ঢাকা: আগামী তরুণ প্রজন্মকে প্রযুক্তির অপব্যবহার থেকে রক্ষার আহ্বান জানিয়েছে গ্রাহক অধিকার নিয়ে সোচ্চার সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।
বিশ্ব যুব দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, টেলিযোগাযোগ, ইন্টারনেট সেবা এবং প্রযুক্তির সহজলভ্যতা ও মান উন্নয়ন বাড়াতে আমরা যখন সোচ্চার হচ্ছি ঠিক তখন দুঃখের সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করছি ইন্টারনেট ও প্রযুক্তির অপব্যবহার হচ্ছে সবচাইতে বেশি।
বিভিন্ন জরিপ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আমরা জানতে পেরেছি, এই প্রযুক্তির ব্যবহারকারীদের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ ইন্টারনেটের অপব্যবহার করছে। আমরাও বিভিন্ন স্কুল এবং কলেজ পরিদর্শনের মাধ্যমে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি বর্তমান শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় মনোযোগ নেই। শিক্ষার মান দিন দিন কমে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক যারা এইচএসসি প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়ে প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষা দিয়েছে তাদের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ উত্তীর্ণ হতে পারেনি। এমন ফলাফলের জন্য শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোনে আসক্ত হওয়ার সবচাইতে বড় কারণ বলে জানিয়েছে শিক্ষকরা। করোনা মহামারির মধ্যে দুই বছর শিক্ষার্থীদের আমরা ঘরে বসে অনলাইনে ক্লাস এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে বাধ্য করেছি। অভিভাবকরা তার সন্তানকে হ্যান্ডসেট, ল্যাপটপ বা ট্যাব কিনে দিতে বাধ্য হয়েছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি এই কোমলমতি তরুণ প্রজন্ম পর্নোগ্রাফি, টিক টক, নাইকি, ফ্রি ফায়ার পাবজি গেম, এমনকি অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েছে। টিকটকে তরুণ প্রজন্মের মৃত্যুর সংবাদ আমরা সবাই জানি। সেসঙ্গে ফ্রি ফায়ার পাবজি গেম কে কেন্দ্র করে কিশোর গ্যাং গড়ে ওঠা এবং অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে বাবা মার সঙ্গে অসৎ অসজন্যমূলক আচরণ, এমনকি মাদকাসক্ত হয়ে পড়ার প্রবণতাও আমরা লক্ষ্য করেছি। যদিও অনেক তরুণ প্রজন্মই প্রযুক্তির সুফল ভোগ করে আজ অর্থ রোজগারের পাশাপাশি বিশ্বে ও সুনাম কুড়িয়েছেন। কিন্তু অপব্যবহারকারীর সংখ্যাটা এতটাই বেশি যে সুফল ভোগকারীদের সংবাদগুলোও ধামাচাপা পড়ে গেছে। দ্রুত আগামী দিনের ভবিষ্যৎ এবং তরুণ প্রজন্মকে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারে ফিরিয়ে আনতে না পারলে বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে।
'আমরা সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাবো সরকারের আইসিটি মন্ত্রণালয় প্রতিনিয়ত উদ্যোক্তা তৈরির বিশাল কর্মসূচি পালন করে। কিন্তু প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে তাদের কোনো কার্যক্রম নেই। এমনকি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বা টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও বা অপারেটরদের পক্ষ থেকেও কোনো অগ্রণী ভূমিকা নেই। আমাদের সংগঠনের সাধ্য এবং সামর্থ্যের ঘাটতি থাকায় আমরা নিজেরাও ব্যাপকভাবে ভূমিকা পালন করতে পারছি না এ কথা সত্যি। এ পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য সরকারকেই দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা প্রযুক্তি উপদেষ্টা মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। কীভাবে আমরা প্রযুক্তির অপব্যবহার হতে রক্ষা পেতে পারি আপনি সেই দিক নির্দেশনা দেবেন। '
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২২
এমআইএইচ/আরআইএস