ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

ব্রেইন কম্পিউটার ইন্টারফেস গবেষণা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২১
ব্রেইন কম্পিউটার ইন্টারফেস গবেষণা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ প্রতীকী ছবি

ঢাকা: ব্রেইন কম্পিউটার ইন্টারফেস বা বিসিআই গবেষণা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন একদল বিশেষজ্ঞ। তারা বলছেন, মানুষের মস্তিষ্ক যদি কম্পিউটার পড়া শুরু করে তাহলে মানুষের মধ্যে ‘ব্লিক প্যানারোমা’ তথা বিরক্তিকর মানসিক অবস্থার সৃষ্টি হবে।

ফলে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত এমন গবেষণা মানবজাতির জন্য ভয়ংকর রকমের ক্ষতির কারণ হতে পারে।

সম্প্রতি এপিল বায়োইঞ্জিনিয়ারিং জার্নাল এ প্রকাশিত একদল বিশেষজ্ঞের গবেষণা পত্রের বরাতে এমনটাই জানায় রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম আরটি।

ওই গবেষণার একজন সদস্য এবং গবেষণা পত্রের লেখক রবার্টো পোর্টেলিও বলেন, বিসিআই গবেষণা থেকে বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান মানব মস্তিষ্কের যে তথ্য পাচ্ছেন বিষয়টি নির্দিষ্ট হারে উদ্বেগজনক। এই গবেষণা থেকে মানুষের স্নায়ুবিক তথ্য আহরণ করা হচ্ছে যা মানুষের একান্তই ব্যক্তিগত এবং অন্তরঙ্গ।

প্রসঙ্গত, মানব মস্তিষ্ক থেকে সরাসরি তথ্য আহরণ করার পরিকল্পনা থেকে দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্রেইন কম্পিউটার ইন্টারফেস নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। খোদ মার্কিন সরকারের অনুমোদনে দেশটির সশস্ত্র বিভাগের পাশাপাশি এই গবেষণায় বিনিয়োগ করছে ফেসবুক, মাইক্রোসফটের মতো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। ব্যক্তিগত উদ্যোক্তা হিসেবে আছেন এলন মাস্কের মতো প্রযুক্তি বিনিয়োগকারী।

ফেসবুক ‘স্পিড নিউরোপ্রোসথিসিস’ নামক একটি প্রকল্পে বিনিয়োগ করে আসছে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে, মানুষ মস্তিষ্কে যা চিন্তা করবে তা সরাসরি হরফ আকারে একটি কম্পিউটার পর্দায় ভেসে উঠবে। প্রকল্পটির লক্ষ্য মস্তিষ্কে চিন্তা করা বিষয় প্রতি মিনিটে ১০০ শব্দ হারে কম্পিউটার পর্দায় তুলে ধরা।

২০২০ সালে এলন মাস্কের বিসিআই স্টার্টাপ নিউরালিংক একটি শুকর ছানার মস্তিষ্কে ‘চিপ’ প্রবেশ করানোর ঘোষণা দেয়। তাদের লক্ষ্য একসময় মানুষ যদি মাথা দিয়ে চিন্তা করেই তার সামনে টেসলা গাড়ির হাজির করাতে পারবে। অর্থাৎ স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালকহীন চলাচলে সক্ষম একটি টেসলা গাড়ি তার মালিক শুধু চিন্তা করেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

তবে এমন গবেষণা সফলের ফলে পৃথিবী ‘কৃত্রিম’ এবং ‘প্রাকৃতিক’ এই অংশে ভাগ হয়ে যাবে বলে মনে করেন রবার্টো পোর্টেলিও এর সঙ্গে গবেষণাপত্রে কাজ করা আরেক বিশেষজ্ঞ গবেষক রিলি গ্রিন।  

তিনি বলেন, নীতিনির্ধারক এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে ‘ব্লিক প্যানারোমা’ থেকে মানব জাতিকে নিস্তার দিতে হলে বিসিআইয়ের বাণিজ্যিক গবেষণা ও প্রয়োগ বন্ধ করতে হবে। এ নিয়ে দ্বিধার কোনো সুযোগ নেই। ইন্টারনেট এবং স্মার্টফোনের মতো গবেষণালব্ধ ফলাফলের নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে তাদের শিক্ষা নিতে হবে। এই উদাহরণগুলো দেখিয়েছে যে, বিসিআই গবেষণাকে বৈধ করতে এবং এর বৈধ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হলে কঠোর আইনি কাঠামো দরকার।     

একইসঙ্গে এমন গবেষণার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি এবং গবেষণার ফলাফল জনসমক্ষে প্রকাশের দাবিও জানান তারা।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২১
এসএইচএস/এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।