ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্কের গাজিয়ানতেপ শহরের তাপমাত্রা বৃহস্পতিবার (স্থানীয় সময়) সকালের দিকে মাইনাস পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে গেছে। এমন আবহাওয়ার মধ্যেও হাজার হাজার পরিবার গাড়ি ও অস্থায়ী তাঁবুতে রাত কাটিয়েছে।
গাজিয়ানতেপের বাসিন্দা মেলেক হালিসি। দুই বছরের মেয়েকে কম্বলে জড়িয়ে তিনি রাস্তায় হাঁটছিলেন। ভারি গলায় তিনি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘গভীর রাতেও উদ্ধারকারীদের কাজ করতে দেখা গেছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেকে আটকা আছেন। তাদের জন্য আমাদের ভয় হচ্ছে। এ অবস্থায় আমরা বসে থাকতে পারি না। কারণ এটি বেদনাদায়ক। ’
অসহনীয় এই ঠান্ডার মধ্যেও তাদের তাঁবুতে থাকতে হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ঠান্ডা সহ্য করতে পারি না। কিন্তু আমি আমাদের অ্যাপার্টমেন্টে ফিরে যাওয়ার কথাও ভাবতে পারি না। ’
হ্যালিসিসের সঙ্গে আরও অনেক পরিবারকে তাঁবুতে থাকতে হচ্ছে। শীত মোকাবিলায় সুপারমার্কেট ও অন্যান্য ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলো আগুন জ্বালাতে তাদের কাঠ দিয়েছে। অনেকে প্রতিবেশী বা আত্মীয়দের কাছে আশ্রয় নিয়েছে। কেউ কেউ আবার এলাকা ছেড়ে চলে গেছে।
কিন্তু বেশিরভাগেরই যাওয়ার মতো কোনো গন্তব্য নেই।
ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্রয়ের জন্য জিম, মসজিদ, স্কুল ও কিছু দোকান রাতেও খোলা রাখা হচ্ছে। এছাড়া হাজার হাজার মানুষ উষ্ণতার জন্য ইঞ্জিন চালিয়ে গাড়িতে রাত কাটাচ্ছেন।
স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে গাড়িতে দিন কাটাচ্ছেন সুলেমান ইয়ানিক। তিনি বলেন, ‘আমার বিকল্প কোনো পথ নেই। ’
তিনি এএফপিকে বলেন, ‘বাইরের গন্ধটা ভয়ংকর। কিন্তু আমরা বাড়িতে যেতে পারছি না। ’
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র পরিবারগুলো গাজিয়ানতেপের ষষ্ট শতাব্দীর দুর্গের আশপাশে অস্থায়ীভাবে বাস করছে। তাদের অভিযোগ, ‘কর্তৃপক্ষ তাদের জন্য কিছুই করেনি’। তারা অন্যদের ফেলে দেওয়া পলিথিন ও কাঠ দিয়ে অস্থায়ী বাড়ি তৈরি করেছে।
তাদেরই একজন আহমেত হুসেইন। সোমবারের কম্পনে আহমেত হুসেইনের বাড়িটি ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি বলেছিলেন, ‘কর্তৃপক্ষ অন্তত আমাদের কিছু তাঁবু দিতে পারত। ’
৪০ বছর বয়সী পাঁচ সন্তানের বাবা যোগ করেছেন, ‘আমাদের বাচ্চারা শীতে কষ্ট করছে। পার্কের বেঞ্চ পুড়িয়ে তাপ নিচ্ছি। এমনকি আগুন পোহাতে বাচ্চাদের কিছু কাপড়ও পুড়িয়ে দিতে হয়েছে। অন্য কিছু ছিল না। ’
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩
এমএইচএস