যখনই মহাবিশ্ব, মহাকাশ বা সৌরজগতের কথা আসে, ভিনগ্রহের প্রাণীদের কথা আসে, তখনই দুনিয়া তাকিয়ে থাকে হুইলচেয়ারবন্দি, পক্ষাঘাতগ্রস্ত এক বিজ্ঞানীর দিকে। তিনি স্টিফেন হকিং।
হকিংয়ের মতে, ভিনগ্রহের প্রাণীদেরকে যদি আমরা নিজেদের অবস্থান জানান দিই, তাহলে মঙ্গলের চেয়ে অমঙ্গলের আশঙ্কাই বেশি। বিশেষ করে যদি তারা হয় পৃথিবীবাসীদের চেয়ে প্রাযুক্তিকভাবে অনেক বেশি অগ্রসর।
অর্বুদ কোটি মাইল দূরবর্তী কোনো গ্রহ থেকে যদি উন্নততর প্রাণীরা পৃথিবীতে কোনো সঙ্কেত পাঠায়ই, সেক্ষেত্রে আমাদের উচিত হবে সাড়া না দেওয়া; নিজেদের অবস্থান সম্বন্ধে জানান না দেওয়্।
সঙ্কেত পেয়ে সাড়া দিয়ে ফেললে কি হবে? এ প্রশ্নের জবাবও দিয়েছেন হকিং। তার মতে, তাদের সঙ্গে আমাদের প্রথম যোগাযোগের ফলটা হবে ভয়ঙ্কর বিপর্যয়কর। ক্রিস্টোফার কলম্বাসের সঙ্গে সাক্ষাতের ফলটা যেরকম বিপর্যয়কর হয়েছিল আদিবাসী আমেরিকানদের জন্য।
হকিং এসব কথা বলেছেন একটি অনলাইন ফিল্মকে ঘিরে। ফিল্মটির নাম "Stephen Hawking's Favourite Places"। এই ছবিতে হকিং তার কল্প-মহাকাশযান ‘দ্য এস এস হকিং’ ( SS Hawking)—এ চড়িয়ে দর্শকদের নিয়ে যান মহাবিশ্বের অতিদূরবর্তী পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে।
ওই ছবিতে হকিং Gliese 832c নামের ১৬ আলোকবর্ষ দূরবর্তী এক কল্পিত গ্রহের পাশ দিয়ে উড়ে যান।
"একদিন Gliese 832c-এর মতো অতিদূর কোনো গ্রহ থেকে আমরা হয়তো সঙ্কেত পাবো। কিন্তু সেই সঙ্কেতের উত্তর দেবার ক্ষেত্রে আমাদের সাবধানী হতে হবে। ’’—বলেন হকিং।
‘‘ওরা হবে আমাদের চেয়ে হবে ঢের ঢের শক্তিশালী। ব্যাকটেরিয়ার মতো কীটাণু কীটের চেয়ে মূল্যবান কিছু বলে ওরা আমাদের মনে নাও করতে পারে। ’’
দ্য গার্ডিয়ান ('The Guardian') পত্রিকাকে দেওয়া এক মন্তব্যে মানবজাতিকে সতর্ক করে দিয়ে হকিং আরও বলেন, ‘‘যতই আমার বয়স বাড়ছে ততই আমার মনে আগের চেয়ে এই ধারণা আরও বেশি বদ্ধমূল হচ্ছে যে, মহাবিশ্বে আমরা একা নই। সারাজীবনব্যাপী অন্বেষণের পর আমি এখন মহাবিশ্বের বুদ্ধিমান প্রাণীদের খুঁজে বের করার জন্য বিশ্বজনীন এক উদ্যমের নেতৃত্ব দিয়ে চলেছি। ’’
প্রসঙ্গত, হকিং এর আগেও একাধিকবার মহাকাশের উন্নততর বুদ্ধিমান প্রাণীদের বৈরিতার ব্যাপারে বিশ্ববাসীকে সতর্ক করেছেন। তিনি মনে করেন, ভিনগ্রহের প্রাণীদের সম্ভাব্য বৈরিতা আমাদের পৃথিবীর জন্য সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৬
জেএম/