সুদানের রাজধানী খার্তুমে অস্ত্রবিরতি ভেঙে পড়েছে এবং দেশটির সামরিক বাহিনীর দুই দলের মধ্যে লড়াই তীব্রতর হয়েছে।
খার্তুমে সেনাবাহিনীর সদরদপ্তরের চারদিকে লড়াই চলছে এবং নীল নদের ওপারের ওমদারমান শহরে সেনাবাহিনী বিমান হামলা চালিয়েছে।
সরকারি বাহিনী বলছে, তারা চারদিক থেকে রাজধানীর ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে এবং বিমান হামলা ও ভারী কামানের গোলাবর্ষণ করে তাদের প্রতিপক্ষ আধাসামরিক বাহিনীকে শহর থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
গত ১৫ এপ্রিল থেকে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া এ লড়াইয়ে এ পর্যন্ত ৫০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। তবে মনে করা হচ্ছে যে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি।
সবশেষ যে অস্ত্রবিরতি ঘোষিত হয়েছিল তা রোববারই শেষ হওয়ার কথা। তবে শনিবার রাত থেকেই খার্তুম শহরে তীব্র লড়াই শুরু হয়ে যায়। সেনাবাহিনী বলছে বিশেষ করে রাজধানীর উত্তর দিকে আরএসএফ যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে তারা অভিযান চালিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে রয়টার্স বলছে, একটি বড় তেল শোধনাগারের কাছে আরএসএফের অবস্থানের ওপর সেনাবাহিনী ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
শহরের লাখ লাখ বাসিন্দা তাদের বাড়িঘরে বন্দি হয়ে আছে এবং তাদের খাদ্যের মজুত কমে আসছে।
বৃহস্পতিবার রাতে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশের প্রচেষ্টায় অস্ত্রবিরতি ৭২ ঘণ্টার জন্য বাড়ানোর জন্য ঐকমত্য হয়েছিল দুই পক্ষ। কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা যায়নি। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস রক্তপাত বন্ধ করে যুদ্ধরত পক্ষগুলোকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন।
গত এক সপ্তাহ ধরে এক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে বিভিন্ন দেশ তাদের অনেক নাগরিককে সরিয়ে নিয়েছে।
শনিবার সুদানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লা হামদক সতর্ক করে দিয়েছেন যে সুদানের এই সংঘাত– সিরিয়া ও লিবিয়ার চাইতেও খারাপ আকার নিতে পারে।
পশ্চিম দারফুরে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, সেখানকার বেসামরিক লোকেরা আরব মিলিশিয়াদের আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষা করার জন্য অস্ত্র সংগ্রহ করছে।
পূর্ব শাদ থেকে বিবিসির সংবাদদাতা জানিয়েছেন, হাজার হাজার নারী, শিশু ও বয়স্ক মানুষ দারফুর অঞ্চলের সহিংসতার হাত থেকে বাঁচতে ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। তারা বলছে প্রতিদ্বন্দ্বী মিলিশিয়ারা তাদের বাড়িঘরে আক্রমণ ও লুটপাট চালাচ্ছে।
সুদানের হাজার হাজার লোক ঘরবাড়ি ফেলে দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে। উপগ্রহ চিত্রে দেখা যাচ্ছে মিশর সীমান্তের কাছে বাসের দীর্ঘ লাইন পড়ে গেছে।
পলায়নরত যে লোকেরা পোর্ট সুদান পৌঁছাতে পেরেছেন, তারা এখন লোহিত সাগরের ওপারে সৌদি আরব যাবার জন্য জাহাজে ঠাঁই পেতে বেপরোয়া হয়ে চেষ্টা করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০২৩
আরএইচ