টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী শনিবার (১১ জুলাই) রাতে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে প্রাথমিক শিক্ষা পরিবার, সারা বাংলা নামের ফেসবুক গ্রুপের সঙ্গে ‘আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যত’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে মোস্তাফা জব্বার শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে ১৯৯৯ সাল থেকে তার অর্জিত অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলে প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
তিনি বলেন, এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা একবছরের পাঠ্যক্রম দুইমাসের মধ্যে শেষ করতে সক্ষম। এই ক্ষেত্রে তিনি দুটি চ্যালেঞ্জ-ডিভাইস এবং ডিজিটাল কনটেন্ট শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের অন্তরায়।
তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে দীর্ঘ প্রচেষ্টায় চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করতে তিনি সক্ষম হয়েছেন এবং পঞ্চম শ্রেণির কনটেন্ট তৈরির কাজ চলছে। বিজয় ডিজিটালের তৈরি এই কনটেন্টগুলো শিক্ষার্থীরা অনলাইন থেকে বিনা টাকায় ডাউন লোড করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে করোনাকালে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারছে। কনটেন্টে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে ইন্টারনেটেরও দরকার হয় না।
‘তিনি বাচ্চাদের ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন থেকে দূরে রাখার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে তাদেরকে উৎসাহিত করা উচিত বলে শিক্ষক ও অভিভাবকদের পরামর্শ দেন। ’
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ইন্টারনেটের ভালো দিকটাই দেখতে হবে। খারাপ দিকটা বর্জন করতে হবে। সেজন্য প্যারেন্টাইল গাইড প্রয়োগ করে শিশুদের নিরাপদ রাখা সম্ভব। ইন্টারনেট নিরপদ রাখতে ইতোমধ্যে ২৬ হাজার সাইট আমরা বন্ধ করেছি। শিশুদের জন্য ইন্টারনেট নিরাপদ রাখতে সম্ভাব্য সবকিছু করতে সরকার বদ্ধপরিকর।
জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠার উপযুক্ত মানব সম্পদ তৈরিতে শিক্ষার প্রাথমিক স্তরে ডিজিটাল শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, দক্ষ মানব সম্পদ তৈরি করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৭৭ সালে কম্পিউটারকে শিক্ষার উপকরণ হিসেবে দেখছে। ডিজিটাল শিক্ষা পদ্ধতি প্রচলিত শিক্ষা পদ্ধতির চেয়ে সহজ ও আনন্দদায়ক হওয়ায় শিশুদের মনন ও মেধা বিকাশে কার্যকর ও ফলপ্রসূ একটি পদ্ধতি।
মন্ত্রী বলেন, শিশুকাল হচ্ছে তাদের আগামীদিনের সুযোগ্য করে গড়ে তোলার উৎকৃষ্ট সময়। প্রাথমিক বিদ্যালয় হচ্ছে শিশুদের ভবিষ্যত ভিত তৈরির সূতিকাগার। তারা কাদা মাটির মতো, তাদের যেভাবে গড়তে চান সেভাবেই তারা তৈরি হবে। শিশুদের তৈরি করার জন্য প্রাথমিক শিক্ষকদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। শিশুরা তাদের মা-বাবার চেয়ে শিক্ষকদের পরামর্শ বেশি অনুসরণ করে। শিক্ষকদের নির্দেশনাই তাদের পাথেয়। দক্ষ জাতি গঠনে বঙ্গবন্ধু দক্ষ মানব সম্পদ তৈরি করার জন্য যুদ্ধের ধ্বংসস্তুপের ওপর দাঁড়িয়েও প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করেছিলেন।
অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার এবং বিজয় ডিজিটালের প্রধান নির্বাহী জেসমিন জুঁই বক্তব্য রাখেন।
ব্যারিস্টার শামীম হায়দার বলেন, শিশুদের দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে হলে ডিজিটাল শিক্ষার বিকল্প নেই। আজকের শিশু আগামীদিনের দেশ গড়ার প্রকৃত কারিগর হিসেব গড়ে তুলতে প্রাথমিক শিক্ষকদের ডিজিটাল প্রযুক্তি নির্ভর ব্যাপক প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।
জেসমিন জুঁই বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিশুরা খেলার ছলে তার পাঠপুস্তক সহজে নিজে থেকে আয়ত্ত করতে পারে। এই পদ্ধতিতে নিজেরাই খেলার ছলে পাঠ্যপুস্তকের পড়া শিখে নিতে পারে। একবার কৌশলটা দেখিয়ে দিলে তাকে ডিভাইস থেকে সরানো কঠিন।
তিনি বলেন, কনটেন্ট তৈরির জন্য পাঠ ধারার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শিশুদের চাহিদা তাদের ভালোলাগা ইত্যাদি অনেক মনস্তাত্বিক বিষয় নির্মাতাকে মাথায় রেখে কাজ করতে হয়। গত ১০ বছরে আমরা অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে তা করতে পেরেছি। করোনাকালে তাদের পাশে দাঁড়াতে পেরে আমাদের প্রচেষ্টার বিরাট একটা সফলতা দেখছি।
অনুষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা পরিবার সারা বাংলার সদস্যরা অংশ গ্রহণ করেন। তারা প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে ফ্রি ওয়াইফাই সংযোগ দেওয়ার জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর কাছে তাদের দাবি তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২২ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০২০
এমআইএইচ/এএটি