‘অবৈধভাবে কল আদান-প্রদান, সিম বা রিম নিবন্ধন এবং বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন সম্পর্কিত’ নির্দেশনা সোমবার (০২ এপ্রিল) মোবাইল ফোন অপারেটর প্রধানদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
বিটিআরসি-এর সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সিদ্দিকী স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, টেলিফোন/মোবাইলে হুমকি, চাঁদাদাবি, ভয়ভীতি প্রদর্শন, উত্ত্যক্তকরণ প্রতিরোধে এবং সুশৃঙ্খল ও সুদক্ষ পরিচালনার জন্য লাইসেন্সের শর্ত পালনের মাধ্যমে সিম/রিম নিবন্ধন সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে টেলিযোগাযোগ আইন, ২০০১ এর বিধান অনুযায়ী নির্দেশনাবলী জারি করা হলো।
এতে বলা হয়েছে, বিটিআরসি দেশের প্রত্যেক মোবাইল/টেলিফোন সংযোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে সব গ্রাহকের জন্য সিম/রিম বায়োমেট্রিক নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করেছে। কাজেই প্রত্যেক মোবাইল অপারেটর, সংশ্লিষ্ট টেলিযোগাযোগ অপারেটরকে তার গ্রাহকের সিম/রিম বায়োমেট্রিক নিবন্ধন সম্পন্ন করার ব্যবস্থা চালু রাখতে হবে। এই পদ্ধতিতে সিম/রিম নিবন্ধন নিবন্ধন নিশ্চিত করার দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটর ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট অপারেটরের উপর বর্তাবে।
বিটিআরসি-এর বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন সিস্টেম সম্পর্কিত নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতি ক্ষেত্রে ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কোন সিম রেজিস্ট্রেশন ছাড়া অ্যাক্টিভেশন রি-অ্যাক্টিভেশন ডি-অ্যাক্টিভেশন বা প্রতিস্থাপন বা মালিকানা পরিবর্তন করা যাবে না।
কোনো অবস্থাতেই অসত্য বা মিথ্যা তথ্য দিয়ে সিম বা রিম নিবন্ধন করা যাবে না এবং যথাযথ বায়োমেট্রিক নিবন্ধন ব্যতীত কোনো সিম বিক্রি করা যাবে না। তবে কারিগরি ত্রুটির কারণে ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করা না গেলে গ্রাহককে প্রয়োজনীয় তথ্য সংরক্ষণ সাপেক্ষে নিষ্ক্রিয় সিম প্রদান করা যেতে পারে।
এক্ষেত্রে ওই সিম-রিম পরবর্তীতে যথাযথভাবে বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হওয়ার পর অ্যাক্টিভিশন রি-অ্যাক্টিভেশন ডি-অ্যাক্টিভেশন প্রতিস্থাপন মালিকানা পরিবর্তন করা যেতে পারে।
বায়োমেট্রিক ডিভাইসের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য সেন্ট্রাল বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন প্ল্যাটফর্ম এবং অপারেটরের সিম বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন প্ল্যাটফর্ম ছাড়া অন্য কোনো ডিভাইস বা প্ল্যাটফর্মে সংরক্ষণ করা যাবে না। এই নির্দেশনা লঙ্ঘনের প্রতিক্ষেত্রে অথবা বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশনের সময় এ প্রক্রিয়ার কোনো স্তরে আঙুলের ছাপ বা বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ সংরক্ষণ করা হলে অথবা বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সংরক্ষিত তথ্যের অপব্যবহার করলে তার সকল দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট অপারেটরের উপর বর্তাবে।
এজন্য টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট অপারেটরের প্রশাসনিক জরিমানা আরোপ করা হবে।
কোনো অবস্থাতেই প্রি-অ্যাক্টিভেটেড সিম বা রিম ব্যবহার বা বিতরণ বা পরিবেশন বা ক্রয়-বিক্রয় বা বিক্রির জন্য প্রদর্শন করা যাবে না। এ নির্দেশনা জারির পর থেকে বাজারে ডিস্ট্রিবিউশন হাউজ, রিটেইলার দোকান বা অন্য যেকোনো স্থানে কোনো প্রকার প্রি-অ্যাক্টিভেটেড বা ভুয়াভাবে নিবন্ধিত সংযোগ বা একই নম্বরে একাধিক সিম/রিম সংরক্ষণ করা যাবে না।
প্রি-অ্যাক্টিভেটেড সংযোগ বলতে গ্রাহকের (সর্বশেষ গ্রাহক) কাছে বিক্রির আগে যে কোনোভাবে নিবন্ধিত সংযোগ অথবা চালুকৃত সিম অথবা অনিবন্ধিত চালুকৃত সিম/রিম বোঝাবে।
এ নির্দেশনাবলী জারির পর থেকে বাজারে ডিস্ট্রিবিউশন হাউস, রিটেইলার অন্য যে কোনো স্থানে নিবন্ধিত কিন্তু বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে বাছাই করা নয় অথবা নিবন্ধিত কিন্তু মিথ্যা বা ভুল বা অসত্য তথ্য দিয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে যাচাই করা প্রতিটি সিমের জন্য সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটর বা অন্যান্য সংশ্লিষ্ট অপারেটরকে পাঁচ হাজার টাকা হারে প্রশাসনিক জরিমানা আরোপ করা হবে।
ভিওআইপি প্রযুক্তি ব্যবহার করে অবৈধভাবে কল আদান-প্রদান রোধে অভিযানে জব্দ করা বা অবৈধ কল আদান-প্রদানে ব্যবহৃত প্রতিটি সিমের জন্য সংশ্লিষ্ট অপারেটরকে পাঁচ হাজার টাকা হারে প্রশাসনিক জরিমানা আরোপ করা হবে। এক্ষেত্রে ব্যবহৃত প্রতিটি সিম বা রিমের নিবন্ধনের তারিখ থেকে সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটর কর্তৃক সকল প্রকার রাজস্ব কমিশনের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে।
কমিশন কর্তৃক আরোপিত প্রশাসনিক জরিমানা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধে ব্যর্থ হলে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের বিধান অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট অপারেটর লাইসেন্স বাতিলসহ যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, এর আগে জারি করা এ সংক্রান্ত সকল নির্দেশনা এই নির্দেশনা বলে এর বিধান সাপেক্ষে বহাল থাকবে এবং এই নির্দেশনা বলে আগে জারি করা এ সংক্রান্ত নির্দেশনার অসঙ্গতি থাকলে এই নির্দেশনা চূড়ান্ত হিসেবে গণ্য হবে।
এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও ওই চিঠিতে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৯
এমআইএইচ/এমএ