ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

টেলিকমে বাড়তি ট্যাক্স ডিজিটাল লক্ষ্যমাত্রায় সাংঘর্ষিক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৫ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০১৭
টেলিকমে বাড়তি ট্যাক্স ডিজিটাল লক্ষ্যমাত্রায় সাংঘর্ষিক  আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন/ছবি: সুমন শেখ

ঢাকা: মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছে, হ্যান্ডসেট এবং মোবাইল টেলিকম কাঠামোর উপর কর বৃদ্ধি ও সিম ট্যাক্স বাড়ানোর পদক্ষেপ টেলিযোগাযোগ সেবা ও ডাটা সেবার ক্ষেত্রে ডিজিটাল লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।  

বুধবার (৭ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর অভিজাত এক হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ খাতে কর-ট্যাক্স বাড়ানোর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানায় অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল অপারেটরস অব বাংলাদেশ (অ্যামটব)।
 
সংবাদ সম্মেলনে ইন্টারনেট ব্যবহারে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জনিয়েছে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন অ্যামটবের মহাসচিব টিআইএম নুরুল কবির।
 
তিনি বলেন, টেলিযোগাযোগ শিল্প খাত জিডিপিতে ৬ শতাংশ অবদান রাখছে, ভবিষ্যতে যা ৮ শতাংশে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাজেট প্রস্তাবনায় দেখা যাচ্ছে, সাধারণ গ্রাহকের উপর বাড়তি ব্যয়ের বোঝা চাপানো হয়েছে।
 
স্মার্টফোন আমদানির উপর চাপিয়ে দেয়া বাড়তি কর ‘অসময়োপযোগী’ আখ্যা দিয়ে অ্যামটব বলছে, দেশীয় হ্যান্ডসেট উৎপাদনকারী শিল্প এখনও সুফল গ্রহণ করার উপযুক্ত হয়ে উঠতে পারেনি। ৯৫ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মোবাইল যন্ত্রের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে। হ্যান্ডসেটের উপর আরোপিত নতুন কর ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধির পথে প্রতিবন্ধক হবে।
 
অ্যামটব ইন্টারনেট ব্যবহারের উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলে, তা করা না হলে সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার রাজনৈতিক লক্ষ্য বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাবে।
 
অ্যামটব মনে করে হ্যান্ডসেট এবং মোবাইল টেলিযোগযোগ পরিকাঠামোর উপর বাড়তি কর এবং সেই সাথে সিম ট্যাক্স বাড়ানোর সিদ্ধান্ত সরকারের টেলিযোগাযোগ এবং ডাটা-সেবা স্বল্প-ব্যয়-সাপেক্ষ করে তোলার উচ্চাশার পরিপন্থি।
 
জাতীয় বাজেটে হ্যান্ডসেট এবং মোবাইল টেলিযোগাযোগ পরিকাঠামোর ওপর বাড়তি কর ও সিম ট্যাক্স বাড়ানোর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে দেশের সংগঠনটি।
 
টেলিযোগাযোগ শিল্পে করপোরেট ট্যাক্সের সামঞ্জস্য বিধানের এ দাবি জানানো হয়। বর্তমানে এই খাতে করপোরেট ট্যাক্স ৪৫ শতাংশ।
 
অপারেটরগুলো ফোর-জির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ফোর-জি হ্যান্ডসেট ব্যবহারের হার মাত্র ৪ শতাংশ। এমতাবস্থায় মোবাইল হ্যান্ডসেটের উপর আমদানি কর বৃদ্ধি মোবাইল শিল্পের ভবিষ্যৎ আরো দুর্বল করে তুলবে।
 
এছাড়া দেশে যখন ফোর-জি প্রযুক্তি চালু করার জন্য বিনিয়োগ আসন্ন তখন টেলিকম যন্ত্রাদির উপর ন্যস্ত আমদানি কর ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার ফলে মোবাইল শিল্পের উপর চাপ আরো বেড়ে যাবে।
 
রবি আজিয়াটা লিমিটেডের চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড পিপল অফিসার মতিউল ইসলাম নওশাদ বলেন, কয়েক বছরে ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়ানোর ফলে মোবাইল পেনিট্রেশন এবং নেটওয়ার্ক বৃদ্ধির সুবিধা হারাচ্ছি। এতে সরকারের রাজস্ব সুবিধা হারানোর পাশাপাশি অপারেটরগুলোও লাভজনক হয়নি।
 
গ্রামীণফোনের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার মাহমুদ হোসেন বলেন, এমনিতেই টেলিকম শিল্প লাভজনক নয়। তার উপরে ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়লে তার প্রভাব পড়বে বাজারে।
 
বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তৈমুর রহমান বলেন, বাজারে মাত্র ৪ শতাংশ ফোর-জি এনাবেল সেট রয়েছে। বাড়তি কর হলে আমদানি কমে ফোর-জি ব্যবহারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
 
সংবাদ সম্মেলনে ভ্যাট-ট্যাক্স পুনর্বিবেচনা করে ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রত্যাশিত লক্ষ্য অর্জনের পথে টেলিকম অপারেটরদের সহায়ক ভূমিকা রাখার সুযোগ করে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০১৭
এমআইএইচ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।