ঢাকা: মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) নগদ চালুর সময় নানা দিক থেকে চাপ ছিল জানিয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেছেন, এক সময় এমএফএসে মনোপলি (একচেটিয়া) ব্যবসা ছিল। সেটা ভাঙতে পেরেছে নগদ।
শনিবার (০৮ মে) টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (টিআরএনবি) আয়োজিত ‘প্রতিযোগিতা ও অংশীদারিত্বে প্রেক্ষাপট: প্রসঙ্গ এমএফএস’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, এমএফএসে এক সময়ে মনোপলি (একচেটিয়া) ব্যবসা ছিল। আমরা যাই বলি না কেন, সেই মনোপলিটা ভাঙতে পেরেছে নগদ। এজন্য নগদকেই সেই কৃতিত্বটা দিতে হবে।
বর্তমান ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, তিনি এটি অনুমোদন দিয়েছিলেন চালু করার সময়। যাতে আমাদের গ্রাহকের সাশ্রয় ও উপকার হয়েছে।
নগদ চালুর সময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব থাকাকালে তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, এটি (নগদ) করতে গিয়ে আমি প্রচণ্ড রকমের বিরোধিতা পেয়েছি। সেই নামগুলো বললে এখানে খুব কষ্টকর হবে। আমাদের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা থেকে একটা বিরোধিতা পেয়েছি, টেলকো থেকেও একটা বিরোধিতা পেয়ছি। কিন্তু এখানে বলে রাখা ভালো যে রবি এখানে প্রচণ্ড রকমের সহযোগিতা করেছে।
‘আমাদের এখানে নেপথ্যে একটা সাংঘাতিক রকমের প্রভাবশালী চক্র এর প্রচণ্ড রকমের বিরোধিতা করেছিল। সেই কথাগুলো আমার মনের মধ্যে গেঁথে আছে। ’
এমএফএসে প্রতিযোগিতা প্রয়োজন কিনা- সেই প্রশ্নে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, প্রতিযোগিতা থাকতে হবে। প্রতিযোগিতাকে স্বাগত জানাতে হবে। মনোপলি কখনও গ্রহণযোগ্য নয়। যদিও মনোপলিটা কমে গেছে কিছুটা কিন্তু পুরোপুরি যায়নি।
এ বিষয়ে প্রতিযোগিতা কমিশন কাজ করবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
চার্জ প্রসঙ্গে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের মানুষকে হাজারে সাড়ে ১৮ টাকার জায়গায় কিন্তু ২০ টাকা দিতে হয়েছে, হচ্ছে। যদিও সমীক্ষায় উঠে এসেছে মানুষ এ বিষয়ে অভিযোগ করেনি। কিন্তু অভিযোগ না করাটাকে প্রশংসা করার কিছু নেই। মানুষ দেড় টাকার জন্য অনেক কিছুই করে না। দেড় টাকাকে আপনি কোটি কোটি ট্রানজেকশনকে দিয়ে গুণ করেন। তাহলে দেখেন কত কোটি টাকার প্রতারণা হচ্ছে, কত কোটি টাকার চুরি হচ্ছে আমি বলবো। এগুলো আমাদের অবশ্যই দেখতে হবে।
আয়োজকদের সমীক্ষায় অন্যান্য এমএফএস থেকে তথ্য পাওয়া না গেলেও বিকাশ ও নগদ থেকে তথ্য পাওয়া গেছে। তবে বেশি তথ্য নগদ থেকে পাওয়া গেছে বলে সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এ নিয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, এটার হিসাব-নিকাশ কতটুকু যায় আমার জানা নেই। তারও একটি সুন্দর সমাধানে যাওয়া উচিত যে কত টাকা আয় হয়, কত টাকা রেভিনিউ শেয়ারিং সরকারের পাওয়া উচিত কোন খাত থেকে সেগুলো বিবেচনায় রাখে।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, চার্জ কমালে মার্কেট নষ্ট হবে, এটায় আমি একমত নই। সরকার একটি রেট পুননির্ধারণ করে দিতেই পারে। এই বিষয়গুলো জনস্বার্থে করতে হবে।
টিআরএনবি-এর সভাপতি রাশেদ মেহেদীর সভাপতিত্বে আলোচনায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার দে।
প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের জিএম মেসবাউল হক, রবির এমডি ও সিইও এবং এমটব সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আবুল কাশেম, বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান আলম, নগদ এমডি তানভীর আহমেদ মিশুক, রকেট সিইও আবুল কাশেম মো. শিরিন, বিকাশ-এর চিফ কমার্শিয়াল অফিসার মিজানুর রশীদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৬ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০২১
এমআইএইচ/এইচএডি