ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারে সনদ পাবে ১০ লাখ শিশু

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২০
নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারে সনদ পাবে ১০ লাখ শিশু

ঢাকা: যাচাই করে সারাদেশের ১০ লাখ স্কুল শিক্ষার্থীকে নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার সংক্রান্ত সনদ দেওয়া হবে। আগামী এক বছরের মধ্যে ইউনিসেফের সহায়তায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ শিশুদের এ সনদ দেবে।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁও এর আইসিটি টাওয়ারে অনলাইন সেফটি ফর চিলড্রেন সার্টিফিকেশন কোর্সের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। এসময় প্যানেল আলোচনা সভার আয়োজন করে কর্তৃপক্ষ।

এটিএন নিউজের হেড অব নিউজ মুন্নী সাহার সঞ্চালনায় এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম, ফেসবুকের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার পলিসি প্রোগ্রাম প্রধান শেলী ঠকরাল এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি তোমো হোজুমি।

‘নিরাপদ ইন্টারনেট দিবস: ভালো ইন্টারনেটের জন্য একত্রিত হই’ শীর্ষক এই প্যানেল আলোচনায় জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, এক বছর সময়ের মধ্যে আমরা ১০ লাখ স্কুলগামী শিশুকে নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারের সনদ দেওয়ার মাধ্যমে ইতিহাস তৈরি করব। একইসঙ্গে লুকায়িত অনলাইন ঝুঁকির বিরুদ্ধে আমাদের শিশুদের অতি প্রয়োজনীয় সুরক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে দ্রুত অগ্রগতি সাধন করব। অনলাইন ও অফলাইন দুনিয়া আলাদা। এখানে অনেক ঝুঁকি থাকবে। বিশেষ করে শিশুরা অনেক ঝুঁকিতে আছে। এটা আমাদের বড়দের দায়িত্ব, নিজেরা সচেতন হয়ে ওদের সচেতন করা। এর জন্য অভিভাবকদের শিশুদের ইন্টারনেট ব্যবহারে আরও সতর্ক হতে হবে।

অনুষ্ঠানে আগত শিশু শিক্ষার্থীদের করা প্রশ্নের জবাবে ফেসবুক প্রতিনিধি শেলী ঠকরাল বলেন, ফেসবুকের পলিসি অনুযায়ী, ১৩ বছর বয়স হলেই এখানে একাউন্ট খোলা যায়। একাউন্ট খুলতে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র বা অন্য কোনো দলিলের প্রয়োজন হয় না। তবে অনেক সময় ফেসবুক আইডি নিয়ে রিপোর্ট হলে বা আমাদের সিস্টেমে সন্দেহজনক মনে হলে আমরা তখন বিভিন্ন ধরনের ফটো আইডি চাই। কাজেই একাউন্ট খুলতে হলে নূন্যতম ১৮ বছর বয়স বা আইডি কার্ডের নিয়ম চালুর পরিকল্পনা অন্তত এখনই ফেসবুকের নেই।

অন্যদিকে, পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, শুধু ডিএমপিতেই এখন প্রতিদিন গড়ে ১০টি অপরাধের অভিযোগ আসে, যা ফেসবুক সম্পর্কিত। আমাদের ধারণা এটা সব অপরাধের ১০ ভাগ। তাহলে ঢাকাসহ পুরো দেশে এমন কত অপরাধ হচ্ছে। আমাদের সবাইকে সচেতন ও সতর্ক হতে হবে।

ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি তোমো হোজুমি বলেন, সাইবার প্রযুক্তির ঝুঁকি ও সম্ভাবনাগুলো পরিমাপ করতে এবং ঝুঁকিগুলো কমিয়ে আনতে আমাদের সম্মিলিত প্রজ্ঞা ও শক্তি ব্যবহারের সময় এসেছে। শিশুদের ইন্টারনেট ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া কোনো সমাধান হতে পারে না। কারণ এটি একইসঙ্গে বিশাল জ্ঞান ও তথ্যের উৎস হিসেবে কাজ করে। যা আজকের এই প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে শিশুদের জন্য একান্ত প্রয়োজন।

এসময় ইউনিসেফ এক তথ্য উপস্থাপনায় জানায়, ২০১৯ সালে ইউনিসেফের একটি জরিপ পরিচালিত হয়েছিল। যেখানে সাইবার নিপীড়ন বাংলাদেশে অন্যতম সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হয়। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের প্রায় ৩২ শতাংশ তাদের বাহ্যিক অবয়ব, পরীক্ষার ফল, ধর্ম ইত্যাদি কারণে অনলাইনে নিপীড়নের শিকার হওয়ার কথা জানায়।

বাংলাদেশে শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা’ শীর্ষক সমীক্ষার অংশ হিসেবে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১০ থেকে ১৫ বছর বয়সী এক হাজার ২৮১ জন শিশুর ওপর এই জরিপ চালানো হয়।

এর ফলাফল অনুযায়ী, প্রায় ২৫ শতাংশ শিশু তাদের বয়স ১১ বছর হওয়ার আগেই ডিজিটাল বিশ্বে প্রবেশ করতে শুরু করে। যদিও বেশি বয়সী শিশুরা কম বয়সী শিশুদের চেয়ে অধিক মাত্রায় সাইবার নিপীড়নের শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। তবে সার্বিকভাবে সব শিশুরাই ক্ষতিকর কনটেন্ট, যৌন নিগ্রহ ও শোষণ এবং সাইবার নিপীড়ন আশঙ্কায় রয়েছে। আর এ কারণে অনলাইনে নিরাপদে থাকার দক্ষতা অর্জন সব শিশুর জন্যই অপরিহার্য।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক এবং সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২০
এসএইচএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।