ঢাকা: একবিংশ শতাব্দিতে এসে ইন্টারনেট ছাড়া বেঁচে থাকার কথা যেন চিন্তাই করা যায় না! স্মার্টফোন/ট্যাব/ল্যাপটপকে সঙ্গী করে ইন্টারনেট যেন আমাদের প্রতিদিনের, প্রতি মুহূর্তের সঙ্গী। এই প্রযুক্তি যেমন বিপুল সুযোগ-সুবিধার আধার, তেমনি অনেক সময় বয়ে নিয়ে আসে ভয়াল থাবার হাতছানিও!
এখনকার যুগে ইন্টারনেটের বদৌলতে, ভালো জিনিস যেমন হাতের নাগালে, তেমনি নেতিবাচক জিনিসগুলোও কিন্তু অনেকখানি সহজলভ্য! অনেক সময় পারিবারিক শিক্ষার বিপরীতে, সন্তানেরা এমন অসম্মানজনক কাজ করে যে, অভিভাবকগণ অবাক হয়ে যান! কিন্তু ভুলে গেলে হবে না যে, আমাদের সন্তানরা প্রতিমুহূর্তে পরিবার বাদেও এমন হাজারো লোকের সংস্পর্শে আসে, যাদের সবার উদ্দেশ্য যেমন মহৎ নয় তেমনি নয় স্বভাবও!
সন্তান যেমন ইন্টারনেটে হঠাৎ করে একটি ভুল সাইটে প্রবেশের মাধ্যমে ধ্বংসের জগতে প্রবেশ করতে পারে, তেমনি তার বন্ধুরাও হতে পারে তার জন্য অপরাধের হাতছানি।
না বুঝে বা খেলাচ্ছলে শুরু করলেও, টিনএজাররা ধীরে ধীরে এই সাইটগুলোতে আসক্ত হতে পড়ে এবং এগুলো পরিণত হয় তাদের অভ্যাসে। বন্ধুরা একসঙ্গে হলে আর মাঠে খেলা হয় না, আলোচনা হয় অনলাইন ভিডিও গেম বা সোশ্যাল মিডিয়ার স্ট্যাটাস নিয়ে!
ইন্টারনেটের মাধ্যমে সন্তানদের বিভিন্ন ক্ষতিকর জিনিসের সংস্পর্শে আসার দায়িত্ব, অন্তত একটি বয়স পর্জন্ত কিছুটা হলেও অভিভাবকদের উপর বর্তায়। যুগের কারণে তাই পরিবারকে হতে হবে আগের চেয়ে একটু বেশি সতর্ক-
১. সন্তানের সঙ্গে বন্ধুর মতো আচরণ করুন, যাতে তাদের সমস্যা তারা অভিভাবককে খুলে বলতে পারে।
২. নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত সন্তানের ইন্টারনেট ব্যবহারের গতিবিধির ওপর নজর রাখুন। তারা কি সার্চ করছে, কি দেখছে, মাঝে মাঝে যাচাই করুন।
৩. প্যারেন্টাল গাইড মোড অন করে রাখুন।
৪. সন্তানের সঙ্গে ইন্টারনেটের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে কথা বলুন এবং সতর্ক করুন।
৫. কিছু সফটওয়্যারের মাধ্যমে, পূর্ণবয়স্ক ও নেতিবাচক সাইট নিয়ন্ত্রণ করুন।
৬. ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় নির্দিষ্ট রাখুন।
৭. সন্তানের অনলাইন বন্ধুদের ব্যাপারে জানার চেষ্টা করুন এবং সন্তানের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলুন।
৮. সন্তানকে ব্যক্তিগত জীবন ব্যক্তিগত রাখতে উৎসাহিত করুন।
৯. সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে ইন্টারনেটে শিক্ষামূলক ও ইন্টারেস্টিং জিনিস দেখুন।
১০. মনে রাখবেন, সন্তানের জন্য দেখের শেখার চেয়ে বড় কোনো শিক্ষা নেই, তাই নিজেকে রোল মডেল হিসাবে তৈরি করে সন্তানকে উৎসাহিত করুন।
১১. পারিবারিক শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করুন, যাতে সন্তান পরিবারে নিরাপত্তা অনুভব করে।
১২. সন্তান ভুল করলে তাকে সাহায্য করুন এবং প্রয়োজনে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন।
আমাদের সমাজকে আমাদের অবশ্যই ইন্টারনেটের মাধ্যমে নেতিবাচক জিনিসের প্রভাব মুক্ত করতে হবে। তাদেরকে বাস্তব জগতের আকর্ষণীয় জিনিসগুলোর সাথে পরিচয় করিয়ে, সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। সুস্থ ইন্টারনেট ব্যবহার শিশু-কিশোরদের অধিকার।
প্রযুক্তিগত নির্ভরতা কমাতে প্রযুক্তিই বড় সমাধান হতে পারে। যেমন, Audra HomeShield এর কথা বলি। একদম সহজ ভাষায় Audra হচ্ছে একটা স্মার্ট ইন্টারনেট কন্ট্রোলার ওয়াইফাই রাউটার। Audra একদমই সিম্পল একটা জিনিস।
কিভাবে এই ডিভাইসটি কাজ করে এবং এতে কি কি ফিচার রয়েছে, চলুন দেখে নেওয়া যাক...
খুব সহজেই ক্ষতিকর সব কন্টেন্ট ব্লক করুন
Audra HomeShield এর ক্যাটাগরি ব্লকিং ফিচারটি যে ধরনের কন্টেন্ট আপনার কাছে মনে হচ্ছে বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর, শুধু সেটার ক্যাটাগরিটা ব্লক করে দিলেই হবে। মনে করেন আপনি চান না আপনার বাচ্চা গ্যাম্বলিংয়ের কোনো সাইটে যাক, বা গ্যাম্বলিং রিলেটেড কোনো ক্ষতিকর লিংক, এটাচমেন্ট বা এড আসুক। সিম্পলি ‘ব্লকড ক্যাটাগরিস’ সেকশনটা অন করে ‘গ্যাম্বলিং’ ক্যাটাগরিটা সিলেক্ট করুন। যত ধরণের গ্যাম্বলিং সাইট আছে, সবগুলোতে এক্সেস বন্ধ হয়ে যাবে। এভাবে হ্যাকিং, এডওয়্যার বা ম্যালওয়্যারও সিম্পল একটা ক্লিকেই প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ইন্টারনেট ব্যবহারের টাইম লিমিট সেট করে দিন
ইন্টারনেট ব্যবহারের টাইম লিমিট সেট করতে বললেই আমরা বুঝি একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর ওয়াইফাই অফ করে দেওয়া। নাহলে বাচ্চার হাত থেকে ফোন সরিয়ে নেওয়া। কিন্তু Audra এর মাধ্যমে চাইলেই কিন্তু আপনি একদম একটা ফ্লেক্সিবল টাইম লিমিট সেট করে দিতে পারেন। ধরুন আপনি চাচ্ছেন বাচ্চা দিনে ৪ ঘণ্টার বেশি ইন্টারনেট ব্যবহার করবে না। আবার ব্যবহারের সময় সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। টাইম লিমিট ৪ ঘণ্টা সেট করে দিলে আপনার বাচ্চা এই ১২ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে কেবল ৪ ঘণ্টাই ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবে। এতে করে বাচ্চার সুন্দর একটা ফ্লেক্সিবল সময়সূচীর অভ্যাস গড়ে উঠবে। সে নিজের মত করেই ঠিক করে নেবে কোনো সময় কতক্ষণ ইন্টারনেট ব্যবহার করবে।
কোথায় পাবেন
সিঙ্গাপুরিয়ান ব্র্যান্ড Audra তাদের Audra HomeShield ডিভাইসটি বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে বেশ কিছুদিন হল। Audra HomeShield সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://audra.io/homeshield/bd-gng/ এই লিংকে। ওয়েবসাইটে গেলেই ডিভাইসটি কিভাবে ব্যবহার করতে হয়, এটা নিয়ে অন্যান্য প্যারেন্টসরা কি ভাবছেন, সবই জানতে পারবেন।
Powered By-
বাংলাদেশ সময়: ২০১৬ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০২১
কেএআর