ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

গুগল-ওপেন স্ট্রিট ম্যাপে যুক্ত হলো ১ লাখ ১০ হাজার লোকেশন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫২ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২০
গুগল-ওপেন স্ট্রিট ম্যাপে যুক্ত হলো ১ লাখ ১০ হাজার লোকেশন

ঢাকা: বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির শুরুর দিকে দেশব্যাপী ডিজিটাল ম্যাপিংয়ের লক্ষ্যে পরিচালিত ‘বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ’ নামে ক্যাম্পেইনে তরুণদের অভাবনীয় অংশগ্রহণে এক লাখ ১০ হাজার লোকেশন গুগল ম্যাপ ও ওপেন স্ট্রিট ম্যাপে যুক্ত করা হয়েছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বাস্তবায়নাধীন এবং ইউএনডিপির সহায়তায় পরিচালিত এটুআই ও গুগলের সমন্বয়ে গ্রামীণফোনের উদ্যোগে আয়োজিত এ ক্যাম্পেইন রোববার (২১ জুন) অনলাইনে সমাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
 
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।


 
গ্রামীণফোন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ‘বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ’ উদ্যোগের মাধ্যমে সারাদেশের তরুণরা ঘরে বসে গুগল ম্যাপ এবং ওপেন স্ট্রিট ম্যাপে তাদের আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোর পিনপয়েন্ট করার সুযোগ পেয়েছে। বর্তমান সংকটকালীন পরিস্থিতিতে প্রতিটি দেশের ভৌগোলিক ম্যাপিং হালনাগাদ করা খুবই জরুরি।  

কারণ হাসপাতাল, স্থানীয় পণ্যের বাজার, রিচার্জ পয়েন্ট, নগদ/বিকাশ পয়েন্ট ও অন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো ম্যাপে পয়েন্ট করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ঢাকার বাইরে যারা জরুরি সেবার সঙ্গে জড়িত তাদের জন্য এটি আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
 
পূর্বে শহরাঞ্চলের বাইরের গুগল ম্যাপে পয়েন্ট করা ছিল না বলে নাগরিকদের বিভিন্ন স্থান শনাক্ত করতে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছিল। ডিজিটাল ম্যাপ হালনাগাদ করার কারণে এ জাতীয় সমস্যা সমাধানে সহায়তা করবে বলে জানায় গ্রামীণফোন।
 
সমাপনী অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের ম্যাপিংয়ের ধারণায় আমূল পরিবর্তন নিয়ে এসেছে গুগলম্যাপ। স্মার্টফোন দিয়ে জিপিএস ব্যবহার, পৃথিবীকে আমাদের হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে। তবে ভাবতে হবে যেন প্রযুক্তি আমাদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি না করে। বিশেষ করে বর্তমানের এ প্রতিকূল সময়ে যখন জরুরি সেবা ঘরে পৌঁছে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
 
‘আমরা আইসিটি বিভাগ থেকে পাঁচটি কন্টিনিউটি পরিকল্পনা করেছিলাম এ সঙ্কটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে। সেখানে আমাদের অন্যতম কৌশল ছিল সরকারের সঙ্গে সব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, উদ্যোক্তা এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করা। আমরা লক্ষ্য করেছি, শহরের ক্ষেত্রে হাসপাতালসহ নানা জরুরি স্থাপনা গুগল ম্যাপে রয়েছে, কিন্তু সে তুলনায় গ্রামে জরুরি স্থাপনা চিহ্নিত করা নেই। আর এ সমস্যা সমাধানে এটুআই, গ্রামীণফোন, বাংলাদেশ স্কাউটস ও প্রেনিউর ল্যাবসহ সবাই মিলে বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ উদ্যোগ নিয়ে এসেছে, যেখানে দেশের তরুণরাই ঘরে বসেই পথ দেখাতে পারে। আমরা আনন্দিত যে এ চ্যালেঞ্জ সবাইকে আলোড়িত করেছে।
 
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত এ কার্যক্রমে প্রায় ৩১ হাজার রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে এক লাখ ১০ হাজার ম্যাপ পোস্ট পাওয়া গেছে। অন্যদিকে ফেসবুকে ৮.৫ মিলিয়নের বেশি রিচ এবং ৯৬.৭ মিলিয়নের বেশি ইমপ্রেশন পাওয়া গেছে। তরুণরা তাদের বাড়িতে অবস্থান করে শারীরিক দূরত্বের বিধি মেনেই এই পুরো ম্যাপিং প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছে।
 
ম্যাপিং কার্যক্রমে অবদানকারী শীর্ষ ১০০ জন তরুণকে গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে ২ মাসের জন্য ১০ জিবি (৫ জিবি ৩০ দিন+৫জিবি ৩০ দিন) ইন্টারনেট দেওয়া হয়েছে। অনলাইন সমাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক ক্রেস্টপ্রাপ্ত শীর্ষ ১০০ জন ম্যাপারের নাম ঘোষণা করেন।
 
অন্যদিকে শীর্ষ ২০০ জন ম্যাপার এটুআই-এর ‘একশপ’ প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ প্রাপ্ত হবে। তারা সুপার স্টোর, মুদি দোকান, ফার্মেসি, কুরিয়ার সার্ভিস, পাবলিক টয়লেট এবং দেশের পর্যটন স্থানগুলোর ভৌগোলিক ম্যাপিং করার কাজে সহযোগিতা করবে, যা জেলা-ব্রান্ডিং কার্যক্রমকেও এগিয়ে নিয়ে যাবে।
 
৩১ হাজার রেজিস্টার্ড ম্যাপারের সবাইকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের পক্ষ থেকে ই-সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।
 
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান বলেন, কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারি আমাদের নতুন স্বাভাবিকতায় অভ্যস্ত করে তুলছে। কানেক্টিভিটির কারণেই এ অভুতপূর্ব সময়ে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জরুরি সেবাদান কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে। এটুআই, আইসিটি বিভাগ ও প্রযুক্তিপ্রেমী তরুণ ম্যাপারদের সাথে এ উদ্যোগের অংশ হতে পেরে আমরা আনন্দিত।
  
এটুআই’র পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী বলেন, আমাদের বর্তমান সঙ্কটে হাসপাতাল, ফার্মেসি, মুদি দোকানসহ জরুরি স্থাপনা সহজে খুঁজে বের করতে আমাদের তরুণ প্রজন্ম কীভাবে সহায়তা করতে পারে সে ধারণা থেকেই বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ উদ্যোগের যাত্রা শুরু। এ ম্যাপিং প্রক্রিয়া ই-কমার্স ও ডেলিভারি সেবাসহ জরুরি নানা সেবাগ্রহণ ও প্রদানে নতুন সম্ভাবনা উন্মোচন করবে।
 
এই ক্যাম্পেইনকে সফল করতে বাংলাদেশ স্কাউটস, এটুআই, গ্রামীণফোন, প্রিনিয়র ল্যাব, ইয়ুথ হাব এর আয়োজনে সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে যুক্ত ছিল গুগল ডেভেলপার গ্রুপ, লোকাল গাইডস বাংলা, ইউএনডিপি, ওপেন স্ট্রিট ম্যাপ বাংলাদেশ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং উইমেন টেকমেকারর্স।
 
গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশনস খায়রুল বাশারের সঞ্চালনায় অনলাইনে সমাপনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে অংশ নেন বাংলাদেশ স্কাউটসের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, প্রিনিয়র ল্যাবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফ নেজামি, গুগলের রিজিওনাল হেড (সাউথ এশিয়া) ফারহান কুরেশী, দু’জন ম্যাপার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, এটুআই, গ্রামীণফোনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২০
এমআইএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।