ঢাকা: মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেডের বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ইন্টারনেট ও মোবাইল ডিভাইস থেকে রাজস্ব বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ১ শতাংশ। এ সময়ে ২.৫জি, ৩.৫জি নেটওয়ার্ক বিস্তৃতিতে বিনিয়োগ করেছে ৫৬০ কোটি টাকা।
চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (এপ্রিল-জুন) আর্থিক বিবরণী প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে রবি।
প্রতিবেদন প্রকাশ নিয়ে রবি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও সুপুন বীরাসিংহে বলেন, ২০১৬ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে আমাদের রাজস্ব স্থিতিশীল রয়েছে। তবে বায়োমেট্রিক সিম পুনঃনিবন্ধনের পদক্ষেপ নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে ব্যবসায়িক অগ্রগতিতে। এরপরও গ্রাহকদের মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমরা ২.৫জি/৩.৫জি নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি ও আধুনিকায়নে ক্রমাগত বিনিয়োগ করে চলেছি।
গত বছরের প্রথমার্ধের সঙ্গে এ বছরের প্রথমার্ধের তুলনা করে প্রতিবেদনে বলা হয়, বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধনের কারণে নতুন সংযোগের সংখ্যা কমে যাওয়া, সব মোবাইল টেলিযোগাযোগ সেবার ওপর বাড়তি ১ শতাংশ সারচার্জ ও ২ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক নির্ধারণ এবং ভয়েস সেবার চেয়ে ইন্টারনেটভিত্তিক সেবার দিকে ঝোঁকার ফলে প্রবৃদ্ধির ওপর এর প্রভাব পড়ায় চ্যালেঞ্জ নিয়েই ২০১৬ সাল শুরু হয়।
গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের প্রথমার্ধে রাজস্বের পরিমাণ ৩ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। এসময় ইন্টারনেট থেকে রাজস্বের পরিমাণ ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। নেটওয়ার্কে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ এবং ৩.৫জি ও ২.৫জি ইন্টারনেট ব্যবহার বৃদ্ধি করতে উদ্ভাবনী ইন্টারনেট প্যাকেজ চালুর ফলেই এই অসামান্য অগ্রগতি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদিও ২০১৬ সালের প্রথমার্ধে রবি’র পরিচালনগত মুনাফার (ইবিআইটিডিএ) মার্জিন ৩২ দশমিক ৯ শতাংশ, কিন্তু এ মার্জিন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ১ কম। নেটওয়ার্ক খাতে ক্রমাগত ব্যয়ের কারণে এক্ষেত্রে পরিচালনগত ব্যয় বৃদ্ধি এবং বাজারে সেবা ও পণ্যের দাম নিয়ে তুমুল প্রতিযোগিতার কারণে এমনটি হয়েছে।
নেটওয়ার্ক আধুনিকায়ন এবং সম্প্রতি প্রণীত অর্থ আইন অনুসারে করের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে কর পরবর্তী মুনাফার (পিএটি) ওপর। নেটওয়ার্ক আধুনিকায়নের ফলে বৃদ্ধি পাওয়া অবচয় ও বর্ধিত করের ফলে বাড়তি খরচকে বিবেচনায় না আনলে এ বছরের প্রথমার্ধে মুনাফার পরিমাণ দাঁড়াতো ১৭০ কোটি টাকা যা গত বছরের তুলনায় ৮ শতাংশ কম।
২০১৬ সালের প্রথম ও দ্বিতীয় প্রান্তিকের মধ্যে তুলনামূলক চিত্রে দেখানো হয়েছে, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম পুনঃনিবন্ধন প্রক্রিয়ার কারণে গ্রাহক বৃদ্ধির হার কমে যাওয়ায় রবি’র সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা (২ কোটি ৭৪ লাখ) অপরিবর্তিত রয়েছে। পণ্য ও সেবার দাম নিয়ে বাজারে তুমুল প্রতিযোগিতার মধ্যেও প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকের রাজস্ব ৫ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা টাকার অংকে এক হাজার ২৪০ কোটি টাকা। বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় বাড়তি ব্যয় সত্ত্বেও ইবিআইটিডিএ অপরিবর্তিত রয়েছে যার পরিমাণ ৪০০ কোটি টাকা।
মোবাইল নেটওয়ার্ক অবকাঠামোয় বিনিয়োগ নিয়ে রবি বলছে, ৩.৫জি নেটওয়ার্কের সম্প্রসারণ এবং ২.৫জি নেটওয়ার্কের ভয়েস ও ইন্টারনেট সেবার মান উন্নয়নে ব্যাপক বিনিয়োগ করা হয়েছে। ২০১৬ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে মূলধনী ব্যয়-ভিত্তিক বিনিয়োগ ৫৬০ কোটি টাকাসহ কার্যক্রম শুরুর পর থেকে রবি’র মোট মূলধনী ব্যয়-ভিত্তিক বিনিয়োগের পরিমাণ ১৭ হাজার ২৩০ কোটি টাকা। দেশের ৬৪টি জেলায় ৮ হাজার ৭০০টি’রও অধিক সাইট নিয়ে বিস্তৃত রবি’র নেটওয়ার্ক যার মধ্যে ৩.৫জি সাইটের সংখ্যা ৪ হাজার ৬০০টি’রও অধিক।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০১৬ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে রবি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে রবি জমা দিয়েছে ৩১০ কোটি টাকা, যা মোট রাজস্বের ২৪ দশমিক ৬ শতাংশ।
১৯৯৭ সালে কার্যক্রম শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত রবি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়েছে ১৬ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা। একই সময়ে শেয়ার হোল্ডারদের লভ্যাংশ হিসেবে প্রদান করেছে ২৯০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৬
এমআইএইচ/জেডএস