ঢাকা: গ্রাহক স্বার্থ বিবেচনা করে মোবাইলের ‘আনলিমিটেড’ (মেয়াদ-বিহীন) ডাটা প্যাকেজ ও নিরবচ্ছিন্ন মাসিক ইন্টারনেট প্যাকেজের উদ্বোধন করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর রমনায় বিটিআরসি কার্যালয়ে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তিনি।
আনলিমিটেড বলা হলেও এ প্যাকেজের মেয়াদ এক বছর।
প্রাথমিকভাবে আনলিমিটেড ডাটা প্যাকেজের মধ্যে গ্রামীণফোনে ১ হাজার ৯৯ টাকায় ১৫ জিবি ও ৪৪৯ টাকায় ৫ জিবি প্যাকেজ কেনা যাবে। এছাড়া গ্রামীণফোনের নিরবচ্ছিন্ন ৩০ দিনের (দৈনিক সর্বোচ্চ ১ জিবি পর্যন্ত) প্যাকেজ ৩৯৯ টাকা ও ৩০ দিনের (দৈনিক সর্বোচ্চ ২ জিবি পর্যন্ত) ৬৪৯ টাকা।
রবিতে ৩১৯ টাকায় ১০ জিবি, বাংলালিংকে ৩০৬ টাকায় ৫ জিবি, টেলিটকে ৩০৯ টাকায় ২৬ জিবি ও ১২৭ টাকায় ৬ জিবি পাওয়া যাবে।
আনলিমিটেড (মেয়াদ-বিহীন) ডাটা প্যাকেজের মেয়াদ হবে এক বছর। এটি শুধুমাত্র ডাটা সার্ভিস দেওয়ার জন্য একটি বিশেষ প্যাকেজ হবে, যাতে অন্য কোনো প্রকার অফার (ভয়েস, এসএমএস, সোশ্যাল প্যাক ইত্যাদি) দেওয়া যাবে না। এটি নিয়মিত প্যাকেজ, গ্রাহক কেন্দ্রিক বিশেষ প্যাকেজ ও রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট প্যাকেজ মিলিয়ে সর্বমোট ৯৫টি প্যাকেজের আওতামুক্ত থাকবে।
প্যাকেজগুলো মেয়াদবিহীন ডাটা/সীমাবিহীন ভলিউমের হওয়ায় অব্যবহৃত ডাটা থাকার সুযোগ নেই বিধায় এসব প্যাকেজে ডাটা ক্যারিফরওয়ার্ড প্রযোজ্য হবে না। এর আগে গত ১৫ মার্চ মোবাইল ফোন অপারেটরসমূহের ডাটা ও ডাটা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্যাকেজ সর্ম্পকিত নতুন নির্দেশিকা চালু করেছিল বিটিআরসি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডাটা প্যাকেজ সম্পর্কে বিশদ উপস্থাপনা করেন বিটিআরসির সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, আনলিমিটেড ডাটা প্যাকেজ দেশের টেলিযোগাযোগ ইকোসিস্টেমে সূদরপ্রসারী প্রভাব বয়ে আনবে। এটি সরকারের ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়ায় সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ বাড়াবে।
আগামীতে ব্যান্ডউইথের চাহিদা অনেক বাড়বে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, গ্রাহক যাতে ডাটার ব্যবহার করে সরকারের ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে পারে সে লক্ষ্যে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র বলেন, গ্রাহক স্বার্থের কথা বিবেচনায় নিয়ে বিটিআরসি আনলিমিটেড ডাটা প্যাকেজ চালুর উদ্যোগ নিয়েছে।
আনলিমিটেড ডাটা প্যাকের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বিটিআরসিকে ধন্যবাদ জানিয়ে অ্যামটবের মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফরহাদ (অব.) বলেন, টেলিকম অপারেটররা সব সময় গ্রাহকবান্ধব ও সর্বোত্তম সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে।
টেলিকম খাতে যেকোনো সেবা চালু করতে অপারেটরদের প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে গ্রাহক চাহিদার ভিন্নতা বেশি থাকায় প্যাকেজ চালু করতে সময়ের প্রয়োজন হয়।
আনলিমিটেড ডাটা প্যাকেজের ওপর গ্রাহকের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে জানিয়ে টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, গ্রাহককে আরও বেশি ডাটা ব্যবহারে উদ্ধৃত্ত করতে আমরা এ প্যাকেজ চালু করেছি এবং এর মাধ্যমে গ্রাহক ডাটার যথাযথ ব্যবহার করতে পারবে।
গ্রামীণফোনের চিফ মার্কেটিং অফিসার সাজ্জাদ হাসিব বলেন, বাংলাদেশের বাজারে আনলিমিটেড অফারের প্যাকেজের মাধ্যমে গ্রাহকরা উপকৃত হবে।
রবির চিফ কমার্শিয়াল অফিসার শিহাব আহমেদ বলেন, নেটওয়ার্ক বিস্তারের প্রতিযোগিতা ও সাশ্রয়ী মূল্যে গ্রাহক সেবা দিতে সব অপারেটরগুলো চেষ্টা করছে। বর্তমানে বেশিরভাগ গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যবহার করছে, আমরা বিনোদনের বাইরেও মানুষের দৈনন্দিন অন্যান্য কাজেও যাতে ডাটার ব্যবহার হয় সে লক্ষ্যে কাজ করছে।
বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, আমাদের এখন প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে হচ্ছে, তারপরও গ্রাহকদের স্বার্থে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, বিটিআরসি কখনও অপারেটরদের পক্ষে ছিল না, ভবিষ্যতেও থাকবে না। বিটিআরসি সব সময় গ্রাহকের পক্ষে কাজ করে। মানসম্মত সেবা নিশ্চিতে বিটিআরসি সর্বদা তৎপর রয়েছে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে কমিশনার (ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশনস) প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ, কমিশনার (লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং) আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন, মহাপরিচালক (স্পেকক্ট্রাম) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জুয়েল, মহাপরিচালক (লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং) আশীষ কুমার কুণ্ডু, মহাপরিচালক (অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব) প্রকৌশলী মো. মেসবাহুজ্জামানসহ বিটিআরসি ও মোবাইল অপারেটরদের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২২, আপডেট: ১৬১৫ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এসআইএস/আরবি