ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

মুজিববর্ষে আইসিটি বিভাগের হান্ড্রেড প্লাস স্ট্র্যাটেজি

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২০
মুজিববর্ষে আইসিটি বিভাগের হান্ড্রেড প্লাস স্ট্র্যাটেজি

ঢাকা: বহুল প্রতীক্ষার পর শুরু হলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতা। পুরো বছরব্যাপী সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এ বাঙালির জন্মবার্ষিকীকে সামনে রেখে হান্ড্রেড প্লাস স্ট্র্যাটেজি হাতে নিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ। মোট ২৯টি উদ্যোগের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে হান্ড্রেড প্লাস স্ট্র্যাটেজি।

আইসিটি বিভাগের বিভিন্ন দপ্তর ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৭ মার্চ ২০২০ থেকে শুরু হয়ে ১৬ মার্চ ২০২১ এরমধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে এসব উদ্যোগ। পুরো দেশব্যাপী এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।

এর ফলে হান্ড্রেড প্লাস স্ট্র্যাটেজির সুফল পাবে দেশের সব পর্যায়ের জনগণ। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের পেশাজীবী ও প্রতিষ্ঠানকে বিবেচনায় রেখে সাজানো হয়েছে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ।
 
এসব উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে ২০১৯-২০ অর্থবছরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের (এডিপি) শতভাগ বাস্তবায়ন। তথ্য প্রযুক্তি পেশাজীবী ও যুব সমাজের জন্য রাখা হয়েছে ১০০ হাজারের অধিক অর্থ্যাৎ এক লাখের অধিক তথ্য প্রযুক্তিভিত্তিক মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিকল্পনা। এছাড়া থাকছে শতাধিক শ্রেষ্ঠ আইসিটি প্রতিষ্ঠানকে মূলধন দেওয়া। ১০০ মিলিয়নের অধিক জনগণকে মুজিববর্ষে আনা হবে ইন্টারনেট সেবার আওতায়। থানা পর্যায়সহ তৃণমূল পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে আইসিটি বিভাগের।
 
এছাড়া রয়েছে পরিচয় অ্যাপের মাধ্যমে শতাধিক মিলিয়ন ভোটারের জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ১০০ হাজারের অধিক অর্থাৎ লক্ষাধিক শিক্ষার্থীদের শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের লক্ষাধিক শিক্ষার্থীদের প্রোগ্রামিং প্রশিক্ষণ, শতাধিক সাধারণ বিদ্যালয়কে স্মার্ট বিদ্যালয়ে রূপান্তর, শতাধিক গ্রামে শহরের সুবিধা চালুকরণের পরিকল্পনা।
 
আইসিটি খাতে কর্মসংস্থান ও ব্যবসা উদ্যোগ নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে হান্ড্রেড প্লাস স্ট্র্যাটেজিতে। এরমধ্যে রয়েছে লক্ষাধিক শিক্ষার্থী, যুবক ও সাধারণ জনগণকে আইসিটি বিষয়ক ভ্রাম্যমাণ প্রশিক্ষণ, শতাধিক স্টার্টাপের জন্য ইনোভেশন ফান্ডিং, দেশের বিভিন্ন সফটওয়্যার এবং হাইটেক পার্কগুলোতে শতাধিক আইটি কোম্পানিকে স্থান বরাদ্দ দেওয়া।    
 
অন্য উদ্যোগের মধ্যে আরও রয়েছে লক্ষাধিক পুলিশ সদস্যকে ইন্টারনেট সুবিধা দেওয়া, বিভিন্ন পর্যায়ের আইসিটি উদ্যোক্তা এবং যুবকদের ১০০ এর অধিক ব্যাচে আইটি বা আইটিইএস বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেওয়া ও দুর্গম ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ডে ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়া। মুজিববর্ষে আইটি ও আইটিইএস খাতে শতাধিক কোটি টাকা রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রাও নিয়েছে আইসিটি বিভাগ।
 
শহর ও গ্রামে বিভিন্ন পর্যায়ের নাগরিক সেবাকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করেছে আইসিটি বিভাগ। এসব পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে আইসিটির মাধ্যমে বিভিন্ন পৌরসভায় লক্ষাধিক নাগরিকদের সেবা দেওয়া, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের লক্ষাধিক ই-নথি কার্যক্রম সম্পাদন, শতাধিক সেবাকে ডিজিটালাইজ করা, আরও শতাধিক সেবাকে নাগরিকদের জন্য সহজ করা, লক্ষাধিক নাগরিককে ই-মিউটেশনের সুযোগ করে দেওয়া। এছাড়া এ বছর ১০০ এর অধিক নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য চেষ্টা চালাবে আইসিটি বিভাগ।
 
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে কেন্দ্র করেও পরিকল্পনা রয়েছে তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের। ১০০ লাখের বেশি অর্থ্যাৎ এক কোটির বেশি মানুষকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সংস্পর্শে আনা, শতাধিক অডিও ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট তৈরি ও প্রকাশ করা এবং লক্ষাধিক সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক ও উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণের লক্ষ্যমাত্রাও রয়েছে এ পরিকল্পনায়।
 
পাশাপাশি জাতীয় তথ্য বাতায়নে লক্ষাধিক কনটেন্ট প্রকাশ, শিক্ষক বাতায়নে ১০ হাজার শিক্ষকের সংযোজন এবং সর্বশেষ উদ্যোগ পরিকল্পনা হিসেবে রয়েছে জেলা ব্র্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে লক্ষাধিক পর্যটককের সংযোজন।
 
আইসিটি বিভাগের এ হান্ড্রেড প্লাস স্ট্র্যাটেজি নিয়ে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ ইতোমধ্যেই বিভিন্ন উদ্যোগ ও কার্যক্রমের পরিকল্পনা গ্রহণ ও সেগুলোর বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগও গ্রহণ করেছে বেশ কিছু উদ্যোগ ও কার্যক্রম। এসব কার্যক্রমের মধ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্যোগ হচ্ছে হান্ড্রেড প্লাস স্ট্র্যাটেজি। বিভিন্ন ধরনের সেবা আমরা এ পরিকল্পনায় রেখেছি। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আইসিটি বিভাগের প্রতিটি কর্মী এ এক বছরে অতিরিক্ত ১০০ ঘণ্টা বেশি কাজ করবেন। যেমন প্রতিদিন এক ঘণ্টা আগে অফিসে আসবেন এবং এক ঘণ্টা পরে অফিস থেকে বের হবেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধুই একজন রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন না বরং একজন স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন। তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে এখন কাজ করে যাচ্ছেন তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর দেশটাকে ডিজিটাল করার যে স্বপ্ন তিনি দেখেছেন সেখানে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তার উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। এ সবকিছুতে আমরা আমাদের বিভাগের ক্ষুদ্র কিছু অবদান রাখতে চাই, যার সুফল ভোগ করবে এ দেশ ও দেশের জনগণ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১১০২ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২০
এসএইচএস/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।