ঢাকা: সার্কভুক্ত দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে অনলাইনভিত্তিক জঙ্গিবাদী তৎপরতা রুখতে উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
শিগগিরই পাশ্ববর্তী দেশ ভারত ও ভুটানের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলছেন, আন্তর্জাতিকভাবে এ হুমকি মোকাবেলা করা হবে।
রোববার (১৪ আগস্ট) সচিবালয়ে ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে বৈঠকের পর প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের একথা জানান। এসময় টেলিযোগাযোগ সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
সম্প্রতি দেশে যতো ধরনের মৌলবাদী চিন্তা-চেতনার বহিঃপ্রকাশ তা অনলাইনেই শুরু হয় বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, অনলাইনভিত্তিক মানুষকে ধর্মান্ধ করে তোলা, জঙ্গিবাদে উৎসাহী করে তোলা ও বিভিন্ন প্রজন্মকে টার্গেট করে তাদেরকে ফাঁদে ফেলা এবং উগ্রবাদে দীক্ষা দেওয়া- গত দু’বছর বা বর্তমান সময়ে অনলাইনেই ঘটেছে।
‘অনলাইনে সন্ত্রাসবাদ একটা গ্লোবাল থ্রেট। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোও এটা স্বীকার করেছে। এ গ্লোবাল থ্রেটকে আমাদের গ্লোবালি মোকাবেলা করতে হবে। এজন্য আমরা চাচ্ছি সার্কভুক্ত একটি সহযোগিতা। ’
ইতোমধ্যে সার্কভুক্ত দেশের মধ্যে সহযোগিতার জন্য প্রাথমিক কথাবার্তা শুরু হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী জানান, আমরা চাচ্ছি ভারত ও ভুটানের সঙ্গে এমওইউ সই করে প্রাতিষ্ঠানিক কাজ শুরু করা।
‘এর মূল উদ্দেশ্য, যারা অনলাইনে জঙ্গিবাদী তৎপরতা করছেন তাদের কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়া, যে একত্রিতভাবে বিশ্বের সব দেশ জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় কাজ শুরু করেছে। বার্তাটি তাদের কাছে পৌঁছানো খুব জরুরি। এ বিষয়ে ভারত ও ভুটানের সঙ্গে কথা বলেছি। নেপালের সঙ্গেও কথা বলবো। ’
তারানা হালিম বলেন, আমরা ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে টেলিযোগাযোগ সেবার সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে চাই।
ব্যান্ডউইথ নিতে আসছে ভুটান
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে অব্যবহৃত ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করা হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা ১৩১ জিবিপিএস। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৫০ জিবিপিএস’র ঊর্ধ্বে রপ্তানি করতে পারবো। ত্রিপুরায় ১০ জিবিপিএস বিক্রি করছি। সেখানে ৪০ জিবিপিএস পর্যন্ত ব্যান্ডউইথ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি আছে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, আগামী বছর আরও এক হাজার ৫০০ জিবিপিএস পাবো। অভ্যন্তরীণ চাহিদার তিন থেকে চারগুণ হাতে রেখে দিলেও আমাদের পর্যাপ্ত ব্যান্ডউইথ থাকে, যা রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবো। না হলে অব্যবহৃতগুলো দেশের জন্য আর্থিক ক্ষতি হবে। সন্তোষজনক মূল্যে অতিরিক্ত ব্যান্ডউইথ রপ্তানির জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি।
ব্যান্ডউইথ নিতে ভুটান খুবই আগ্রহী জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী এবং টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা কম খরচের রুট ব্যবহার করে দ্রুত নিতে চায়। রুট দেখার জন্য এ মাসেই ভুটানের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ আসবে।
ভুটানে রপ্তানির জন্য ভারতের করিডোর ব্যবহারে দেশটি ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
ভারতের এইট সিস্টার ব্যান্ডউইথ কানেক্ট করতে চায় বলেও জানান তারানা হালিম।
অব্যবহৃত ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করে দেশেরও লাভের পাশাপাশি একটা কানেকটিভিটি তৈরি করতে পারবো বলেন প্রতিমন্ত্রী।
সার্ক স্যাটেলাইট
সার্ক স্যাটেলাইটের বিষয়ে ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিটিআরসি চেয়ারম্যান ভারতে গিয়ে কথা বলেছেন, যাচাই-বাছাই করার জন্য কথা হয়েছে।
স্যাটেলাইটের জন্য বিভিন্ন সার্ক দেশগুলো সম্মতি দিয়েছে, আমাদেরও সম্মতি রয়েছে।
তবে আমরা প্রাথমিকভাবে আমাদের স্যাটেলাইটের পরিষেবা যাতে বিঘ্নিত না হয়, এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। আমাদের স্যাটেলাইটের ব্যবসায়িক স্বার্থ যেন ক্ষুন্ন না হয়, ফ্রিকোয়েন্সি যেন ব্যাহত না হয়, এগুলোর বিষয়ে যাচাই-বাছাই করছি।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৬
এমআইএইচ/জেডএস