ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

ডার্ক ওয়েব থেকে ব্লু হোয়েল, ঢামেকে ভর্তি স্কুল ছাত্র

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৭
ডার্ক ওয়েব থেকে ব্লু হোয়েল, ঢামেকে ভর্তি স্কুল ছাত্র ছবি: প্রতীকী

ঢাকাঃ উত্তেজনাবশত `ব্লু হোয়েল’ গেমে ঢুকে ফাঁদে পড়েছিল মিরপুরের এক স্কুলছাত্র। আত্মঘাতী হওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে বুঝতে পেরে ১৪তম ধাপে খেলা বন্ধ করে দেয় সে। কিন্তু গেমটি কিছুতেই আন-ইনস্টল করতে পারছিলো না। শেষ তক হ্যান্ডসেটটাই ভেঙ্গে ফেলে সে। তারপর চরম অস্থিরতা থেকে বাঁচতে অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে পড়ে তীব্র শ্বাসকষ্টে। এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তার।

ঢামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে কথা হয় ওই স্কুলছাত্রের সঙ্গে। বাংলানিউজকে সে বলে, দেড় মাস আগে উত্তেজনাবশত ‘ডার্ক ওয়েব’ থেকে ‘ব্লু হোয়েল গেম’ এর লিংক বের করি।

তারপর খেলতে শুরু করি। তখন গেমটির নির্দশনা পড়ে আমি জানতে পারি, এই গেম খেলার পরিণতি মৃত্যু। তবুও আমি এর লেভেল ১০ পর্যন্ত যাই। যেখানে আমাকে খুব সহজ সহজ শর্ত দেয়া হয়। তখন শর্তগুলো আমার বেশ মজা লাগছিলো।

ব্লু হোয়েল খেলায় আসক্ত কিশোর ঢামেকে ভর্তি

ভিকটিম বলতে থাকে, যখন আমি ১১ নম্বর স্টেপে যাই তখন তারা (এডমিন) আমার হাত কেটে তাদের কাছে ছবি পাঠাতে বলে। কিন্তু আমি হাত কেটে ছবি পাঠালেও তাতে তারা সন্তুষ্ট হয় না। তারা আমাকে বকাবকি করতে থাকে এবং আরো কঠিন শর্ত দিতে থাকে। তারা আমাকে ছাদের রেলিং দিয়ে হাঁটতে বলে। তবে আমি তাদের আর কোন শর্ত পূরণ করতে পারছিলাম না। তখন গেমটি আন-ইনস্টল করতে চাই। কিন্তু কিছুতেই সেটা হচ্ছিলো না। পরে মোবাইলটি ভেঙ্গে ফেলি।

এই গেমের প্রতি এখন আর কোন ইন্টারেস্ট নেই জানিয়ে ওই স্কুল ছাত্র জানায়,  তার কাছে অনেকেই এই গেমটি খেলতে চেয়েছিলো।

ঢামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মুক্তাদির ভুইয়া বাংলানিউজকে বলেন,  গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ওই স্কুলছাত্রকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এরপর থেকে সে এখানে ভর্তি আছে। তার পরিবারের কাছ থেকে জানতে পারি, সে ব্লু হোয়েল গেমে আসক্ত হয়ে পড়েছিলো। সেখান থেকে রক্ষা পেতে সে অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে ফেলে। ঘুমের ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় তার কয়েকটি সমস্য দেখা দেয়। শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। তবে এখন তার অবস্থা অনেকটা ভালো। তাকে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাকে মনোচিকিৎসকের কাছে পাঠানো হয়েছে।

ভিকটিমের পারিবারিক সূত্র জানায়, পরিবারের দুই ছেলে-মেয়ের মধ্যে বড় সে। স্থানীয় এক স্কুলের ৯ম শ্রেণিতে পড়তো। অনেক আগে থেকেই সে মোবাইল, কম্পিউটার চালাতো। সে কম্পিউটার গেমে ডুবে থাকতো বলেই জানতো সবাই। কিন্তু ব্লু হোয়োল গেমে আসক্ত হয়ে পড়ার ঘটনা কেউ টের পায়নি। তবে গত ঈদের কিছু দিন পর থেকে বাবা-মা তার আচরণে পরিবর্তন দেখতে পান।

মালয়েশিয়ার এক ফেসবুক বন্ধুর মাধ্যমে সে ব্লু হোয়েল গেমের সন্ধান পায় বলে জানায় ওই স্কুল ছাত্র।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৭
এজেডএস/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।