যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদন প্রকাশের পর ২২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার খুইয়েছেন ভারতীয় ব্যবসায়ী ও বিলিয়নিয়ার গৌতম আদানি। ধারাবাহিকভাবে সম্পত্তি হারিয়ে শীর্ষ ধনীর তালিকায় তার অবস্থান এখন নড়বড়ে।
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর ধস নামে আদানি গ্রুপের শেয়ারে। এ অবস্থায় নিজের বিপুল সম্পত্তি হারান গৌতম।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর ২৭ জানুয়ারি মধ্যে ভারতের আদানি এন্টারপ্রাইজের প্রায় ২০ শতাংশ শেয়ারের পতন ঘটে। প্রতিবেদনটি কোম্পানিটির তালিকাভুক্ত সংস্থাগুলোর মধ্যেও বড় ধরনের বিশৃঙ্খলার জন্ম দিয়েছে।
কর স্বর্গ (ট্যাক্স হ্যাভেন) ব্যবহারের পাশাপাশি শেয়ারের দাম বাড়াতে নিয়মের বাইরে গিয়ে কাজ করেছে আদানির কোম্পানি। বাজারে শেয়ারের দামের মূল্যায়ন বেশি করে দেখিয়েছে তারা। কোম্পানির প্রমোটর বা মালিকের কারসাজিতেই স্টকের দাম বেশি দেখানো হয়েছে বাজারে। অন্য লোকের ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচুর শেয়ার কিনে সেগুলোর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির মালিকের লোকজন। এ জালিয়াতিতে রয়েছে গৌতমের পাঁচ কোম্পানি।
এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট দুই ব্যক্তি গণমাধ্যমে বলেছেন, শেয়ারের দাম পড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন আদানি গ্রুপ। তবে, আগামী মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) পর্যন্ত তারা শেয়ার বিক্রির অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেবে।
এসব কারণে ফোর্বসের তালিকায় বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ধনী থেকে সাতে নেমে গেছেন গৌতম আদানি। বর্তমানে তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। তিনদিনের ব্যবধানে ২২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার খুইয়েছেন তিনি। এসব তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম মিন্ট।
এদিকে, ফাঁকি ও প্রতারণার অভিযোগ অস্বীকার করেছে আদানি গ্রুপ। হাইডেনবার্গ রিসার্চের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে ভাবা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে কোম্পানির পক্ষ থেকে।
কোথায় কত কমলো আদানির সম্পত্তি-
শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রের শেয়ারবাজার সূচক বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ (বিএসই) বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, গত তিনদিনে আদানি টোটাল গ্যাসের শেয়ারের দাম কমেছে ১৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এ ছাড়া আদানি ট্রান্সমিশনের শেয়ারে ১৯; আদানি গ্রিন এনার্জির শেয়ারে ১৫ দশমিক ৫ ও ফ্ল্যাগশিপ কোম্পানি আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ারের দাম ৬ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে।
দরপতন হয়েছে গ্রুপটির লিজ নেওয়া বন্দর ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর (ইপিজেড) শেয়ারের ৫ দশমিক ৩১ শতাংশ। তাদের খাদ্য ও ভোজ্যতেল প্রস্তুতকারী কোম্পানি আদানি উইলমারের শেয়ারের ৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
আদানি পাওয়ারের শেয়ারের দামে হ্রাস অবশ্য সবচেয়ে কম। ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ দরপতন হয়েছে এ কোম্পানির।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০২৩
এমজে