৫ দিনের আপডেট জানতে চান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই মনিটরিং হলে তাদেরও তাগাদা থাকবে, যে টার্গেট ফুলফিল করবো। আমরাও বুঝতে পারবো।
এক প্রশ্নের জবাবে টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) গিয়াস উদ্দিন আহমেদ বলেন, তীব্র প্রতিযোগতামূল বাজারে ছোট অপারেটর হিসেবে টিকে থাকতে সাশ্রয়ী রেটে বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজ ডিজাইন করছি। খুব শিগগিরই বাজারে পাওয়া যাবে।
সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ডটবাংলা
মাতৃভাষার নামে নিজস্ব ডোমেইন ডট বাংলা চালু করতে সরকার ডোমেইন নেম সিস্টেম পরিচালনাকারী সংস্থা আইসিএএনএন (ইন্টারনেট করপোরেশন ফর অ্যাসাইন্ড নেমস অ্যান্ড নাম্বারস)-এর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আইসিএএনএন-কে চিঠি পেয়েছি, তারা বলেছেন আমার চিঠি পেয়েছে। আইসিএএনএন বিয়টি নিয়ে কাজ করছেন এবং দ্রুততার সাথে সিদ্ধান্ত দেবে। আমাদের পক্ষ থেকে কাজ শেষ হয়েছে, আমরা শুধু তাদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।
অনুষ্ঠানে বিকাশ’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কামাল কাদীরসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৬
এমআইএইচ/এমজেএফ/