তিনি বলেন, ক্যাবল অপারেটরদের কাছে টেলিভিশন চ্যানেলগুলো অনেক ক্ষেত্রেই জিম্মি থাকতো। কয়েক মাসের মধ্যে সিরিয়াল মেনে টেলিভিশন চ্যানেলগুলো প্রদর্শন করা হচ্ছে।
‘বিশ্ব টেলিভিশন দিবস’ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বেলা ১২টার দিকে তেজগাঁও বেঙ্গল স্টুডিওতে ‘কেমন আছে দেশের টেলিভিশন’ শিরোনামে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা উল্লেখ করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের টেলিভিশনগুলো বিজ্ঞাপনের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু বাংলাদেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন বিদেশি টিভি চ্যানেলে চলে যেত। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন বন্ধ করেছি। আইন অনুযায়ী বিদেশি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো আমাদের দেশে প্রচার করতে পারে না।
হাছান মাহমুদ বলেন, দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতার ফলে বিজ্ঞাপনের দাম কমেছে। মিডিয়া এখন বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে যাওয়ায় বিজ্ঞাপনেও ভাগ হয়ে গেছে। বিজ্ঞাপন সোশ্যাল মিডিয়াতেও চলে যাচ্ছে। সেইসঙ্গে বিজ্ঞাপন আবার বিদেশে চলে যায়। সেখানে টেলিভিশন চ্যানেলগুলো চালানো খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে।
চলমান দেশের টেলিভিশন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেন। লাখ লাখ মানুষ ইউটিউব ও নেটফ্লিক্স দেখে। এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিজ্ঞাপনের রেট অনেক কম। সেইসঙ্গে দর্শকও অনেক বেশি। এখান থেকে সরকার রাজস্ব পাচ্ছে না। এরই মধ্যে টেলিকম মন্ত্রণালয় ফেসবুকের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। ফেসবুক বাংলাদেশে অফিস চালু করার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।
সংবাদ মাধ্যমে চাকরিরতদের সুরক্ষা প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, টেলিভিশনে যারা কাজ করেন তাদের চাকরির কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাদের চাকরির আইনি সুরক্ষা দেওয়া প্রয়োজন। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সবার সঙ্গে আলোচনা টেলিভিশন কর্মীদের আইনি সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারবো।
চ্যানেলগুলোর গুরুত্ব উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, টেলিভিশনগুলো এমন একটি গণমাধ্যম, যা পুরো জনগোষ্ঠীর ওপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। এ গণমাধ্যমকে তো আমরা জাতি গঠনে কাজে লাগাতে পারি। সুতরাং জাতি গঠনে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মেধা-মনন বৃত্তির জন্য আমরা এ মাধ্যমকে ব্যবহার করতে পারি। নতুন প্রজন্মের মধ্যে দেশাত্মবোধ, মমত্ববোধ ও মূল্যবোধ এগুলো আমরা টেলিভিশনের মাধ্যমে উন্মেষ ঘটাতে পারি।
আলোচনা সভার শুরুতেই মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন অ্যান্ড ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শফিউল আলম ভূঁইয়া।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, একাত্তর টেলিভিশনের এডিটর ইন চিফ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল হক বাবু, আরটিভির প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা সৈয়দ আশিক রহমান, নিউজ টোয়েন্টিফোরের হেড অব নিউজ রাহুল রাহা, বেসরকারি টেলিভিশন সাংবাদিকদের সংগঠন ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) চেয়ারম্যান রেজওয়ানুল হক রাজা, সদস্য সচিব শাকিল আহমেদ, জিটিভির প্রধান নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান পরিকল্পনা সম্পাদক নূর সাফা জুলহাস প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৯
আরকেআর/ওএইচ/