ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

অনলাইনে সরকারি কর্মকর্তাদের তথ্য অধিকার আইনের প্রশিক্ষণ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৭
অনলাইনে সরকারি কর্মকর্তাদের তথ্য অধিকার আইনের প্রশিক্ষণ অনলাইনে সরকারি কর্মকর্তাদের তথ্য অধিকার আইনের প্রশিক্ষণ

ঢাকা: তথ্য অধিকার আইন সম্পর্কে দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে অনলাইন প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

এ কর্মসূচির মাধ্যমে ঘরে বসে অনলাইনে ১৫দিনের মধ্যে মাত্র দুই ঘণ্টা ২২ মিনিটে প্রশিক্ষণ শেষে সনদ গ্রহণ করতে পারবেন তথ্য প্রদানকারী সরকারি কর্মকর্তারা।
 
মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে প্রধান অতিথি হিসেবে এ প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এমআরডিআই এর সহায়তায় সরকারি ২৫ হাজার অফিসের ২৫ হাজার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মধ্যে নিয়ে আসা হবে।
 
বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় তথ্য কমিশনের জন্য এমআরডিআই এ অনলাইন প্রশিক্ষণের পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে। প্রশিক্ষণের জন্য তথ্য কমিশনের ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ১০টি সেশনে প্রতিটিতে পরীক্ষায় ৬০ শতাংশ নম্বর পেলে প্রশিক্ষণ শেষে সনদ পাবেন। তথ্য কমিশন এ সনদ দিবে।
 
আর কেউ যদি ১৫দিনে শেষ করতে না পারেন তাহলে তাকে পুনরায় নিবন্ধন করে প্রশিক্ষণ শেষ করতে হবে।
 
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ কর্মসূচির মাধ্যমে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তথ্য অধিকার আইন সম্পর্কে নিজে নিজেই শিখতে পারবেন। অন্য প্রশিক্ষক লাগবে না।
 
তিনি বলেন, এটা ভাল উদ্যোগ, এটা আমরা অন্য জায়গায় সম্প্রসারিত করার চেষ্টা করব। অন্য জায়গায় প্রয়োগ করতে পারব।   
 
সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের সঙ্গে যুক্ত করা যায় কিনা বা আবশ্যিক হিসেবে না থাকলে অপশনাল টপিক হিসেবে যুক্ত করা যেতে পারে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এছাড়া অন্যান্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানও প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে যুক্ত করতে পারে।
 
এ পদ্ধতিতে আপিল কর্তৃপক্ষের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থার উদ্যোগ নিতে বলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
 
দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি ২৫ হাজার কর্মকর্তার প্রশিক্ষণ শেষে পরবর্তীতে বাধ্যতামূলক টেস্ট হিসেবে নেওয়া যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেন শফিউল আলম।
 
অনলাইনে বাংলাদেশে কর্মকর্তাদের জন্য দৃশ্যত এটিই প্রথম প্রশিক্ষণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবসরে ফাঁকা সময়ে তারা আয়েস করেই প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন, যা অনেক আনন্দদায়ক হবে। ভেঙে ভেঙে ২ ঘণ্টা ২২ মিনিট প্রশিক্ষণ করা যাবে।
 
তথ্য অধিকার আইনের সঙ্গে যারা সরাসরি কাজ করেন তাদের জন্য এ প্রশিক্ষণ অনেক কাজে লাগবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব স্বাচ্ছন্দময় প্রশিক্ষণ সবাই গ্রহণ করবেন বলে আশা করেন।
 
অনুষ্ঠানে প্রধান তথ্য কমিশনার গোলাম রহমান বলেন, আমরা যে প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকছি, প্রযুক্তি মনস্ক হচ্ছি- এটাকে এক্সটেনশন করারই একটি প্রয়াস এই অনলাইন প্রশিক্ষণ।
 
দিন দিন তথ্যের ব্যবহার ও তথ্য চাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে জানিয়ে তিনি বলেন, স্বপ্রণোদিত তথ্য দেওয়ায় অনেক তথ্য নাগরিকরা পেয়ে যাচ্ছেন। আমরা চাই, প্রকৃত অর্থে প্রশাসন সুশাসনের অধিকারী হবে। সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হলে প্রশাসন জবাবদিহী, দুর্নীতি মুক্ত এবং অনেক বেশি স্বচ্ছ হবে।
 
অনলাইন প্রশিক্ষণের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা প্রযুক্তির সঙ্গে নিবিড় এবং গভীরভাবে জড়িয়ে আছি, সুতরাং প্রযুক্তি অগ্রাহ্য করে এগোতে পারব না। অনলাইন প্রশিক্ষণ যে কেউ নিক, তাতে আমাদের লাভ আছে।
 
তিনি বলেন, তথ্যকে লুকিয়ে রেখে আমরা যদি মনে করি প্রশাসনকে সাহায্য করছি, তাহলে পুরোপুরি তার উল্টো হবে। সেজন্য প্রশাসনকে সাহায্য-সহযোগিতা করতে হলে তথ্যের ব্যবহার বাড়াতে হবে। ডিমান্ড এবং সাপ্লাই বাড়াতে হবে।
 
অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট বলবত থাকায় ঐতিহাসিক ও সংষ্কৃতিগতভাবে আমরা তথ্য ঢেকে রাখতে চাই জানিয়ে গোলাম রহমান বলেন, এ সংষ্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, এটা সময়ের দাবি।  
 
ডি-নেট এর সহযোগিতায় ট্রেকিং সিস্টেম চালু হচ্ছে জানিয়ে প্রধান তথ্য কমিশনার বলেন, এর মাধ্যমে তথ্যের আবেদনের অবস্থা কী, তা আবেদনকারী নিজেই খোঁজ করে দেখতে পারবেন। এটি খুব শিগগিরই চালু হবে।
 
তথ্যসচিব মরতুজা আহমদ, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য নজরুল ইসলাম, তথ্য কমিশনার নেপাল চন্দ্র সরকার ও খুরশিদা বেগম সাইদ, এমআরডিআই নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান মুকুর এবং তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৭
এমআইএইচ/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।