ঢাকা: কার্যক্রম শুরুর প্রথম বছরেই বাংলাদেশে অনলাইন ফুড ডেলিভারি সেবা খাতে জনপ্রিয়তায় দ্বিতীয় অবস্থান অর্জনে সক্ষম হয়েছে ই-ফুড। দেশি ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস ইভ্যালি’র এ সহযোগী প্ল্যাটফর্ম ই-ফুড গেল এক বছরে অন্তত ৫৪ লাখ ফুড অর্ডার গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিয়েছে।
জানা যায়, করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময়েই গত বছরের ১২ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করে ই-ফুড। কার্যক্রম শুরুর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ভোজনরসিকদের কাছে জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে ই-ফুড। বিশেষ করে করোনা প্রকোপের প্রথম ঢেউয়ের সেই সময়টাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গ্রাহকদের কাছে খাবার পৌঁছে সুনাম কুড়ায় প্রতিষ্ঠানটি।
শুরুর সময়ের দিনগুলোর কথা স্মরণ করে ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল বলেন, ইভ্যালি সব সময় চেয়েছে গ্রাহকদের জন্য প্রযুক্তিভিত্তিক একটি পূর্ণ ইকো-সিস্টেম নিয়ে আসতে। তারই অংশ হিসেবে সেই সময় ই-ফুডের যাত্রা শুরু হওয়াটা ছিল খুবই তাৎপর্য্য পূর্ণ এবং কঠিন। সে সময় ‘লকডাউনে’ অনেকেই রাজধানী ছেড়েছিলেন তাই রাইডার পাওয়া এবং রেস্টুরেন্টগুলোকে আমাদের প্ল্যাটফর্মে আনা খুবই চ্যালেঞ্জিং ছিল। আবার এগুলো হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে খাবার সরবরাহ করাটা ছিল সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আমাদের ইভ্যালি হিরো, রেস্টুরেন্ট পার্টনার এবং সর্বোপরি গ্রাহকদের কাছে কৃতজ্ঞ যে এত অল্প সময়ে আমাদের এতটা সহযোগিতা তারা করেছেন; আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন।
শুধু খাবার সরবরাহ করাই নয় বরং কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা রেখেছে ই-ফুড। প্ল্যাটফর্মটির প্রধান মুস্তাহিদুল ইসলাম বাঁধন বলেন, মাত্র ২৩ জন সদস্য নিয়ে শুরু হওয়া ই-ফুড বিভাগে পূর্ণকালীন এবং ফ্রিল্যান্সার মিলিয়ে এখন কাজ করছেন প্রায় পাঁচ হাজার কর্মী। এখন পূর্ণকালীন কর্মী রয়েছেন ৮৫ জন। আর ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ এবং গাজীপুরসহ আটটি শহরে প্রায় পাঁচ হাজার ইভ্যালি হিরো ফ্রিল্যান্স ভিত্তিতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। পুরো দেশজুড়েই আমাদের কার্যক্রম বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। খাবার নিয়ে গ্রাহকদের আমরা ‘ওয়ান পয়েন্ট সলিউশন’ দিতে চাই। সে ক্ষেত্রে তাদের সেরা সেবাটি দিতে আমাদের পরিবারের সদস্য আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। কাজেই এখানে আরও কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
ই-ফুড প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে করোনাকালে হোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলোও ব্যবসার দারুণ একটি সুযোগ পায়। ভোজনরসিকদের কাছে প্রিয় বিএফসি রেস্টুরেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফ উদ দৌলা বলেন, ই-ফুড যখন যাত্রা শুরু করে, তখন প্রায় আড়াই মাস লকডাউনে থাকার পর রেস্টুরেন্টগুলো গ্রাহকদের রেস্টুরেন্টে বসিয়ে আপ্যায়নের সুযোগ পায়। কিন্তু তখনও অনেকেই রেস্টুরেন্টে আসছিলেন না। এমন সময়ে ফুড ডেলিভারি পার্টনারগুলো আমাদের ব্যবসা কার্যক্রম চলমান রাখার একটি সুযোগ করে দেয়, যার মধ্যে ই-ফুড অন্যতম। তখন থেকে ই-ফুড প্ল্যাটফর্মে প্রতিদিন আমরা উল্লেখযোগ্য হারে অর্ডার পাচ্ছি এবং আমাদের সম্মানিত গ্রাহকদের কাছে আমাদের খাবার পৌঁছে যেতে পারছে।
ই-ফুড নিয়ে নিজেদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে ইভ্যালির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন বাংলানিউজকে বলেন, এখন বলতে গেলে আমরা বাজারে দ্বিতীয় অবস্থানে আছি, যেখানে পাঁচ হাজারের বেশি রেস্টুরেন্ট আমাদের সঙ্গে নিবন্ধিত আছে। আগামীতে এর পরিসর আরও বাড়াতে আমরা কাজ করছি। আমরা একটা মজবুত ইকো-সিস্টেম গড়ে তুলতে চাই যেখানে রেস্টুরেন্টগুলো ভালো ব্যবসা করবে, গ্রাহকেরা দারুণ সব অফারে ফুড এবং সেবা পাবেন এবং রাইডারসহ এ ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে সম্পর্কিতরা কর্মসংস্থান পাবেন।
নিজেদের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে শনিবার (১২ জুন) ই-ফুডে সব অর্ডারে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড় পাবেন গ্রাহকেরা। একই সঙ্গে গ্রাহকদের কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়া ইভ্যালি হিরো রাইডাররা ই-ফুডের পক্ষ থেকে প্রতিটি অর্ডারে দ্বিগুণ ডেলিভারি ফি পাবেন। এছাড়া ভোজনরসিকদের জন্য ‘ফুড গিফট কার্ড’ এবং প্রতি বৃহস্পতিবার খাবার অর্ডারের ওপর আকর্ষণীয় অফার নিয়ে ‘থার্স ডে নাইট’ আয়োজন করে আসছে ই-ফুড।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৯ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২১
এসএইচএস/এসআই