ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

গণশুনানিতে ভয়েস কল ও ইন্টারনেট সেবার মান নিয়ে অভিযোগ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৬ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৯
গণশুনানিতে ভয়েস কল ও ইন্টারনেট সেবার মান নিয়ে অভিযোগ ‘টেলিযোগাযোগ সেবা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যক্রম’ বিষয়ে গণশুনানি/ছবি: শাকিল

ঢাকা: থ্রিজি-ফোরজিতে ধীরগতি, ভয়েস কল কেটে যাওয়া ও অযাচিত এসএমএস সার্ভিসের নামে টাকা কেটে নেওয়াসহ টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক দুর্বলতার অভিযোগ তুলে গ্রাহকেরা তা সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।

বুধবার (১২ জুন) রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (আইইবি) অডিটরিয়ামে ‘টেলিযোগাযোগ সেবা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যক্রম’ বিষয়ে গণশুনানিতে অংশ নিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
 
গণশুনানি কমিটির সভাপতি ও বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হকের সভাপতিত্বে গণশুনানি পরিচালনা করেন সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক এবিএম হুমায়ুন কবির।


 
প্রশ্নকারী রাজকুমার সাহা জানতে চান, ইন্টারনেটের মূল্য কমানো ও ন্যূনতম মেয়াদ ৮ দিন করা যায় কিনা? জাকির হোসেন নামে একজন গ্রাহক ইন্টারনেটের মূল্য কমানোর দাবি জানান।
 
এ বিষয়ে বিটিআরসির এবিএম হুমায়ুন কবির বলেন, অপারেটররা আশা করি বিবেচনায় নেবেন। ইন্টারনেটের মূল্য কমানো নিয়ে পর্যবেক্ষণে আছে। পর্যবেক্ষণ শেষে মূল্য ও সীমা নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
 
আব্দুস সালাম নামে একজন গ্রাহক অযাচিত নম্বর থেকে কল আসা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে হুমায়ুন কবির বলেন, ডিএনডি (ডু নট ডিস্ট্রাব) অপশন কাজ করছে, এছাড়া অপারেটররাও ব্যবস্থা নেবে।
 
ডি-অ্যাক্টিভেটেড নম্বর দিয়ে ইমো, ভাইবারের মতো অ্যাপস ব্যবহার বন্ধের দাবি জানান জাহিদুল ইসলাম এবং ইমরান আহমেদ নামে গ্রাহক। এ বিষয়ে হুমায়ুন কবির বলেন, বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে কাজ করছে আইটিইউ, আমরাও কাজ করছি। আশা করি দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে।
 
রাষ্ট্রায়ত্ত অপারেটর টেলিটকের সেবার মান নিয়ে এক গ্রাহকের প্রশ্নের জবাবে বিটিআরসির একজন কর্মকর্তা বলেন, টেলিটক সরকারি প্রতিষ্ঠান। সৌদি টেলিকম আসছে, টেলিটক যাতে আরো উন্নতর হয়।  
 
যত্রতত্র টাওয়ার বসানো নিয়ে টাওয়ার শেয়ারিং বিষয়ে এক গ্রাহকের প্রশ্নে বিটিআরসির মহাপরিচালক মাহফুজুল করিম মজুমদার বলেন, টাওয়ারের রেডিয়েশনের যে ফলাফল পেয়েছি তা আন্তর্জাতিকমানের চেয়ে অনেক নিচে। আমাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। টাওয়ারের চেয়ে মোবাইল ফোনের রেডিয়েশনের ঝুঁকিটা বেশি, এটাও মাথায় রাখতে হবে। টাওয়ার শেয়ারিং নিয়ে অপারেটর ও টাওয়ারকো কাজ করছে।
 
মহাপরিচালক শহিদুজ্জামান বলেন, টাওয়ারের জন্য ক্ষতি হচ্ছে- এটা অমূলক ধারণা। যদি ক্ষতি হতো তাহলে উন্নত দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহার করত না। সারা দেশে বিশেষ করে স্কুল-কলেজ ও জনবহুল এলাকায় রেডিয়েশন পরীক্ষা করে হাইকোর্টকে জানাবো।
 
আব্দুস সালাম নামে এক গ্রাহক অভিযোগ করেন, তিনি প্রতি সেকেন্ড পালসের প্যাকেজ কিনে কথা বললেও অতিরিক্ত টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে।
 
এ বিষয়ে মহাপরিচালক শহিদুজ্জামান বলেন, সুস্পস্ট অভিযোগ দিন। যথাযথ ব্যবস্থা নেবো। অপারেটররাও সতর্ক থাকবেন, ভবিষতে যাতে এ ধরনের অভিযোগ না আসে।
 
তিনি বলেন, আমরা সেন্ট্রাল মনিটরিং সিস্টেম চালু করতে যাচ্ছি। এ বছরেই চালু করবো। এ সিস্টেম চালু হলে অভিযোগ করলে পরীক্ষা করে দেখবো কোনো ধরনের ফাঁকি দেওয়া হয়েছে কিনা এবং করে থাকলে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারবো।
 
বিটিআরসির হুমায়ুন কবির জানান, শুনানিতে প্রায় ২২টি প্রশ্ন এসেছে। অভিযোগের সমাধানের তথ্য আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে।
 
বিটিআরসির চেয়ারম্যান বলেন, অভিযোগগুলো নিশ্চয়ই কমিশন সমাধান করবে। কল সেন্টার সপ্তাহে ৫ দিন ছিল। এখন সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা হবে। ফেসবুকসহ ওয়েবসাইটে অভিযোগ নেওয়া হবে।
 
‘অপারেটরের যারা আছেন, কী কী অভিযোগ এসেছে তা শুনেছেন, কী কী সমস্যা? আমরা এটুকু শুনেছি আমরা আপনাদের বেশি বেশি সমর্থন করি! সত্যিকার অর্থে বিটিআরসি কখনও কাউকে সমর্থন করে না। আইন যেভাবে আছে আমরা সেভাবে আচরণ করি। ’
 
মোবাইল টাওয়ারের রেডিয়েশনের বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, হাইকোর্ট যে নির্দেশনা দিয়েছে আমরা খুবই তৎপর। আমরা টেস্ট করেছি, রেডিয়েশন নিয়ে ভয়ের কোনো কারণ নেই।
 
আগামী ছয় মাসের মধ্যে ফাইভ-জির জরিপ কাজ শেষ করা হবে বলে জানান একজন কর্মকর্তা।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫২ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৯
এমআইএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।