ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

বাংলায় এসএমএস জুনের মধ্যে শতভাগ নিশ্চিত করার নির্দেশ 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২২
বাংলায় এসএমএস জুনের মধ্যে শতভাগ নিশ্চিত করার নির্দেশ 

ঢাকা: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে গ্রাহকদের কাছে মোবাইল অপারটের থেকে সব এসএমএস/নোটিফিকেশন বাংলায় পাঠানো সংক্রান্ত সেবার উদ্বোধন করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।  

রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) প্রধান সম্মেলন কক্ষে সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত এ সেবার উদ্বোধন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ইতোমধ্যে সব অপারেটরদের বাংলায় এসএমএস পাঠানো সংক্রান্ত কারিগরী কার্যক্রম ৯১ শতাংশ শেষ হয়েছে। অবশিষ্ট নয় শর্তাংশ কাজ জুন মাসের মধ্যে শেষ করতে সব অপারেটরদের প্রতি আহ্বান জানান মন্ত্রী।  

বাংলায় এসএমএস সেবা চালুর উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বিটিআরসি ও অপারেটরদের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি মোস্তাফা জব্বার বলেন, গ্রাহকদের কাছে তার নিজের ভাষায় তথ্য দেওয়া না করলে তার প্রভাব ফলপ্রসূ হয় না।  

এ সময় আরও জানানো হয়, গ্রাহকদের দৈনিক ১৫১ কোটি ৮৫ লাখ এসএমএস পাঠায় অপারেটরগুলো।

অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমান বলেন, বর্তমান সরকার প্রযুক্তিতে বাংলার ব্যবহার নিয়ে সবসময় সচেষ্ট ছিল। জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা বাংলা করতে সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে সচিব খলিলুর বলেন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ অত্র মন্ত্রণালয়ের ইংরেজিতে ছাপানো অধিকাংশ আইন বাংলায় রূপান্তরের উদ্যোগ নিয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, ১৮ ধরনের মোবাইল এসএমএস/নোটিফিকেশন বাংলায় পাঠানো।  

বাংলায় এসএমএস/নোটিফিকেশন সেবাটি চালু করায় অপারেটরদের ধন্যবাদ জানিয়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর বলেন, বিটিআরসি অপারেটরদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেই সবসময় কাজ করছে।

সভার শুরুতে বিটিআরসির ভাইস-চেয়ারম্যান সুব্রত্র রায় মৈত্র বলেন, ইতোমধ্যে সব মোবাইল হ্যান্ডসেটে বাংলা টাইপিং ব্যবস্থা এবং গ্রাহকদের জন্য অর্ধেক খরচে বাংলায় এসএমএস সেবা চালু করা হয়েছে।

ইংরেজিতে কোনো বার্তা পাঠালে অনেক গ্রাহকই বুঝতে পারে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলায় এসএমএস চালুর ফলে সব বাংলা ভাষাভাষী মানুষ উপকৃত হবে।

কমিশনের মহাপরিচালক (সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ বাংলায় এসএমএস সেবা চালু সংক্রান্ত কার্যক্রমের আদ্যপান্ত বিশদভাবে উপস্থাপন করেন।  

তিনি বলেন, গ্রাহকের কাছে বাংলা এসএমএস পাঠানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলালিংক। প্রতিষ্ঠানটির পাঁচ শতাংশ কাজ এখনো বাকি আছে। এরপরের অবস্থানে রয়েছে গ্রামীণফোন। অপারেটরটি বাংলাকরণের ৯০ শতাংশ কাজ শেষ করেছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অপারেটর টেলিটক ৮৫  শতাংশ এবং রবি ৭৮ শতাংশ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে।  

বর্তমানে দৈনিক ১৫১ কোটি ৮৫ লাখ এসএমএস গ্রাহককে দেওয়া হয় জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে ৯১ ভাগ এসএমএস বা খুদে বার্তা বাংলাকরণ সম্ভব হবে।

বাংলায় এসএমএস সেবা চালুর উদ্যোগকে যুগান্তকারী মাইলফলক উল্লেখ করে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান বলেন, বাংলায় এসএমএস বা খুদে বার্তা পাঠানোর কাজটি চ্যালেঞ্জিং সত্ত্বেও গ্রামীণফোন দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এ সেবা চালু করেছে।

টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, অমর একুশের মাসে বাংলায় এসএমএস সেবা চালুর করতে পেরে টেলিটক গর্ববোধ করছে। টেলিটকের অসম্পন্ন কাজ জুনের মধ্যে শেষ হবে বলেও জানান তিনি।

রবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ রশীদ বলেন, ভাষার মর্যাদা রক্ষা করা আমাদের সবার দায়িত্ব। বিটিআরসির উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, রবির অবশিষ্ট কাজ দ্রুত শেষ করার লক্ষ্যে কার্যক্রম এগিয়ে চলছে।

বাংলালিংকের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রশীদ বলেন, প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিটিআরসির নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলালিংক কাজ করে চলেছে। তীব্র প্রতিযোগিতামূলক টেলিযোগাযোগ খাতে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলালিংক বাংলায় এসএমএস সেবাটি চালু করেছে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যেদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশনস বিভাগের কমিশনার প্রকৈাশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ, লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের কমিশনার আবু সৈয়দ দিলজার হুসেইন, মহাপরিচালক (স্পেকক্ট্রাম) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জুয়েল, মহাপরিচালক (অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব) প্রকৌশলী মো. মেসবাহুজ্জামানসহ বিটিআরসি ও মোবাইল অপারেটরদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২২
এমআইএইচ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।