তথ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিনোদনসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করে এসব প্ল্যাটফর্মে কনটেন্ট প্রকাশ করা হবে।
সোমবার (৩০ মার্চ) সরাসরি ভিডিও সংবাদ সম্মেলনে এসব প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনভিত্তিক এই প্ল্যাটফর্মগুলো হলো- লাইভ করোনা টেস্ট ডটকম, করোনা অ্যাকশন বট (ক্যাব), কল ফর ন্যাশন ডটকম, প্রবাসী হেলপ লাইন ডটকম এবং স্টার্টআপ ডট গভ ডট বিডি। এরমধ্যে আবার স্টার্টআপ ডট গভ ডট বিডি প্ল্যাটফর্মে ১৭টি ভিন্ন এবং আলাদা প্ল্যাটফর্মও রয়েছে।
স্টার্টআপ বাংলাদেশের তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন প্রযুক্তি কর্মজীবী, প্রযুক্তি প্রকৌশলী এবং উদ্যোক্তারা এসব প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছেন।
লাইভ করোনা টেস্ট ডটকম
ওয়েব অ্যাপভিত্তিক এই প্ল্যাটফর্মে (livecoronatest.com) প্রবেশ করে একজন ব্যক্তি জানতে পারবেন তিনি কতোটা করোনা ঝুঁকিতে আছেন। বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নের উত্তর এবং তথ্য প্রদান করে তিনি তার সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে পারবেন। আবার বিভিন্ন নাগরিকের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষও পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হতে পারবে।
করোনা অ্যাকশন বট
হেডলেস স্টার্টআপ এই করোনা অ্যাকশন বট প্ল্যাটফর্মটি ডেভেলপ করে। এটি মূলত একটি স্বয়ংক্রিয় বার্তা আদান-প্রদান প্রযুক্তি বা চ্যাটিং অ্যাপ্লিকেশন। এটিকে যুক্ত করা হয়েছে আইসিটি বিভাগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজের সঙ্গে। এর ফলে পেজটিতে আসা কোনো ভিজিটর মেসেজ বাটনে ক্লিক করলেই তার সামনে করোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য চলে আসবে। প্রথম সাধারণ কিছু তথ্য আসবে এবং একইসঙ্গে আরও বিভিন্ন বিষয়ে জানার মেনু চলে আসবে। একেকটি মেন্যুতে ক্লিক করার সঙ্গে সঙ্গে করোনা সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ভিজিটরের সামনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে আসবে। ভিজিটর কোনো প্রশ্ন করলে সেটিরও সম্ভাব্য উত্তর চলে আসবে। ক্যাবে একটি কুইজ পরীক্ষারও ব্যবস্থা আছে। এই কুইজে অংশ নিয়ে একজন ব্যক্তি নিজেই জানতে পারবেন, তিনি করোনা সচেতনতা সম্পর্কে কতটুকু জানেন।
কল ফর ন্যাশন ডটকম
Callfornation.com এই প্ল্যাটফর্মে মূলত ব্যবসা, স্বাস্থ্য, বিনোদন এবং লজিস্টিক সংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা ও সমস্যার সমাধান নিয়ে যুক্ত হতে পারবেন উদ্যোক্তারা। আইসিটি বিভাগের মোবাইল গেমস অ্যান্ড অ্যাপ্লিকেশন প্রকল্পের আওতায় এই ন্যাশনাল প্ল্যাটফর্ম ডেভেলপ করা হয়েছে। এতে নতুন নতুন আইডিয়া, পণ্য ও সেবা নিয়ে আসতে পারবেন বিজ্ঞানী, গবেষক এবং প্রযুক্তিগত সফটওয়্যার-হার্ডওয়্যার খাত সংশ্লিষ্টরা। মূলত করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থার উদ্যোগ একটি প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসার উদ্দেশ্য নিয়েই তৈরি করা হয়েছে কল ফর ন্যাশন ডটকম।
এই প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যারা নিজেদের পণ্য, সেবা বা আইডিয়া নিয়ে যুক্ত হতে আগ্রহী তাদের জন্য আর্থিক পুরস্কারসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা রাখছে আইসিটি বিভাগ। এতে নিবন্ধনের সময়সীমা শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) থেকে। সফটওয়্যার জনিত উদ্ভাবনের জন্য আবেদন জমা দেওয়া যাবে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত এবং ভিডিওসহ অন্যান্য প্রযুক্তিগত আবেদন জমা দেওয়া যাবে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত। ১৫ এপ্রিল বিচারক প্যানেল তাদের মতামত জানাবেন। আর ১৭ এপ্রিল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।
প্রবাসী হেলপ লাইন ডটকম
Probashihelpline.com এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিদেশে অবস্থান করা বাংলাদেশি প্রবাসীরা করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ধরনের তথ্য ও সেবা পাবেন। বিশেষ করে প্রবাসীরা যে দেশে বা স্থানে অবস্থান করছেন, সেখানকার করোনা বিষয়ক জরুরি হটলাইন নম্বর পাবেন তারা। এছাড়াও সেই স্থানের নিকটবর্তী বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগের জরুরি নম্বরও পাবেন প্রবাসীরা।
স্টার্টআপ বাংলাদেশ ডট গভ ডট বিডি
Startupbangladesh.gov.bd এই প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ১৭ ধরনের ইনোভেটিভ ইনিশিয়েটিভ রাখা হয়েছে। স্টার্টআপ বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন স্টার্টআপ এসব ইনোভেশনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এরমধ্যে আছে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ব্যবসা, সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং যোগাযোগ সম্পর্কিত উদ্ভাবন।
এসব পদক্ষেপ সম্পর্কে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আমাদের এই দুর্যোগকালীন সময়ে অনেকেই অনেক ধরনের সমাধান নিয়ে আসছেন। আমরাও আইসিটি বিভাগ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছি। এগুলোকেই একটি প্ল্যাটফর্মের মধ্যে নিয়ে আসা, সমন্বয়ের মধ্যে নিয়ে আসার উদ্দেশ্য থেকে আমরা এসব প্ল্যাটফর্ম চালু করলাম।
‘আমাদের উদ্দেশ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সবাইকে সচেতন করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের উদ্দেশে বলেছেন, আমরা করোনা যুদ্ধ করছি। এই যুদ্ধে আমাদের কাজ হচ্ছে ঘরে থাকা। আর এই ঘরে থাকার সময়ে জনগণের জন্য শিক্ষা, বিনোদন, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, তথ্যসহ বিভিন্ন ধরনের সেবা আমরা প্রযুক্তির মাধ্যমে দেওয়ার চেষ্টা করছি।
এসময় প্ল্যাটফর্মগুলোতে নাগরিকদের দেওয়া তথ্যের নিরাপত্তা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে পলক বলেন, নাগরিকদের তথ্য যেন সুরক্ষিত থাকে, নিরাপদে থাকে, সেই বিষয়ে আমরা সচেতন আছি; বারবার চেক করছি। যে-ই একটা আইডিয়া নিয়ে আসছেন না কেন, সেখানে যেন তথ্যগত নিরাপত্তা থাকে আমরা দেখছি। এরজন্য আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন অংশীদারদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক আলোচনা করছি। যেখানে সুনির্দিষ্ট আইন আছে, সেখানে প্রয়োগ করছি। যেখানে নেই সেখানে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করছি।
সরাসরি ভিডিও সংবাদ সম্মেলনে আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলমসহ বিভাগ এবং এর আওতাধীন বিভিন্ন প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১১ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২০
এসএইচএস/টিএ