বাংলাদেশ থেকে পদ্মার ইলিশ আমদানি করলেন পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ীরা। বেশি দামের কারণে সেই ইলিশ বিক্রিই হচ্ছে না।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাইকারি বাজারের গণ্ডি পেরিয়ে এখনো খুচরা বাজারে পৌঁছায়নি আমদানি করা ইলিশের অধিকাংশ। তাই পদ্মার ইলিশে এবার বিপুল ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর চেয়ে ইলিশের বিক্রিতে পদ্মার চেয়ে কয়েক গুণ এগিয়ে আছে দিঘা।
গেল বৃহস্পতিবার সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ যায় পশ্চিমবঙ্গে। দুর্গাপূজা উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গে ৩ হাজার ৯৫০ টন ইলিশ রপ্তানির ছাড়পত্র দেয় বাংলাদেশ সরকার।
শুক্রবার সকালেই হাওড়ার পাইকারি বাজারে প্রবেশ করে অন্তত ৫০ মেট্রিক টন পদ্মার ইলিশ। রাজ্যের অন্য পাইকারি বাজারগুলোতেও মিলছে পদ্মার ইলিশ।
পাঁচ দিন পর দেখা গেল, ব্যবসায়ীরা রীতিমতো মাছি তাড়াচ্ছেন। ইলিশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন ক্রেতাদের বড় অংশ। কারণ অবশ্যই দাম।
ইলিশের দাম অন্যবারের তুলনায় এবার অনেকটাই বেশি। পাইকারি বাজারেই গত বছরের তুলনায় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বেশি দরে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। ফলে সেই মাছ খুচরা ব্যবসায়ীদের হাত ঘুরে যখন সাধারণ বাজারে আসছে, সেখানেই বাড়তি দর হাঁকাতে বাধ্য হচ্ছেন বিক্রেতারা।
রোববার ছুটির দিনে হাওড়াসহ জেলার একাধিক পাইকারি আড়তে ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রামের পদ্মার ইলিশের কেজি ছিল ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা। এক কেজি বা তার বেশি ওজনের মাছের দাম ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা। অনেকেই পদ্মার এই দামি ইলিশ কিনতে চাইছেন না।
মঙ্গলবার সকালে কৃষ্ণনগর পাত্র বাজারে দেখা গেল ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের পদ্মার ইলিশের দাম কেজি প্রতি ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা।
বহরমপুরের স্বর্ণময়ী বাজারে এক কেজি কিংবা তার বেশি ওজনের বাংলাদেশের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা কেজিতে। ইলিশে হাতই দিতে পারছে না মধ্যবিত্ত খাদ্যরসিক বাঙালি।
পরিবর্তে দিঘার ইলিশ সস্তা। পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে নদিয়ার মাছ ব্যবসায়ী সঞ্জয় হালদার বলেন, কলকাতার বাজারে দিঘা, ডায়মন্ড হারবার, মিয়ানমার, মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের ইলিশের ব্যাপক আমদানি। খুচরা বাজারেই এক কেজি বা তার বেশি ওজনের এই সব ইলিশের কেজি হাজার টাকার মধ্যে।
তিনি বলেন, স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ ক্রেতারা অতিরিক্ত টাকা খরচ করে পদ্মার ইলিশ কিনতে চাইছেন না। তা ছাড়া, আবহাওয়া অনুকূল না থাকায় বাংলাদেশ থেকে আসা ইলিশের স্বাদ নিয়েও অনেকে উষ্মা প্রকাশ করছেন।
পদ্মার ইলিশের চাহিদা কমে যাওয়ায় কোথাও কোথাও কেনা দামের চেয়েও সস্তায় ইলিশ বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
এ নিয়ে মৎস্য আমদানি সংগঠনের সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ বলেন, প্রথম দিকে মাছের দাম কিছুটা চড়া থাকবে, এটিই স্বাভাবিক। ধীরে ধীরে দাম কমবে। তবে খুব কমবে, এমন আশ্বাস আমরা দিতে পারছি না।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩
আরএইচ