অধিকৃত পশ্চিম তীরে ‘অভিযানে’ নেমে নয়জনকে হত্যার পর এবার গাজা উপত্যকায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের অভিযোগ, ফিলিস্তিনিরা রকেট ছোড়ার পর সৈন্যরা ‘অভিযান’ চালিয়েছে।
কিন্তু অভিযানের নামে ইসরায়েলি বাহিনী শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) ভোরে গাজায় বিমান হামলা চালায়। দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে এ অঞ্চলে হামলার ঘটনাটি ছিল সবচেয়ে মারাত্মক। আগামী সপ্তাহে ফিলিস্তিনের এ অঞ্চলে সফর করার কথা রয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের। ধারণা করা হচ্ছে, ইসরায়েলের এ অভিযান তার সফরের ওপর প্রভাব ফেলবে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি, ফিলিস্তিনিরা তাদের দক্ষিণাঞ্চলে পাঁচটি রকেট নিক্ষেপ করেছে। এর মধ্যে তিনটিকে আটকে ফেলা হয়। একটি তাদের অভ্যন্তরে খোলা জায়গায় পড়ে। অপরটি পড়ে গাজার ভেতরেই। যারা এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে, জঙ্গি আখ্যা দিয়ে তাদের লক্ষ্যবস্তুতে একের পর এক বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার ভোরে ফিলিস্তিনিদের বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় মিডিয়া বলছে, হামাসের ঘাঁটিতে দুটি ড্রোন ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইসরায়েল। এর আগে ফাইটার জেট দিয়ে হামলা চালানো হয়, এ সময় উপত্যকায় চারটি বড় বিস্ফোরণ ঘটে।
তার আগে গাজা সীমান্তের কাছে ইসরায়েলিদের সতর্ক করতে রকেট হামলার সাইরেন বাজানো হয়। বাসিন্দাদের অন্যত্র আশ্রয় নিতে বলা হয় সে সময়।
এ ঘটনায় হামাস থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এমনকি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি। ইসরায়েলি রাজনৈতিকরাও বিষয়টি নিয়ে কথা বলেননি।
শুক্রবার ভোরে হামলার আগে অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শহরের শরণার্থী শিবিরে বড় আকারের অভিযান চালায় ইসরায়েলি সৈন্যরা। বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) সকালে অভিযানে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে তাদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। অভিযানে গুলি চালিয়ে নারীসহ ৮ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে দখলদার বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় আহত হয় ডজনেরও বেশি শরণার্থী।
চলতি জানুয়ারিতে অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত পাঁচ শিশুসহ ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ২০২২ সালে এ ধরনের অভিযানে ১৭০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন বেসামরিক।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২৩
এমজে