ফাইবার অপটিকস, ই-কমার্স, এনটিটিএনসহ বিভিন্ন বিষয়ে কর মওকুফ ও কমানোসহ টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রজেক্টে ২শ কোটি টাকা বরাদ্দের দাবিরগুলো মধ্যে অন্যতম।
রোববার (১৬ জুন) রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের দাবি দাওয়া তুলে ধরেন এই খাত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলো।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) এবং ইন্টারনেট সার্ভিসেস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপি এবি) শীর্ষ নেতারা অংশ নেন।
তবে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও সংবাদ সম্মেলনে তাদের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর।
তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে বাজেট নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। আইসিটিখাতে আগের থেকে বরাদ্দ বেড়েছে, প্রথমবারের মতো স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের জন্য ১শ কোটি টাকার বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এগুলো প্রশংসার দাবিদার। আমরা কৃতজ্ঞ এবং সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। তবে আইসিটিখাতের কিছু বিষয় নিয়ে আমাদের আপত্তি আছে। কিছু জায়গায় নতুন করে ভ্যাট ও অন্যান্য ট্যাক্স আরোপের সুপারিশ করা হয়েছে। আবার কিছু জায়গায় আগের থেকে করের হার বাড়ানো হয়েছে। সেগুলোর পরিবর্তন চাই আমরা।
টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রজেক্টের প্রসঙ্গে বেসিস সভাপতি বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা এখন অনেক বড় বড় প্রজেক্টে কাজ করেছে। এগুলোর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে অনুন্নত দেশগুলোকে আইটি সাহায্য দিতে পারে বাংলাদেশ। যেখানে আমাদের লোকেরাই কাজ করবে। এটা করতে পারলে বিশ্ব দরবারে আমাদের আইটি আইসিটি খাতের বড় একটা এক্সপোজার হবে। এজন্য ৫শ কোটি টাকার অর্থ বরাদ্দ চেয়ছিলাম আমরা সরকারের কাছে। বাজেটে সে ধরনের কিছু পায়নি। আমরা চাই সরকার এইখাতে বরাদ্দের।
এছাড়াও আইটিইএস’র সংজ্ঞা নতুন করে সাজিয়ে আরও কিছু খাত এতে সংযুক্ত করার আহ্বান জানান তিনি।
অন্যদিকে ২২ ইঞ্চি পর্যন্ত কম্পিউটার মনিটর মূসক মুক্ত রাখার ক্ষেত্রে মনিটরের আকার বাড়ানোর দাবি জানান বিসিএস’র সভাপতি শাহীদ উল মুনির।
তিনি বলেন, বিশ্বে এখন আর কোনো কোম্পানি ২২ ইঞ্চি মনিটর উৎপাদন করছে না। ন্যূনতম আকারের মনিটর হবে ২৪ ইঞ্চি। তাই মূসক মুক্ত আওতায় ২৪ ইঞ্চি মনিটর সংযুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি আমরা।
পাশাপাশি ফাইবার অপটিক ক্যাবল’র ওপর ৫ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি এবং এনটিটিএন সংযোগের উপর থেকে ৫ শতাংশ মূসক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে আইএসপিএবি।
সংগঠনটির সভাপতি এম এ হাকিম বলেন, ফাইবার অপটিক এবং এনটিটিএন’র মাধ্যমে ডাটা ট্রান্সমিশন খরচ এমনিতেই অনেক বেশি। যে কারণে ঢাকার থেকে বাইরের অঞ্চলগুলোতে ইন্টারনেটের দাম বেশি হয়। তার ওপর এমন ভ্যাট ও কর আরোপ ব্রডব্যান্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়াতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে। অথচ ব্রডব্যান্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০ শতাংশ বাড়ালে জিডিপিতে তা ১ শতাংশের বেশি অবদান রাখে। তাই সরকারের এই বিষয়টি পুনঃবিবেচনা করা উচিত। আর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছ থেকে হয়রানি ছাড়াই কর মওকুফ’র সনদ পেতে চায় বাক্য ও বেসিস।
এছাড়াও আইসিটিখাতে দীর্ঘমেয়াদী কর নীতি প্রণয়নেরও দাবি জানান ব্যবসায়ী নেতারা।
এসময় এক প্রশ্নের জবাবে বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, সরকার আমাদের দাবিগুলো বিবেচনা করবে এমনটাই আশা আমাদের। আমাদের প্রতিমন্ত্রীর জুনাইদ আহমেদ পলক ওপর আমাদের আস্থা আছে। তার সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আমাদের দাবিগুলো সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করার আশ্বাস তিনি দিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২১ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৯
এসএইচএস/এএটি