ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

টিভ্যাস প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে বিটিআরসি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২১
টিভ্যাস প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে বিটিআরসি

ঢাকা: টিভ্যাসের (টেলিকমিউনিকেশন ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস) মাধ্যমে গ্রাহকের অজান্তে টাকা কেটে নেওয়ায় আইনানুগ ব্যবস্থাসহ কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিটিআরসি।

বিটিআরসি সংশ্লিষ্টদের পাঠানো চিঠিতে জানিয়েছে, বিটিআরসির পরিদর্শনে শর্ত ভঙ্গকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

টিভ্যাসের (TVAS) পূর্ণরূপ হলো টেলিকমিউনিকেশন ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস। মোবাইল ফোন অপারেটরের গ্রাহকদের সমসাময়িক নিউজ অ্যালার্ট, ওয়েলকাম টিউন, গান, ওয়ালপেপার, ভিডিও, বিভিন্ন তথ্য (কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ধর্ম ইত্যাদি বিষয়ক), লাইফস্টাইল, গেম, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ইত্যাদি সেবা টিভ্যাস হিসেবে পরিচিত।

বাংলাদেশে ২০১০ সালের দিকে স্বল্প পরিসরে টিভ্যাস সেবা প্রদান শুরু হয়। কিন্তু ২০১৮ সাল নাগাদ এর ব্যবহার ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিটিআরসি থেকে টিভ্যাস রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট প্রদানের জন্য গাইডলাইন প্রণয়ন করা হয় এবং সে সময় থেকে টিভ্যাস রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট প্রদান শুরু করা হয়। বর্তমানে বিটিআরসির অনুমোদিত টিভ্যাস প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠান রয়েছে প্রায় ১৮২টি। টিভ্যাস প্রোভাইডারগণ চারটি মুঠোফোন অপারেটরের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির মাধ্যমে মুঠোফোন গ্রাহকদের শর্টকোড, এসএমএস, আইভিআর, ওয়াপ, মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে টিভ্যাস সেবা দিয়ে থাকে। সেবার বিনিময়ে গ্রাহকদের নিকট থেকে প্রাপ্য অর্থের একটা অংশ সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক মোবাইল ফোন অপারেটররা পেয়ে থাকেন। এছাড়াও টিভ্যাস প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে অর্জিত রাজস্বের মোট ৬.৫ শতাংশ বিটিআরসি/সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

বিটিআরসি জানায়, সম্প্রতি টিভ্যাস সংক্রান্ত বিষয়ে গ্রাহক পর্যায়ে কিছু অভিযোগ পাওয়া যায় যেমন- গ্রাহকের অজান্তে টিভ্যাস সার্ভিস এক্টিভেট করে টাকা কেটে নেওয়া, অপ্রয়োজনীয় সেবা চালু করে দেওয়া ইত্যাদি। বিটিআরসির প্রাপ্য রাজস্ব পরিশোধ না করাসহ গ্রাহক স্বার্থ বিবেচনায় বিটিআরসি টিভ্যাস রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটধারী প্রতিষ্ঠানে পরিদর্শন শুরু করে। ইতোমধ্যে ১১টি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন সম্পন্ন করেছে এবং এদের মধ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে বেশ কিছু ব্যত্যয় পাওয়া যায়।

পরিদর্শনকালে নিবন্ধিত ঠিকানায় অফিস না থাকা, কমিশন হতে সেবা এবং অনুমতি ছাড়া টিভ্যাস সেবা প্রদান করা, টিভ্যাস প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব মনিটরিং টার্মিনাল/অনলাইন মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকা, ইনফ্রাস্কটাকচার শেয়ারিং এগ্রিমেন্ট ছাড়া সার্ভার স্থাপন করে সেবা প্রদান করার প্রমাণ পাওয়া যায়।

এছাড়াও অডিট রিপোর্ট প্রদান করতে না পারা, টিভ্যাস সার্ভিস অ্যাকটিভেশনের ক্ষেত্রে বিটিআরসির নির্দেশনা অনুযায়ী ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বাস্তবায়ন না করা, টিভ্যাস সার্ভিস অ্যাক্টিভের ক্ষেত্রে বিটিআরসির নির্দেশনা অমান্য করে গ্রাহকদের সম্মতি ব্যতিরেকে অটো রিনিউয়ল চালু রাখা, টিভ্যাস গাইডলাইন প্রণয়নের পূর্ব থেকে সেবা প্রদানকারীগণের কমিশনের প্রাপ্য রাজস্ব প্রদান না করা, গ্রাহকের অজান্তে টিভ্যাস সার্ভিস এক্টিভেট করে টাকা কেটে নেওয়া।
বিটিআরসির উপ-পরিচালক মো. জাকির হোসেন খান বাংলানিউজকে জানান, এসব পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কমিশন হতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে এবং পরিদর্শন কার্যক্রম চলমান থাকবে।

ইতোমধ্যে উইন মিয়াকি লি., মিয়াকি মিডিয়া লি. ও বিনবিট মোবাইল এন্টারটেইনমেন্ট লি. নামক তিনটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা আরোপ করা হয়েছে। বাকি প্রতিষ্ঠানসমূহের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২১
এমআইএইচ/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।