ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

ট্যাব কিনতে সুষম প্রতিযোগিতার সুযোগ দিচ্ছে না বিবিএস

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২১
ট্যাব কিনতে সুষম প্রতিযোগিতার সুযোগ দিচ্ছে না বিবিএস

ঢাকা: পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো চলতি বছরের ২৩ জুন ৩ লাখ ৯৫ হাজার ট্যাব ও ৭২টি শীতাতপ যন্ত্র সংগ্রহের জন্য একটি দরপত্রের আহ্বান করে। উপযুক্ত ক্রয় প্রতিযোগী না থাকায় ২৫ আগস্ট সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীপরিষদ কমিটির সর্বসম্মতিক্রমে দরপত্র বাতিল করে পুনঃদরপত্রের আহ্বানের সুপারিশ করা হয়।

তবে, দরপত্রে যে সব শর্ত আরোপ করা হয়েছে তা অবাধ ক্রয় প্রতিযোগিতাকে বাধাগ্রস্ত করে বিশেষ কোনো প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দিয়েছে। এতে দেশীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশ নেওয়ার সুযোগও থাকছে না।

পুন:দরপত্রে ক্রয় প্রতিযোগিতাকে উন্মুক্ত করে দেশীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে শর্তগুলোকে সহজ করার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস)। টেন্ডার ডাটাশিটের (টিডিএস) আইটিটি ধারা ১৫. এক্সপেরিয়েন্স ক্রাইটেরিয়া ১৫.১(বি) এ বিগত তিন বছরে শুধুমাত্র একটি একক চুক্তির মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকার শর্তারোপ করা হয়েছে। এই শর্ত অনুসারে বেশিরভাগ দেশীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নিতে পারবেন না। তবে শর্ত বদলে যদি পূর্ব অভিজ্ঞতায় তিন বছরে শুধুমাত্র সরকারি/আধা-সরকারি (বেসরকারি ব্যতীত) প্রতিষ্ঠানে একাধিক কার্যাদেশ/ চুক্তির মাধ্যমে কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকার সমজাতীয় পণ্য (যেমন- রিলেটেড গুডস, মোবাইল, ট্যাব, ল্যাপটপ এবং আইটি এক্সেসরিস) সরবরাহের বিষয়টি প্রতিস্থাপন করা হয়, তাহলে দেশীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলিও এই দরপত্রে অংশ নিতে পারবে।

টেন্ডার ডাটা শিটের (টিডিএস) আইটিটি ২৩ ধারার মাধ্যমে  ৩ লাখ ৯৫ হাজার ট্যাব ও ৭২টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র শুধুমাত্র একটি লটের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এই দরপত্রে অংশ নিতে পারবে না। বিসিএস এক্ষেত্রে একটি একক লটের অন্তর্ভুক্ত না করে কমপক্ষে চারটি লটে বিভক্ত করে সুষম প্রতিযোগিতামূলক ক্ষেত্র তৈরির পরামর্শ দিয়েছে।

টেকনিক্যাল স্পেসেফিকেশন অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স অব গুডস অ্যান্ড রিলেটেড সার্ভিসেসে (ফর্ম ই-পিজি৩-৪) ট্যাবের কার্যক্ষমতা প্রকাশ করতে ২ জিবি অথবা তদুর্ধ্ব র‌্যাম এবং ৩২ জিবি অথবা তদুর্ধ্ব রম সম্পন্ন ট্যাব ব্যবহার করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বিসিএস এর পরামর্শ অনুসারে যেহেতু জনশুমারী ও গৃহগণনা ২০২১ প্রকল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল সেহেতু ট্যাবের কার্যকারিতা ও কার্যক্ষমতা নিশ্চিত করতে ন্যুনতম ৪ জিবি বা তদুর্ধ্ব র‌্যাম এবং ৬৪ জিবি বা তদুর্ধ্ব র‌ম ব্যবহার করা উচিৎ। বর্তমান সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ২/৩২ জিবি এর চেয় ৪/৬৪ দ্বিগুণ ক্ষমতাসম্পন্ন।

এছাড়া  প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের নাম নির্দিষ্ট করে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে যা পিপিএ ২০০৬ এর ১৫(১) এবং পিপিআর ২০০৮ বিধিমালা ২৯(৩) এর পরিপন্থী।   এই ধারাগুলো অনুসারে কোনো পণ্যের ট্রেডমার্ক, পেটেন্ট, নকশা বা ধরণ, নির্দিষ্ট উৎস বা দেশের নাম উল্লেখ করা যাবে না বলে নির্দেশিত হয়েছে। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ না করে স্বনামধন্য যে কোনো প্রতিষ্ঠানের ডিভাইস ব্যবহার করার সুযোগ থাকা উচিৎ।

বিসিএস সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর বলেন, ৩৫ বছর ধরে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি প্রযুক্তি ব্যবসায়ীদের স্বার্থ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। বিসিএস সর্বদা স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিতামূলক প্রক্রিয়ার পক্ষে কথা বলে। প্রযুক্তি পণ্যের ক্ষেত্রে সবসময় হালনাগাদ ডিভাইস ব্যবহার করা উচিৎ। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বা বিপণন প্রতিষ্ঠানকে এককভাবে সুবিধা দেয়া হলে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সর্বোচ্চ প্রযুক্তির সুষম ব্যবহার এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজার সৃষ্টিতে সরকার বরাবর আন্তরিক। আমরা চাই, দরপত্রেও সুষ্ঠু এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা হোক।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২১
এমআইএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।