ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২: পরামর্শক নিয়োগে চুক্তি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২১
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২: পরামর্শক নিয়োগে চুক্তি

ঢাকা: মহাকাশে স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণের জন্য স্যাটেলাইটের ধরন ও প্রকৃতি নির্ধারণে ফ্রান্সের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে সরকার।

মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) ঢাকায় বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিএল) প্রধান কার্যালয়ে উৎক্ষেপণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পরামর্শক হিসেবে ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান ‘প্রাইস ওয়াটার হাউজ কুপার্স অ্যাডভাইজরি, এসএএস’-এর সঙ্গে অনলাইনে চুক্তি সই হয়।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বিএসসিএল চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. আফজাল হোসেন এবং বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, বিএসসিএল পরিচালনা পর্ষদ সদস্য ড. এসএম জাহাঙ্গীর আলম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

বিএসসিএল এমডি শাহরীয়ার আহমেদ চৌধুরী এবং প্রাইজ ওয়াটার হাউজ কুপার্স অ্যাডভাইজর ড. লুইগি (স্ক্যাটিয়া, পার্টনার, পিডব্লিউসি স্পেস প্রাকটিস লিডার) নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিপত্রে সই করেন।

বিএসসিএল জানায়, স্যাটেলাইটের প্রকৃতি ও ধরন নির্ধারণের লক্ষ্যে স্যাটেলাইট নির্মাণ ও উৎক্ষেপণের পূর্বে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য যথাযথ দরপত্র প্রক্রিয়ায় ‘প্রাইস ওয়াটার হাউজ কুপার্স অ্যাডভাইজরি, এসএএস’কে নির্বাচন করা হয়।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী ২০২৩ সালের মধ্যে দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের কার্যক্রম চালু হবার ঘোষণা রয়েছে। নির্বাচনী ইশতেহারে অন্যান্য প্রকৃতি, প্রয়োজন, চাহিদা ও ধরনের স্যাটেলাইট প্রযুক্তিতে স্বনির্ভরতা অর্জনের জন্য বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ মহাকাশে উৎক্ষেপণের একটি যুগান্তকারী ঘোষণা দেওয়া হয়।

মন্ত্রী বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণ প্রক্রিয়ার প্রাইজ ওয়াটার হাউজ কুপার্সকে কারিগরি পরামর্শক হিসেবে পাশে পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং দেশের জনগণের প্রয়োজন ও চাহিদার সাথে সমন্বয়ের বিষয়টি প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

মোস্তাফা জব্বার মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক অভিযাত্রার আজকের দিনটিকে একটি ঐতিহাসিক উল্লেখ করে বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ডিজিটাল সংযুক্তির সক্ষমতা তৈরির জন্য বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ জাতীয় জীবনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরও একটি নতুন যুগে পদার্পণ করেছে। এর ওপর ভর করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে জ্ঞান ভিত্তিক ডিজিটাল সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম আরও বেগবান ও অর্থবহ হবে।

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ এর প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করে বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর ওপর নির্ভর করে আমরা চর ও দ্বীপসহ দুর্গম অঞ্চলের ডিজিটাল কানেকটিভিটি তৈরি করছি। আমরা বেতার ও টিভি চ্যানেলসমূহের সম্প্রচার অব্যাহত রাখছি। দেশের দুর্গম এলাকায় টেলিমেডিসিন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদের দিক-নির্দেশনায় নিবিড় পর্যালোচনা করে দেখেছি একটি স্যাটেলাইট দিয়ে আমাদের যোগাযোগ ছাড়া আর কোনো প্রয়োজন মেটে না। ভবিষ্যতের বাড়তি চাহিদা মেটানোর কথাও ভাবতে হবে। স্যাটেলাইটে এমন ব্যবস্থা রাখতে হবে যাতে যোগাযোগ ব্যবস্থার বাইরে উপগ্রহের মাধ্যমে যাতে আমরা নতুন সেবা দিতে পারি। আমরা ইতোমধ্যে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগের কার্যক্রম শুরু করেছি। নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী সেটিও আমাদের ওপর অর্পিত একটি বড় কাজ।

মন্ত্রী বলেন, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু, জয় বাংলা নিজস্ব স্পেস দেখে আমাদের গর্ব হয়। দেশ স্বাধীন না হলে আমরা মহাকাশ বিজয়ী হতে পারতাম না। দ্বিতীয় স্যাটেলাইট বাংলাদেশের সক্ষমতাকে অনেক দূর বাড়িয়ে দেবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর মহাকাশে স্যাটেলাইন উৎক্ষেপণের চূড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ২০০১ থেকে ২০০৮ সালের সরকারসমূহ সেই কর্মসূচিটির কবর রচনা করে।

২০১৮ সালের ১২ মে মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট নির্ভর সম্প্রচার ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা অর্জন করেছে।

মন্ত্রী বলেন, বাঙালির মহাকাশ জয়ের স্বপ্ন পূরণের দিন ১২ মে, ২০১৮ সাল। এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় দেশের প্রথম যোগাযোগ উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। ইতিহাস সৃষ্টিকারী এই ঘটনাটি ঘটেছিল বাংলাদেশ সময় রাত ২টা ১৫ মিনিটে। বিশ্বে স্পেস সোসাইটিতে ৫৭তম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকারী দেশ হিসেবে লিপিবদ্ধ হয় বাংলাদেশের নাম। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মিশন লাইফ ১৫ বছর এবং ডিজাইন লাইফ ১৮ বছর।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২১
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।