ঢাকা: বাংলাদেশের ব্যবহারকারীদের জন্য করোনাভাইরাসের টিকাকেন্দ্রের তথ্য সেবা নিয়ে এসেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মিলিত হয়ে দেশে ‘ভ্যাকসিন ফাইন্ডার’ সেবা চালু করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
নতুন এই ফিচারের মাধ্যমে বাংলাদেশের ফেসবুক ব্যবহারকারীরা জানতে পারবেন কারা টিকা নিতে পারবেন এবং তার নিকটবর্তী কোন টিকাকেন্দ্র রয়েছে।
এছাড়াও স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি, মানুষকে করোনা সম্পর্কিত তথ্য পেতে সাহায্য করা এবং দেশে টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়তা করার জন্য ফেসবুকের সামগ্রিক প্রকল্পের একটি অংশ এই ‘ভ্যাকসিন ফাইন্ডার’ টুল।
ফেসবুকের কোভিড-১৯ তথ্যকেন্দ্রে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলাতেও ভ্যাকসিন ফাইন্ডার টুলটি পাওয়া যাবে। এ বিষয়ে ফেসবুকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পৃথিবীজুড়ে টিকাদান কার্যক্রমে সহায়তা এবং নিরাপদ স্বাস্থ্যবিধি পালনে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নানান পদক্ষেপ নিয়েছে প্ল্যাটফর্মটি। কোভিড-১৯ তথ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে ফেসবুক বিশ্বজুড়ে ২০০ কোটিরও বেশি মানুষকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের দেওয়া তথ্যের সঙ্গে যুক্ত করেছে। পাশাপাশি কোভিড-১৯ ও অনুমোদিত টিকা সম্পর্কিত ১ কোটি ৮০ লাখেরও বেশি ভুল তথ্য সরিয়ে নিয়েছে।
মহামারি চলাকালীন স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে এবং মানুষকে সবশেষ তথ্যের সঙ্গে সংযুক্ত করতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কাজ করছে ফেসবুক। এ পর্যন্ত ১ কোটিরও বেশি বাংলাদেশি ফেসবুকের ব্লাড ডোনেশনস টুল ব্যবহার করে সাইনআপ করেছেন যেন তারা দেশে রক্তের সঙ্কট কমিয়ে আনার প্রচেষ্টায় ভূমিকা রাখতে পারেন।
বাংলাদেশি ব্যবহারকারীরা যেন টিকা নিতে আগ্রহী হন এবং এর জন্য নিবন্ধন করেন সে বিষয়েও কাজ করছে ফেসবুক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি জানায়, বাংলাদেশ সরকারের http://www.surokkha.gov.bd ওয়েবসাইটে টিকার জন্য নিবন্ধনে আগ্রহী করতে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের নিউজ ফিড নোটিফিকেশন পাঠায়। মাস্ক পরার মতো প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথাও নিয়মিত মনে করিয়ে দেয়। সহজেই http://www.corona.gov.bd ওয়েবসাইট থেকে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশনা জানতেও প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহারকারীদের সাহায্য করে। এই বছরের শুরুতে কোভিড সম্পর্কিত ভুল তথ্য শনাক্ত ও প্রতিহত করে বাংলাদেশিদের সচেতন করার লক্ষ্যে ফেসবুক একটি জনশিক্ষা কার্যক্রম চালু করেছে (http://www.fightcovidmisinfo.com)।
টেকনোলজি বিষয়ক অলাভজনক সংগঠন মিদান-এর ডিজিটাল হেলথ ল্যাবের সঙ্গে এই সপ্তাহে পার্টনারশিপ শুরু করেছে ফেসবুক জার্নালিজম প্রোজেক্ট। অনলাইনে ছড়ানো ভুল তথ্য প্রতিরোধে তারা ফেসবুকের সাথে জড়িত স্বতন্ত্র থার্ড পার্টি ফ্যাক্ট-চেকারদের সাহায্য করবে। চিকিৎসক, বিজ্ঞানী ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত মিদান-এর দলটি ভার্চ্যুয়াল ট্রেনিং সেশনের আয়োজন করবে। স্বাস্থ্য বিষয়ক ফ্যাক্ট চেকের জন্য ফ্যাক্ট-চেকিং পার্টনাররা হেলথ ডেস্ক-এর সহায়তা নিতে পারেন। এই উদ্যোগ কোম্পানিটির স্বাস্থ্যবিষয়ক ভুল তথ্য শনাক্ত করার চলমান প্রক্রিয়ার একটি নতুন সংযোজন।
ফেসবুকে টিকাকেন্দ্র খোঁজার এই ফিচার নিয়ে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বাংলানিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা আছে যে, আমরা দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে চাই। বাংলাদেশে বর্তমানে ৪ কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারী আছেন। ফেসবুক ব্যবহারকারীরা ভ্যাকসিন ফাইন্ডার টুল ব্যবহার করে জানতে পারবেন তাদের নিকটবর্তী ভ্যাকসিন প্রদানকারী সেন্টার কোনটি এবং তারা যদি রেজিস্ট্রেশন করতে চান তবে একটি ক্লিকে সুরক্ষা ওয়েবসাইটে যেয়ে খুব সহজেই রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ফেসবুকের এটি একটি দারুণ উদ্যোগ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০২১
এসএইচএস/এমজেএফ