ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

৩৪ কোটি টাকা মুনাফায় ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখলো রবি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২১
৩৪ কোটি টাকা মুনাফায় ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখলো রবি

ঢাকা: মোট আয়ের ওপর ২ শতাংশ ন্যূনতম করের নেতিবাচক প্রভাব সত্ত্বেও ৩৪ দশমিক ৩ কোটি টাকা কর পরবর্তী মুনাফা (পিএটি) নিয়ে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক শেষ করলো রবি।

নতুন ১০ লাখ গ্রাহক যোগ হয়ে বছরের প্রথম প্রান্তিকে রবির সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ১৯ লাখে।

মোট গ্রাহকের ৭০ দশমিক ৬ শতাংশ ইন্টারনেট গ্রাহক নিয়ে ডিজিটালাইজেশনের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে রবি।

রোববার (১১ এপ্রিল) একটি ডিজিটাল প্রেস কনফারেন্সে এ বছরের প্রথম প্রান্তিকের ফলাফল ঘোষণার সময় এসব তথ্য জানিয়েছে অপারেটরটি।

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে রবির আয়ের পরিমাণ ১ হাজার ৯৮১ কোটি টাকা, যা ২০২০ সালের শেষ প্রান্তিকের তুলনায় ৩ দশমিক ২ শতাংশ বেশি এবং গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ১ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। ২০২০ সালের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় ভয়েস সেবা থেকে রবির রাজস্বের হার ৪ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে, যা ভয়েস কল করার ক্ষেত্রে ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোর আগ্রাসী ভূমিকারই প্রতিফলন। অন্যদিকে ডাটা সেবায় রাজস্ব গত প্রান্তিকের তুলনায় ৮ দশমিক ৫ শতাংশ এবং গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে।

গত প্রান্তিকের তুলনায় ৬ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের শেষ নাগাদ রবির ইবিআইটিডিএ দাঁড়িয়েছে ৮১১ দশমিক ৭ কোটি টাকায়। ২০২০ সালের একই প্রান্তিকের তুলনায় ইবিআইটিডিএ বেড়েছে ৩ দশমিক ১ শতাংশ। এছাড়া গত প্রান্তিকের তুলনায় রবির ইবিটডিএ মার্জিন ১ দশমিক ২ পার্সেন্টেজ পয়েন্ট (পিপি) এবং ২০২০ সালের একই প্রান্তিকের তুলনায় শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ পিপি বেড়েছে।  

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে রবি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়েছে ১ হাজার ১১৫ কোটি টাকা যা ওই প্রান্তিকের মোট রাজস্বের ৫৬ দশমিক ৩ শতাংশ। কোম্পানিটি চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে মূলধনী বিনিয়োগ করেছে ১৫০ দশমিক ৬ কোটি টাকা। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক পর্যন্ত রবির নেটওয়ার্কের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৫০২টিতে, যার শতভাগই ফোরজি সাইট।

রবির পরিচালনা পর্ষদ কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ওপর ৩ শতাংশ হারে অন্তর্র্বতীকালীন নগদ লভ্যাংশের প্রস্তাব দিয়েছে (প্রতিটি ১০ টাকার শেয়ারে ৩০ পয়সা)। গত ৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রবির ২৫তম বার্ষিক সাধারণ সভা আগামী ১২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে।

কোম্পানির আর্থিক ফলাফল সম্পর্কে রবির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা খুবই আনন্দিত যে বছরের শুরু থেকেই আমাদের আর্থিক অগ্রগতির হার আশাব্যাঞ্জক। এই ইতিবাচক অগ্রগতির ফলে একটি অন্তর্র্বতীকালীন নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পেরে আমরা গর্বিত। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে আমাদের পিএটির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৪ দশমিক ৩ কোটি টাকায়।  

‘কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি, মূল আয়ের ওপর ২ শতাংশ ন্যূনতম করের প্রভাবে মুনাফা প্রত্যাশিত হারে বাড়েনি। শুধু তাই নয়, এ করের প্রভাবে তালিকাভুক্ত টেলিযোগাযোগ কোম্পানিগুলোর জন্য কর্পোরেট করে (৪০ শতাংশ) যে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে সে সুবিধা থেকেও আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। এটি অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় যে আমাদের সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা পুঁজিবাজারে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার পরও তাদের কাঙ্ক্ষিত প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আমরা আবারও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করবো যাতে আমাদের ব্যবসাকে এ অন্যায্য কর থেকে মুক্ত করা হয়। ’

৪ দশমিক ৫জি সেবায় রবির অসাধারণ সাফল্যের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, দেশের প্রথম অপারেটর হিসেবে সব নেটওয়ার্ক সাইটগুলোতে ৪ দশমিক ৫জি প্রযুক্তি স্থাপন করতে পেরে আমরা গর্বিত। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নিলামে আরও তরঙ্গ নেওয়ার মাধ্যমে মোট নেটওয়ার্ক সাইট এবং গ্রাহক প্রতি তরঙ্গের হারের ভিত্তিতে এখন আরও স্থিতিশীল ও উচ্চগতির মোবাইল ইন্টারনেট সেবা দিতে প্রস্তুত রবি। আমাদের মোট গ্রাহকের ৭০ দশমিক ৬ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হওয়ায় আমরা বিশ্বাস করি পরবর্তী প্রজন্মের ডিজিটাল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে আমরা সঠিক পথেই এগুচ্ছি।

বাজার ব্যবস্থায় বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কথা উল্লেখ করে মাহতাব বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ডিডব্লিওডিএম (ডেনস ওয়েভলেঙ্গথ ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং) সরঞ্জামগুলোর ব্যাপারে অনুমোদন না পাওয়ার কারণে আমরা এখনও হাজার হাজার কিলোমিটার ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারছি না। যা আমাদের সেবার মান আরও উন্নত করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসএমপি বিধিমালার কার্যকর প্রয়োগের অভাবে টেলিযোগাযোগ বাজারে এটি অসম প্রতিযোগিতা বিরাজ করছে। এর ফলে বাজারে অদূর ভবিষ্যতে গ্রাহক স্বার্থ ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২১
এমআইএইচ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।