ঢাকা: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের আওতায় iDEA প্রকল্পের একটি অন্যতম উদ্যোগ হলো বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ-আয়োজন ‘আইডিয়াথন (ideaTHON)’ কনটেস্ট।
মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ উদ্যোগ এ কনটেস্টের বিজয়ী সেরা পাঁচ বাংলাদেশি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় ছয় মাসের প্রশিক্ষণের আওতায় কোরিয়া প্রোডাক্টিভিটি সেন্টার (কেপিসি) কর্তৃক আয়োজন করা হয় ‘বাংলাদেশ ফ্রন্টিয়ার স্টার্টআপস বিজনেস প্রিপ্যারেশন সাপোর্ট’ শীর্ষক ভার্চ্যুয়াল 'ডেমো ডে সিরেমনি'।
অনলাইনে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে বাংলাদেশের পাঁচটি স্টার্টআপ বিচারকদের সামনে নিজেদের প্রেজেন্টেশন তুলে ধরেন। এদের মধ্যে এএনটিটি রোবোটিক্স লিমিটেডকে প্রথম স্থান অধিকারী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে ১৯৭৩ সাল থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয় বরং এটি একটি অনুপ্রেরণামূলক বাস্তবতা। ‘লকডাউনের’ কারণে বিভিন্ন দেশ অর্থনৈতিক মন্দার সম্মুখীন হলেও বাংলাদেশের মানুষ জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রযুক্তির সুযোগ কাজে লাগাতে পেরেছে। ফলস্বরূপ শুধু আমাদের অর্থনীতি নয়, আমরা একটি একক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে করোনা পরিস্থিতিতে গণটিকাদানের মতো চ্যালেঞ্জকে অতিক্রম করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, একাডেমিয়াদের জন্য ইতোমধ্যে স্কুল ও কলেজে আট হাজারেরও বেশি শেখ রাসেল ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রযুক্তি ও সৃজনশীলতা মাধ্যমগুলোকে বিকেন্দ্রীভূত করার জন্য প্রায় ৩০০টি 'ফিউচার অব স্কুল' বাস্তাবয়ন করা হচ্ছে। সেখানে স্কুল এবং কলেজের শিক্ষার্থীদেরকে কোডিং, প্রোগ্রামিং, ক্রিটিকাল থিংকিং, ডিজাইন থিংকিং এবং ভবিষ্যতের প্রযুক্তির জন্য তাদের প্রস্তুত করতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা বিকাশের সুবিধা দেওয়া হবে।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে ৩৩টি পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৩টিরও বেশি বিশেষ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তিভিত্তিক ল্যাব সরবরাহ করা হয়েছে। বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার তৈরি করা হয়েছে, যাতে নন-গ্র্যাজুয়েট যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরকে লক্ষ্য করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্ট এবং থিসিস বা রিয়েল লাইফ প্রোডাক্ট সেবার গবেষণাপত্র চালু করে যাতে আমরা বাজারে নতুন ও উপযুক্ত উদ্ভাবন আনতে পারি এবং একাডেমিয়া থেকে শিল্পের মধ্যে একটি নতুন ব্যবসায়িক উদ্যোগ তৈরি করতে পারি সেই প্রচেষ্টাও চলমান রয়েছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-কিউন বলেন, বাংলাদেশি স্টার্টআপ যারা এ প্রোগ্রামে যোগদান করেছে তারা সফলভাবে প্রোগ্রামের প্রত্যাশা এবং প্রাথমিক লক্ষ্যসমূহ পূরণ করেছে। বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি ২০০৯ সাল থেকে প্রায় তিনগুণ বেড়েছে এবং দেশটি দারুণ কাজ করছে। বাংলাদেশ সফলভাবে করোনা মহামারি মোকাবিলা করছে এবং এটি সত্যিই প্রশংসনীয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ কোরিয়ার 'কোরিয়া প্রোডাক্টিভিটি সেন্টারের (কেপিসি)' চেয়ারম্যান আন ওয়াং-জি। এছাড়া এ আয়োজনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) নির্বাহী পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব পার্থ প্রতিম দেব, আইডিয়া প্রকল্পের পরিচালক ও যুগ্ম-সচিব মো. আব্দুর রাকিব প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ০০২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২১
এসএইচএস/এইচএমএস/আরবি