ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

বই কিনতে ঋণ পাচ্ছেন মিশরীয়রা!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২৩
বই কিনতে ঋণ পাচ্ছেন মিশরীয়রা!

মিশরে মূল্যস্ফীতি এতই বেশি যে, সেখানকার লোকজন গাড়ি ও ওয়াশিং মেশিনের মতো দামি পণ্যের মূল্য পরিশোধ করছে কিস্তিতে। এখন দেশটির লোকজন একইভাবে বই কিনতে পারছে।

 

সেফসাফা পাবলিশিং হাউজের মোহামেদ এল-বালি বিবিবিকে বলেন, মিশরে বই এখন বিলাসপণ্য হয়ে গেছে। এটি খাদ্যের মতো মৌলিক কোনো পণ্য না। লোকজন বিলাসপণ্যে সঞ্চয় করছে।  

কায়রো আন্তর্জাতিক বইমেলা নিয়ে তিনি কথা বলছিলেন। এই মেলা গেল বছর প্রায় ২০ লাখ মানুষকে আকৃষ্ট করেছিল। এটি জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।  

বইয়ের দাম দ্বিগুণের চেয়ে বেড়ে যাওয়ায় মিশরীয় লেখকরা বলছেন, লেখা প্রকাশে খরচ কমাতে তারা অক্ষর ও বর্ণণা ছেঁটে ফেলছেন।  

মোহামেদ এল-বালি বলেন, কাগজ ও কালির দাম অবিশ্বাস্যভাবে বেড়েছে। এক টন কাগজের দাম বছরের শুরুর তুলনায় চার গুণ বেড়েছে।  

তিনি জানান, এখন তিনি বিদেশে বই ছাপিয়েছেন। চাহিদা কমে যাওয়ার কথা ভেবে তিনি মাত্র কয়েকটি কপি ছেপেছেন।  

চলতি বছরের মেলায় ক্রেতার সংখ্যা কমে যাওয়ার শঙ্কা ছিল। কায়রো বইমেলা আরব বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো ও সবচেয়ে বড় বইমেলা এবং মুদ্রণশিল্পের অন্যতম প্রধান আয়োজন। ক্রেতার সংখ্যা কমার শঙ্কা কিস্তিতে বই কেনার ধারণার দিকে ধাবিত করেছে।  

মিশরীয় পাবলিশার্স অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, দেড় শতাংশ সুদে ক্রেতারা সর্বোচ্চ ৯ মাসে একটি বইয়ের দাম পরিশোধ করতে পারেন।   

কিশোর কথাসাহিত্যের লেখিকা দিনা আফিফি আশা করছেন, এই স্কিম বইয়ের বিক্রি বাড়াবে। তিনি বলেন, ফারাওদের নিয়ে তার সর্বশেষ বইয়ের রূপ বদলানো হয়েছিল উৎপাদন খরচ কমাতে।  

তিনি বলেন, আমার বই ছোট ও পাতলা করা হয়েছে। ১০০ পৃষ্ঠা থেকে ৬০ পৃষ্ঠা করা হয়েছে ছাপার উচ্চমূল্যের জন্য।

বেশ কয়েকজন মিশরীয় ঔপন্যাসিক বলেছেন, তারা লেখনিতে পরিবর্তন এনেছেন ছোট বই ছাপার জন্য। বর্ণণা ও অক্ষর কমিয়ে কাহিনি একেবারে সহজ করেছেন।  

তাদের অভিযোগ, অনেক মিশরীয় পাঠক এখন নিম্নমানের নকল বইয়ের দিকে ঝুঁকছেন। ফুটপাতের বিভিইন্ন স্টলে এসব বই ৫০-১০০ মিশরীয় পাউন্ডে বিক্রি হচ্ছে।  

গত কয়েক মাসে মূল্যস্ফিতির কারণে মিশরীয়দের ব্যয়ক্ষমতা কমেছে। কয়েকটি বছর তাদের মিতব্যয়িতা এবং অর্থনৈতিক ধাক্কার পুনরাবৃত্তি সহ্য করতে হয়েছে।  

মিশর বৈদেশিক আমদানির ওপর নির্ভরশীল। দেশটি মুদ্রা সংকটে ভুগছে। ক্রমাগত অবমূল্যায়নের ফলে এক বছর আগের তুলনায় দেশটিতে মুদ্রার দাম অর্ধেকে দাঁড়িয়েছে।  

দেশটির সরকার বলছে, পণ্যের দাম কমাতে সব কিছুই করা হচ্ছে। এ ছাড়া সরকার ইউক্রেন যুদ্ধের সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।  

মিশরীয় একজন কবি বলেন, এই বছরটি অবাক করার মতো নয়। সাধারণ লোকজন বই কেনার চেয়ে খাবার কেনা নিয়ে বেশি চিন্তিত।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২৩
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।