ঢাকা: ‘কোনো সংকট বা হুমকিকেই এখন চ্যালেঞ্জ মনে করছি না’ বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। এই মানসিক শক্তির পেছনে কাজ করেছে সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপ আর জনগণের সমর্থন ও সহযোগিতা।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা’য় অনুষ্ঠিত ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৬’ এর সমাপনী দিনে সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ক সেমিনার ‘ইউ আর নট সেইফ! ডিজিটাল সিকিউরিটি ফর এভরি সিটিজেন’ এ অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মোবাইল, কম্পিউটার ও ইন্টারনেট প্রযুক্তির প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশে সাইবার অপরাধের সংখ্যা, ব্যাপ্তি ও গভীরতা বাড়ছে। পর্যালোচনায় দেখা গেছে কম্পিউটার ব্যবহারকারী হিসেবে সর্বাধিক লোকাল ইনফেকশন ঝুঁকির তালিকায় থাকা শীর্ষ ২০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি ও নিত্য কলা-কৌশল ব্যবহার করে যেসব জঙ্গি গোষ্ঠী বাংলাদেশের সমৃদ্ধি, শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করার চেষ্টা করতে চেয়েছিল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পেশাদারী দক্ষতার মাধ্যমে সে সমস্ত বিষদাঁত সমাজ তথা রাষ্ট্র থেকে উপড়ে ফেলতে সক্ষমতার স্বাক্ষর রেখে চলছে। কিন্তু এখনও অনেক অপরাধী ইন্টারনেট প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশ, রাষ্ট্র ও সমাজ বিরোধী বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করার চেষ্টা করে যাচ্ছে, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এগুলো সম্পর্কে খুবই সচেতন এবং এদের মোকাবেলায় প্রতিনিয়ত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া প্রচলিত সাইবার অপরাধ দমনেও বাংলাদেশ পুলিশ সফলতা অর্জন করেছে।
কামাল বলেন, সরকার এ বিষয়ে সজাগ আছে। রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অপব্যবহার ও সংক্রান্ত অপরাধ দমনে ২০০৬ সালে তথ্য ও প্রযুক্তি আইন করা হয়। ২০০৯ ও ২০১৩ সালে এ আইনটিকে সংশোধন করে সময় উপযোগী করা হয়। ২০১২ সালে করা হয়েছে পর্ণোগ্রাফী নিয়ন্ত্রণ আইন। সাইবার নিরাপত্তায় বিঘ্ন সৃষ্টিকারী ও সাইবার অপরাধ মোকাবেলায় সক্ষমতা বাড়ানোসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রণীত হতে যাচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন।
তিনি জানান, বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশে সংঘটিত সাইবার অপরাধ পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, এসব আইন প্রণয়নের পর থেকে এ পর্যন্ত এ সমস্ত আইনের বিভিন্ন ধারায় ১ হাজার ৬১২টি মামলা রুজু হয়েছে এবং এ সমস্ত মামলায় ৫ হাজার ৪৪৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সাইবার স্পেস ব্যবহার করে জঙ্গিবাদসহ সাইবার টেরোরিজম ও অন্যান্য সাইবার অপরাধ দমন ও উদঘাটনের জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অধীনে গঠিত কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটে রয়েছে সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ডিভিশন। এ ডিভিশনে ইন্টারনেট ভিত্তিক জঙ্গিবাদসহ সাইবার অপরাধসহ বিভিন্ন অপরাধের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এছাড়া সাইবার অপরাধ সংগঠনে ব্যবহৃত ডিভাইস পরীক্ষাসহ সাইবার অপরাধ উদঘাটনে পুলিশের সিআইডিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবরেটরি। এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০০ মামলার ফরেনসিক টেস্ট হয়েছে এ ল্যাবরেটরিতে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাইবার সিকিউরিটি রিসার্চার আলমাস জামানসহ আইটি সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৬
আরএম/ওএইচ/আরআই