ধূমপান কমাতে ও ভ্যাপিং (ই-সিগারেট) বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার আলবেনিজ সরকার। বিশেষ করে তরুণদের রক্ষার্থে শক্তিশালী আইন প্রয়োগ, শিক্ষা ও সহায়তার মাধ্যমে এ পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে দেশটির সরকার।
ধূমপান ও ভ্যাপের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে অস্ট্রেলিয়ানদের রক্ষা করার জন্য ৭৩৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ২০২৩-২৪ সালের বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এ ব্যবস্থাগুলো ২০২২ সালের নভেম্বরে সরকার প্রথম ঘোষণা করে। যা নতুন প্রস্তাবিত জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের উন্নয়নের পরিপূরক।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে থেরাপিউটিক গুডস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের নেতৃত্বে জনসাধারণের পরামর্শের পর, সরকার তাদের আমদানি, বিষয়বস্তু এবং প্যাকেজিংয়ের ওপর নতুন নিয়ন্ত্রণসহ সমস্ত ই-সিগারেটের শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণ ও প্রয়োগের প্রস্তাব করছে।
সরকারের নেওয়া এমন পদক্ষেপে ২০২৫ সালের মধ্যে দৈনিক ধূমপানের প্রবণতা ১০ শতাংশের নিচে চলে আসবে। ২০৩০ সালের মধ্যে তা কমে আসবে ৫ শতাংশে।
এ পরিবর্তনগুলো আগামী ৪ বছরে অতিরিক্ত ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার আয় বাড়াবে। এছাড়া রাজ্য ও অঞ্চলগুলো থেকে ২৯০ মিলিয়ন ডলার পরিষেবা কর যুক্ত হবে। যা ধূমপায়ীদের ও ভ্যাপারদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ভূমিকা পালন করবে।
জাতীয় ফুসফুসের ক্যান্সার স্ক্রিনিং প্রোগ্রামে ২৬৪ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হবে। যা ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত ৪০৮০ রোগীর মৃত্যু প্রতিরোধ করবে।
অস্ট্রেলিয়া দীর্ঘদিন ধরে ধূমপান বন্ধ করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও ২০১২ সালে এ বিষয়ে আইন প্রবর্তনকারী প্রথম দেশ হয়ে ওঠে- ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য দেশ৷
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অস্ট্রেলিয়ার কিশোর-কিশোরীরা ভ্যাপিংয়ের ভয়াবহ আসক্তিতে জড়িয়ে পড়ে।
মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল) অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মার্ক বাটলার বলেন, ভ্যাপিং উচ্চ বিদ্যালয়ে এক নম্বর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি এটি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতেও ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, এটি ধূমপানের মতোই একটি আসক্তিমূলক পণ্য। চকচকে প্যাকেটে মোড়া এ ভ্যাপ নতুন প্রজন্মকে নিকোটিনে আসক্ত করতে মিষ্টি স্বাদ যোগ করেছে। সিগারেট ছাড়তে সাহায্য করার জন্য লোকেদের এখনও একটি প্রেসক্রিপশনসহ ভ্যাপ ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়।
বাটলার বলেন, দীর্ঘমেয়াদি ধূমপায়ীদের ত্যাগে সাহায্য করার জন্য ভ্যাপিং বিশ্বব্যাপী একটি থেরাপিউটিক পণ্য হিসাবে বিক্রি করা হয়ে আসছিল। এটি বিনোদনমূলক পণ্য হিসেবে বিক্রি করা হয়নি। বিশেষ করে আমাদের বাচ্চাদের জন্য নয়।
বাটলার আরও ঘোষণা করেছেন, অস্ট্রেলিয়া আগামী তিন বছরে তামাক বিক্রির ওপর প্রতি বছর ৫ শতাংশ করে ট্যাক্স বাড়াবে।
অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বের সবচেয়ে দামি সিগারেট রয়েছে। ২৫টি সিগারেটের একটি প্যাকেট প্রায় ৫০ অস্ট্রেলিয়ান ডলারে বিক্রি হচ্ছে।
গত বছরের তথ্যানুযায়ী, ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী প্রায় ২২ শতাংশ অস্ট্রেলিয়ান ই-সিগারেট বা ভ্যাপিংয়ে আসক্ত।
এপ্রিল মাসে যুক্তরাজ্য বলেছিল ১০ লাখ ধূমপায়ীকে সিগারেট ও ভ্যাপ ছাড়তে উৎসাহিত করা হবে, যা বিশ্বে প্রথম। গর্ভবতী নারীর জন্য আর্থিক প্রণোদনা ও সাহায্যের জন্য ই-সিগারেট স্টার্টার কিট প্রদান করা হবে।
সূত্র: আলজাজিরা ও মিনিস্টার্স ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ অ্যান্ড এজড কেয়ার
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৯ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০২৩
জেএইচ