ঢাকা, রবিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

হামাসের দাবি মানবে না ইসরায়েল: নেতানিয়াহু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩০ ঘণ্টা, মে ৫, ২০২৪
হামাসের দাবি মানবে না ইসরায়েল: নেতানিয়াহু

ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েযুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাব মানবে না। এ দাবি ওঠার পর সংগঠনটির প্রস্তাবও মেনে নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

তিনি বলেছেন, গাজায় যুদ্ধ বন্ধে ইসরায়েলের কাছে হামাসের দাবি মেনে নেওয়া হবে না।

হামাসের হাতে জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলের গাজা আক্রমণে বিরতি দিতে মিশরের কায়রোয় আলোচনা চলছে। ঠিক এই সময় নেতানিয়াহু এমন কথা বললেন। রোববার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একদিকে হামাস জোর দিয়ে বলেছে- যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হবে কিনা সেটিই হলো মূল স্টিকিং পয়েন্ট। অন্যদিকে নেতানিয়াহু বলছেন, প্রস্তাবিত চুক্তি অনুযায়ী গাজার নিয়ন্ত্রণ হামাসের কাছে থাকবে, এটি ইসরায়েলের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

গতকাল শনিবার কায়রোতে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীরা হামাসের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময়ে তারা হামাসের কাছ থেকে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া শোনেন। প্রস্তাবে ৪০ দিনের যুদ্ধবিরতি এবং ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তির বিনিময়ে জিম্মিদের ছেড়ে দেয়ার কথা বলা হয়।

হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াহর একজন উপদেষ্টা বলেছেন, তাদের সংগঠন ‘সম্পূর্ণ গুরুত্ব সহকারে’ সর্বশেষ প্রস্তাবটি দেখছে। যেকোনো চুক্তিতে স্পষ্টভাবে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার ও যুদ্ধের সম্পূর্ণ সমাপ্তি অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে।

রোববার নেতানিয়াহু এক বক্তব্যে বলেন, আমরা এমন পরিস্থিতি মেনে নিতে প্রস্তুত নই যেখানে হামাস ব্যাটালিয়নগুলো নিজেদের বাঙ্কার থেকে বেরিয়ে আসে ও আবার গাজার নিয়ন্ত্রণ নেয়; তাদের সামরিক অবকাঠামো পুনর্নির্মাণ করে ও আশপাশের ইসরায়েলের নাগরিকদের হুমকি হয়ে ওঠে। ইসরায়েল হামাসের দাবিতে রাজি হবে না।

দেশটির এক সরকারি কর্মকর্তাও নিজেদের গণমাধ্যমে বলেছেন, ইসরায়েল কোনো অবস্থায় আমাদের অপহৃতদের মুক্ত করার চুক্তির অংশ হিসেবে যুদ্ধ শেষ করতে রাজি হবে না। আইডিএফ রাফাহতে প্রবেশ করবে এবং সেখানে অবশিষ্ট হামাস ব্যাটালিয়নগুলোকে ধ্বংস করবে। আমাদের বন্দীদের মুক্ত করার আগে সেনারা একটি সাময়িক বিরতীতে রয়েছে।

এর আগে হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাব মানবে না বলে দাবি করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হামাসের এক সিনিয়র কর্মকর্তা। তার ভাষ্যে, এটি সম্পূর্ণভাবে গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটাবে না। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ইসরায়েলি নেতা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ব্যক্তিগতভাবে চুক্তিকে বাধাগ্রস্ত করছেন। হামাস কোনো অবস্থাতেই এই প্রস্তাবে রাজি হবে না। কারণ, প্রস্তাবে গাজা যুদ্ধের সম্পূর্ণ অবসান এবং সেখান থেকে ইসরায়েলি সৈন্য প্রত্যাহারের বিষয় অন্তর্ভুক্ত নেই।

উল্লেখ্য, এর আগেও গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠায় আলোচনা চলে। কিন্তু সেটি এক পর্যায়ে থমকে যায়। কারণ, হামাসের দাবি একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি। কিন্তু নেতানিয়াহু বারবার গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় অভিযান চালানোর বিষয়ে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে আসছেন। রাফাহ বর্তমানে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয়স্থল।

গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায়। ওইদিনই ইসরায়েল গাজায় প্রতিশোধমূলক পাল্টা হামলা শুরু করে। অব্যাহত হামলায় এপর্যন্ত ৩৪ হাজার ৬৫৪ জন বেসামরিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদের অধিকাংশ নারী ও শিশু।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, মে ৫, ২০২৪
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।