ঢাকা: এতোদিন গাড়ি কেবল বাহনের কাজ করে এলেও এবার এটি কাজ করবে ঘর-বাড়ি আলোকিত করার যন্ত্র হিসেবে। আর এ রকমের বিস্ময়ের গাড়ি নির্মাণ শেষে সম্প্রতি উন্মুক্ত করেছে জাপানের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হোন্ডা।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, গাড়িটিতে বাহ্যিকভাবে একটি ‘পাওয়ার ফিডার’ সংযুক্ত করা যাবে। এর ফলে জরুরি প্রয়োজনে বাড়িকে আলোকিত করবে ওই পাওয়ার ফিডার। অর্থাৎ দেশ অন্ধকারে কিংবা ‘ব্ল্যাক আউটে’ চলে গেলেও এই গাড়িই আলোতে ভরিয়ে দেবে ঘর-বাড়ি।
এফসিভি (ফুয়েল সেল ভেহিক্যাল) কনসেপ্টের হাইড্রোজেন চালিত গাড়িটি ২০১৬ সালের মার্চের শেষ নাগাদ জাপানের বাজারে ছাড়া হবে। পরবর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাজারে ছাড়া হবে।
পরিবেশবান্ধব গাড়িটিতে ফুয়েল হিসেবে ব্যবহার করা হবে হাইড্রোজেন। এর ফলে গাড়িটি থেকে পানি ছাড়া কোনো আবর্জনা নিঃসরণ হবে না বলে দাবি হোন্ডার।
যদিও এখন পর্যন্ত হাইড্রোজেন ফুয়েল স্টেশন গড়ে ওঠেনি, তবে হোন্ডার গাড়ির ৭০ এমপি হাইড্রোজেন প্রেসার ট্যাঙ্ক মাত্র তিন মিনিটে সম্পূর্ণ ফুয়েলিং সম্ভব বলে জানিয়েছে হোন্ডা। আর একবার ফুয়েলে চলবে সাতশ’ কিলোমিটার।
ঘণ্টায় তিনশ’ মাইল (৪৮২ কি.মি.) বেগে চলতে সক্ষম এ গাড়িতে এক সঙ্গে পাঁচজন বসতে সক্ষম।
কার্বন ডাই অক্সাইড মুক্ত বিশ্ব গড়তেই নতুন এ উদ্যোগ বলে জানিয়েছে হোন্ডা।
হোন্ডা ছাড়াও টয়োটা, বিএমডব্লিউ, অডি ও হুন্দাইয়ের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো এফসিভি কনসেপ্টের গাড়ি তৈরিতে কাজ করছে। এমনকি ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে জাপানের বাজারে হাইড্রোজেন চালিত এফসিভি সিডান ‘দ্য মিরিই’ ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে টয়োটা।
আর ২০১৭ নাগাদ এফসিভি কনসেপ্টের হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল গাড়ি ছাড়বে অডি ও বিএমডব্লিউ।
প্রস্তুতকারকরা বলছেন, আগামী দিনগুলোতে গাড়ির জ্বালানির মূল কেন্দ্রবিন্দু হবে হাইড্রোজেন। তবে হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপাদন ব্যয়বহুল বলেও উল্লেখ করেন তারা।
হোন্ডার এ এফসিভি কনসেপ্ট গাড়ির মূল্য কত হবে সে বিষয়ে কোনো তথ্য জানা যায়নি।
গাড়ি নির্মাণ ও বাজার দখলে এতোদিন জেনারেল মোটর্সসহ যুক্তরাষ্ট্রের নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে ‘কম জ্বালানি খরচায় বহুদূর’ মন্ত্র জপে লড়েছিল জাপানের টয়োটা ও হোন্ডার মতো প্রতিষ্ঠানগুলো। সে লড়াই যে এখন ‘বাড়িতে আলো ছড়ানো’র মন্ত্রমুখী হলো তা বলাই বাহুল্য।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৪