ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

করপোরেট সিমে অনুমোদিত ব্যক্তির আঙুলের ছাপ বাধ্যতামূলক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৯
করপোরেট সিমে অনুমোদিত ব্যক্তির আঙুলের ছাপ বাধ্যতামূলক সিমে অনুমোদিত ব্যক্তির আঙুলের ছাপ বাধ্যতামূলক

ঢাকা: অপরাধমূল কর্মকাণ্ড এড়াতে করপোরেট সিম উত্তোলন, প্রতিস্থাপন, হস্তান্তর এবং নিস্ক্রিয়করণের ক্ষেত্রে অনুমোদিত ব্যক্তির আঙুলের ছাপ বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

বুধবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) বিটিআরসি’র সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সিদ্দিকী স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত নির্দেশনা মোবাইল অপারেটরদের প্রধানদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
 
বিদ্যমান করপোরেট সিমগুলোর ক্ষেত্রে এ নির্দেশনা তিন মাসের মধ্যে পালন করতে বলেছে বিটিআরসি।


 
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান, গণমাধ্যমের খবর এবং বিটিআরসি’র নিজস্ব পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে গ্রাহক নিবন্ধন কার্যক্রম প্রচলন পরবর্তী সময়ে ব্যক্তিগত গ্রাহক পর্যায়ে সিম নিবন্ধন বিষয়ক জালিয়াতি ও প্রতারণা প্রায় বন্ধ হয়ে গেলেও করপোরেট গ্রাহকদের ক্ষেত্রে প্রতারণার মাধ্যমে সিম নিবন্ধন, প্রতিস্থাপন এবং এ সব অযাচিত সিম বিভিন্ন অবৈধ কার্যক্রমে ব্যবহার করা হচ্ছে।
 
‘কালোবাজারে বিভিন্ন নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে ইস্যুকৃত এ সব সিম উচ্চমূল্যে জঙ্গি, চাঁদাবাজ, অপহরণকারী, সন্ত্রাসীদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। যার কারণে প্রায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এ ধরনের অযাচিত সিম ব্যবহারেকারীদের সঠিকভাবে শনাক্ত করতে পারে না। এরফলে বিভিন্ন অপরাধের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হচ্ছে। ’
 
নির্দেশনায় বলা হয়, এ সব সিম ভিওআইপি প্রযুক্তি ব্যবহার করে অবৈধ কল টার্মিনেশন করার কাজেও ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে সরকার এ খাত থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হতে বঞ্চিত হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনায় অসাধু রিটেইলার, ডিস্ট্রিবিউটরের পাশপাশি মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধির সরাসরি সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।
 
‘বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে গ্রাহক নিবন্ধন কার্যক্রম চালু করা হলেও করপোরেট গ্রাহক এবং মোবাইল অপারেটরদের কথা চিন্তা করে শুধুমাত্র প্রতি প্রতিষ্ঠানের একজন অনুমোদিত ব্যক্তির লিখিত অনুমোদন সাপেক্ষে নতুন সিম উত্তোলন এবং প্রতিস্থাপন করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। সে অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সবার অধিকতর দায়িত্বশীল আচরণ কাম্য ছিল। সময়ে সময়ে এ সব বিভিন্ন ধরনের জালিয়াতির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব মোবাইল অপরারেটরকেই মৌখিকভাবে অবহিত করে এ বিষয়ে অধিক যত্নবান হওয়ার জন্য কমিশন হতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তবুও শুধুমাত্র কোম্পানির ব্যবসায়িক মুনাফাকে ধর্তব্যে নিয়ে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা তথা অপরাধমূলক কার্যক্রমের সহায়তা করার মতো কর্মকাণ্ডে মোবাইল অপারেটরদের কিছু সংখ্যক প্রতিনিধির সংশ্লিষ্টতা অনভিপ্রেত। এ ধরনের বিশৃঙ্খল অবস্থা নিরসনে কমিশন বদ্ধ পরিকর। ’
 
নির্দেশনায় বলা হয়, এ অবস্থায় এখন হতে করপোরেট গ্রাহকদের কোনো প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে সিম বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কমিশনের নির্ধারিত ফরম (২০১৯১০০০) নির্দেশনা প্রতিপালন করতে হবে। ওই ফরমে উল্লেখিত ধাপ অনুসরণ করে সব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কমিশনে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে।
 
‘উল্লিখিত ফরম অনুযায়ী জমাদানকৃত আবেদন কেবলমাত্র কমিশনের অনুমোদনের পরই অনুমোদিত ব্যক্তির বায়োমেট্রিক্স ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করা সাপেক্ষে অনুমোদিত সিমসমূহ নির্দেশনা অনুযায়ী বাল্ক নিবন্ধন করে উক্ত প্রতিষ্ঠানকে হস্তান্তর করতে হবে। ’
 
‘সব বিদ্যমান করপোরেট গ্রাহকদের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি অনুসরণ করে নমুনা ফরম অনুসারে প্রয়োজনীয় তথ্য আগামী তিন মাসের মধ্যে কমিশন বরাবর পর্যায়ক্রমে পাঠাতে হবে। কমিশন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ সব কার্যক্রম সম্পন্ন করবে। কোনক্রমেই করপোরেট গ্রাহক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেটি নিশ্চিত করতে কমিশন তৎপর থাকবে। ’
 
নির্দেশনায় বলা হয়, করপোরেট সিম উত্তোলন, প্রতিস্থাপন, হস্তান্তর এবং নিস্ক্রিয়করণের ক্ষেত্রে অনুমোদিত ব্যক্তির আঙুলের ছাপ বাধ্যতামূলক করা হলো।
 
সঙ্গত কারণে সশস্ত্র বাহিনী, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থা ওই নির্দেশনার আওতামুক্ত থাকবে বলে নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৯
এমআইএইচ/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।