ঢাকা: বিআরটিএ’র প্রচলিত যে নিয়ম আছে তাতে আপত্তি তুলেছেন স্মার্টফোন অ্যাপভিত্তিক ট্যাক্সি ও মোটরবাইক সেবাদাতারা। যে কারণে মন্ত্রীর স্বাগত জানানোর পরও এসব অ্যাপস সেবাদাতাদের কেউই বিআরটিএ-তে যায়নি।
প্রচলিত পরিবহন সেবার মতো নয় উল্লেখ করে স্মার্টফোন অ্যাপের এসব সেবাদাতারা বলছেন, এটি একটি ডিজিটাল সেবা, ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি নয়। যা সবার জন্য উন্মুক্ত।
অপরদিকে বিআরটিএ বলছে, অ্যাপস নিয়ে তাদের কোনো ‘এলার্জি’ নেই। বাংলাদেশের রাস্তার যেকোনো গাড়ি চলুক সেটি বিআরটিএ’র অধীনে এবং এর দায়দায়িত্ব বিআরটিএ’র ওপর বর্তায়।
উবারের মতো মোটরসাইকেলে শেয়ারিং পদ্ধতির অ্যাপস স্যাম (শেয়ার এ মোটরবাইক)-কর্তৃপক্ষ বলছে, অ্যাপসটি বোঝানোর জন্য তারা বিআরটিএ’র কাছে যাবে। এটা কোনো ট্যাক্সি সার্ভিস বা ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি নয় যে কিছু মোটরবাইক কিনে নামিয়ে দেওয়া হলো। এটি শুধু মোটরসাইকেল চালকদের মোবাইলে একটি অ্যাপস চালু করে দেওয়া যাতে তারা আরেকজন আরোহীকে গন্তব্যে নিয়ে যেতে পারেন।
আর উবারের অ্যাপস অনুযায়ী, এটি ব্যবহার করেও আশেপাশের ট্যাক্সি ডেকে এনে কোথাও যাওয়া যায়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক উবার ইউরোপের সর্বোচ্চ আদালতে ‘ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি নয় একটি ডিজিটাল সেবা’ হিসেবে স্বীকৃতি পেতে আবেদন করছে।
অন্যদিকে, বিআরটিএ উবারকে বেআইনি বলে বিজ্ঞপ্তি দিলেও ঢাকায় উবারের অ্যাপস সক্রিয় দেখা যাচ্ছে। এটি ব্যবহারও হচ্ছে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী স্মার্টফোনভিত্তিক এসব সেবাকে স্বাগত জানালেও তার বক্তব্য হলো- এগুলোকে একটি আইনি কাঠামোর মধ্যে আসতে হবে।
কিন্তু সেই আইনি কাঠামোর কর্তৃপক্ষ কি বিআরটিএ? তা এখনও স্পষ্ট নয়। প্রচলিত নিয়মে যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন ও রুট পারমিট দেয় বিআরটিএ। কিন্তু স্মার্টফোনভিত্তিক এসব প্রতিষ্ঠান নতুন কোনো গাড়ি নামায় না। বরং চলমান গাড়িগুলো যেন মানুষ সহজে পেতে পারেন সেজন্য মোবাইল অ্যাপসে যোগাযোগ করিয়ে দেয়।
নগরীর একটি ট্যাক্সি কোম্পানি যেমন উবার সে রকম নয়, এমন দাবি উবারের।
এ বিষয়ে যোগাযোগ কর হলে বিআরটিএর পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) নুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, প্রযুক্তি নির্ভর এসব সেবাকে তারা সহায়তা দিতে প্রস্তুত। কিন্তু এখনও কেউ আসেনি।
তিনি বলেন, একটি প্রাইভেট গাড়িতে যাত্রী উঠিয়ে দেওয়ার পর ওই গাড়ির চালক যাত্রীর সঙ্গে আচরণ সঠিক করলো কিনা তার দায়িত্ব কে বহন করবে। যেহেতু এখন এসব সেবাদাতারা বুঝতে পেরেছেন কর্তৃপক্ষ কে, এজন্য তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে।
স্মার্টফোনের মাধ্যমে এসব সেবাদাতারা যেহেতু ভাড়ার একটা অংশ পান এবং যে গাড়ি দিয়ে এ সেবা দেওয়া হবে সেটি প্রাইভেট। ফলে তাদেরকে বিআরটিএ’র নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। কারণ প্রাইভেট রেজিস্ট্রেশন ক্যাটাগরির কোনো গাড়ি ভাড়ায় চলতে পারবে না বলে আইনে আছে- বলেন নুরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, সে হিসেবে প্রাইভেট গাড়ি ভাড়ায় চলাচল আইন পরিপন্থী। এখন যুগোপোযোগী সেবার জন্য তারা আমাদের পরামর্শ নিতে পারে। আর আমরাও আইন কিভাবে যুগোপোযোগী করতে হবে সেটা ভাববো। তার জন্য কাউকে আসতে হবে। কিন্তু তারা এখনও আসেনি।
আরও পড়ুন
**বিআরটিএ’র ‘উবার’ বিরোধীতা জনবিরোধী!
**অ্যাপসে ‘ক্যাব-বাইক’ সেবাদাতাদের সঙ্গে বসতে চায় বিআরটিএ
** স্মার্টফোন ভিত্তিক সেবাগুলোকে লিগ্যাল ফ্রেমে আসতে হবে
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৬
এসএ/জেডএস