আর্থিক সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন, মহামারি, সন্ত্রাসবাদ ও যুদ্ধ- বিষয়গুলো সারা বিশ্বের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সমালোচনা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) ভারতের দিল্লিতে অনুষ্ঠিত গ্রুপ অব টোয়েন্টি (জি ২০) সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি। বৈশ্বিক সংকটের বিষয়ে দেশগুলোর বহুপাক্ষিকতা সঙ্কটে, এ বিষয়টি স্বীকার করে নেওয়া উচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
বৈঠকে আগে রেকর্ড করে রাখা এক বিবৃতির মাধ্যমে নরেন্দ্র মোদি বলেন, গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় দেখা যাচ্ছে, আর্থিক সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন, মহামারি, সন্ত্রাসবাদ ও যুদ্ধ প্রমাণ করে বিশ্বব্যাপী শাসনপ্রক্রিয়া ব্যর্থ হয়েছে। যে সমস্যাগুলোর সমাধান আমরা একসঙ্গে করতে পারি না, সেগুলোকে আমাদের পথে আসতে দেওয়াও উচিত নয়।
এর আগে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে দিল্লি। এ ছাড়া গরিব দেশগুলো যেন উন্নয়নের সুফল পেতে পারে, জি-২০ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের এ বৈঠক যেন জনতার স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়, সেজন্য সক্রিয় হতে হবে বলেও বার্তায় দেয় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উদ্ধৃত করে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান। তা ছাড়া খাদ্য ও জ্বালানির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; বেহাল অর্থনীতিকে পুনরায় দাঁড় করানো প্রধান কাজ হওয়া উচিত বলেও সম্মেলনে অংশ নেওয়া দেশগুলোর কাছে বার্তা দেওয়া হয়।
বিনয় কোয়াত্রা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সম্পর্কেও কথা বলেন সম্মেলনে। তিনি বলেন, এ সংঘাতের প্রভাব অর্থনীতিতে কীভাবে পড়ছে, সম্মেলনে তা একইভাবে গুরুত্ব পাবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, এটি যুদ্ধের সময় না। আগামীকাল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতের অবস্থান তুলে ধরবেন। আলোচনা যে দিকেই যাক না কেন, আমাদের কাছে সবচেয়ে বড় বিষয় জ্বালানি ও সারের জোগান নিশ্চিত করা। একইসঙ্গে বেহাল অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সমন্বয় বাড়ানো।
দারিদ্র্য দূরীকরণ ও জলবায়ু পরিবর্তন- গ্লোবাল সাউথকে প্রভাবিত করে এ ধরনের ইস্যুগুলো নিয়ে নয়াদিল্লি আগ্রহী বলে বৈঠকসূত্রে জানা গেছে।
জি-২০ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক আগামীকাল শুক্রবার (৩ মার্চ) দুটি পর্বে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পর্বে থাকবে বহুপাক্ষিকতার বিভিন্ন দিক, খাদ্য ও জ্বালানির নিরাপত্তা এবং উন্নয়নে সহযোগিতার মতো বিষয়গুলো। দ্বিতীয় পর্বে সন্ত্রাসবাদ রুখতে কৌশল ও আন্তর্জাতিক দক্ষতার মানচিত্র তৈরি করা।
নয়াদিল্লিতে এবারের বৈঠকে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাংয়ের নেতৃত্বে ৪০টি দেশের প্রতিনিধি দল অংশ নিচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২৩
এমজে