ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

করোনার মধ্যে ৩ মাসে ২৫.৭ বিলিয়ন ডলার আয় হুয়াওয়ের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২০
করোনার মধ্যে ৩ মাসে ২৫.৭ বিলিয়ন ডলার আয় হুয়াওয়ের হুয়াওয়ের লোগো

ঢাকা: করোনা ভাইরাস মহামারিসহ নানান প্রতিকূলতার মধ্যেও গত তিন মাসে প্রায় ২৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে শীর্ষস্থানীয় আইসিটি সরঞ্জাম সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি।

আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে তাদের নিট মুনাফার হার প্রায় ৭ দশমিক ৩ শতাংশ।

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনা ভাইরাস থেকে নিজেদের কর্মীদের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিয়েছে হুয়াওয়ে।

বর্তমান অবস্থায় বড় ঝুঁকিগুলো চিহ্নিত করে উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। বিপর্যস্ত এ সময়ের মধ্যেও হুয়াওয়ের ব্যবসা আগের মতোই চলছে এবং বছরের প্রথম প্রান্তিকে আশানুরূপ মুনাফা অর্জিত হয়েছে।

সংকটপূর্ণ এ সময়ে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে ‘নেটওয়ার্ক’ অনেকটা প্রাণস্বরূপ। কাজেই এ নেটওয়ার্ক স্বাভাবিক রাখাটাই হুয়াওয়ের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নির্বিঘ্ন নেটওয়ার্ক সরবরাহে নিজেদের সাধ্যের সবটুকু দিয়ে ক্যারিয়ারগুলোকে সাহায্য করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা অবস্থায় নিজেদের দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে মানুষ এখন টেলিযোগাযোগ, অনলাইন শিক্ষা পদ্ধতি এবং ই-কমার্সের প্রতি বেশি ঝুঁকছে। এতে নেটওয়ার্কের চাহিদাও বেড়েছে। ক্রমবর্ধমান এ চাহিদা পূরণে ক্যারিয়ারগুলোর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে হুয়াওয়ে।

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরুতেই হুয়াওয়ে এবং এর অংশীদাররা দ্রুততার সঙ্গে ৫জি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নির্ভর অনেকগুলো মেডিক্যাল অ্যাপ্লিকেশন চালু করেছে। যোগাযোগ প্রযুক্তিতে নিজেদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করে করোনা ভাইরাস মোকাবিলা এবং জীবন রক্ষায় প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এআই নির্ভর করোনা ডায়াগনোসিস সমাধানের মাধ্যমে সিটি স্ক্যান পর্যালোচনার সময় ১২ মিনিট থেকে ২ মিনিটে নেমে এসেছে, যা করোনা ভাইরাস চিকিৎসায় ডাক্তারদের দারুণ সাহায্য করছে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৫জি নির্ভর ‘ভিডিও পরামর্শ’’ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি করোনা শনাক্তকরণ ও গুরুতর রোগীর চিকিৎসা দেওয়ার দক্ষতা বাড়িয়েছে। এআই নির্ভর থার্মাল ইমেজিং যন্ত্র সন্দেহভাজন রোগীর শরীরের তাপমাত্রা মাপতে পারছে, যা করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এছাড়া আক্রান্ত বিভিন্ন দেশ এবং প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজন মতো মাস্ক, টেস্ট কিটসহ অন্য দরকারি জিনিসপত্র দিতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে হুয়াওয়ে।

করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপিন্স, সিঙ্গাপুর, ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, লাওসসহ এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চল এবং আসিয়ানভুক্ত অনেক দেশের পাশে দাঁড়িয়েছে হুয়াওয়ে। অভিনব প্রযুক্তি সহায়তার মাধ্যমে যোগাযোগ ঝুঁকি চিহ্নিত করার পাশাপাশি নির্বিঘ্ন সংযোগসহ অন্য দরকারি সেবা দিতে সর্বোচ্চ সহায়তা করছে প্রতিষ্ঠানটি।

করোনা ভাইরাস চিকিৎসায় সম্প্রতি ব্যাংককের সিরিরাজ হাসপাতালে এআই নির্ভর সমাধান চালু করা হয়েছে, যেটি দিয়েছে থাইল্যান্ডের ডিজিটাল অর্থনীতি ও সমাজ মন্ত্রণালয় এবং হুয়াওয়ে।

৫জি নেটওয়ার্ক নির্ভর এআই প্রযুক্তি রোগ নির্ণয়ের সক্ষমতা ও কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করেছে। এতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ২০ হাজার সিটি স্ক্যানের ফলাফল বিশ্লেষণ করা যায়। এছাড়া বিদ্যমান ডেটাবেজের নমুনার সঙ্গে তুলনা করে এটি সহজেই রোগ শনাক্ত করতে পারে। উপরন্তু এর টেলিকনসালটেশন সুবিধা স্বাস্থ্যকর্মীদের সংক্রমণ ঝুঁকি কমানোর পাশাপাশি বিভিন্ন প্রান্তে রোগ নিয়ন্ত্রণ সক্ষমতা গড়ে তোলার ঝামেলা থেকেও মুক্তি দেয়।

হুয়াওয়ের রোটেটিং চেয়ারম্যান এরিক জু বলেন, আমরা আশা করি, বৈশ্বিক এ মহামারি শিগগিরই থেমে যাবে। সারাবিশ্বে আক্রান্ত প্রতিটি রোগী যথাযথ চিকিৎসা পাবে এবং দ্রুতই সেরে উঠবে। ভয়াবহ এ করোনা বিপর্যয় আমাদের আবারও মনে করি দিলো, আমরা একই দুনিয়ায় বাস করি এবং আমাদের পরিণতিও এক। এ ধরনের বিপর্যয় মোকাবিলায় আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকা দরকার। কারণ ভাইরাস কোনো সীমানা মানে না। জাতি-বর্ণ, ধনী-গরীব নির্বিশেষে এটি যেকোনো সময় যে কাউকেই নিজের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে পারে।

মহামারির প্রকোপ কখন থামবে, সেটি নিশ্চিতভাবে বলা হয়তো অসম্ভব, কিন্তু হুয়াওয়ে পরিবার বিশ্বাস করে, ঐক্যবদ্ধভাবে থাকলেই এ বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।

বাংলাদেশ সময়: ১২২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২০
এমআইএইচ/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।